ঢাকা ০৩:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo সুবিদাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ Logo মহান বিজয় দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ঢাকা প্রেসক্লাবের শ্রদ্ধা নিবেদন Logo কটিয়াদীতে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে শহীদ স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধাঞ্জলি Logo বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে জনসাধারণের জন্য ৭ টি জাহাজ উন্মুক্ত করেছে কোস্ট গার্ড Logo বরুড়ায় বিজয় দিবস উপলক্ষে মহিলা দলের আলোচনা সভা ও র‍্যালি অনুষ্ঠিত Logo সুবিধাবঞ্চিত ও ঝরে পড়া শিশুদের নিয়ে সিড ফাউন্ডেশনের বিজয় দিবস উদযাপন Logo ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্ট এন্ড হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বিজয় দিবস পালিত Logo রাঙ্গামাটিতে মহান বিজয় দিবস উদযাপন Logo মুরাদনগরে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপন Logo বরুড়ায় মহান বিজয় দিবস পালিত

নয়াদিল্লিতে জয়শঙ্কর-ওয়াং ই বৈঠক: সম্পর্ক উন্নতির পথে ভারত-চীন

  • আন্তর্জাতিক:
  • আপডেট সময় ০৮:৪৮:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫
  • ৭২ বার পড়া হয়েছে

চীনের কমিউনিস্ট পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই স্থানীয় সময় গত ১৮ই আগস্ট সোমবার নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সাথে বৈঠক করেছেন।

ওয়াং ই বলেন, বর্তমান বিশ্বে শতবর্ষব্যাপী পরিবর্তন ত্বরান্বিত হচ্ছে, একতরফা দাদাগিরি ও শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে, মুক্ত বাণিজ্য ও আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা গুরুতর চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার ৮০তম বার্ষিকীতে, মানবজাতি তার ভবিষ্যৎ গতিপথ নির্ধারণের একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। ২৮০ কোটিরও বেশি জনসংখ্যা নিয়ে চীন ও ভারত বিশ্বের দুটি বৃহত্তম উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বৈশ্বিক দায়িত্ব পালন করে সমস্ত উন্নয়নশীল দেশের জন্য একটি উদাহরণ স্থাপন করতে পারে এবং বিশ্বের বহুমেরুকরণ ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের গণতন্ত্রীকরণে অবদান রাখতে পারে।

ওয়াং ই উল্লেখ করেন, প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাজানে সফল সাক্ষাৎ চীন-ভারত সম্পর্কের নতুন সূচনা করেছে। উভয়পক্ষ নেতৃবৃন্দের মধ্যে অর্জিত ঐকমত্য বাস্তবায়ন করছে, বিভিন্ন স্তরের সংলাপ পুনরায় শুরু হয়েছে, সীমান্ত অঞ্চলে শান্তি বজায় রয়েছে, ভারতীয় তীর্থযাত্রীরা পুনরায় তিব্বতের পবিত্র পর্বত ও হ্রদে যাত্রা করতে পারছেন, চীন-ভারত সম্পর্ক সহযোগিতার মূলস্রোতে ফিরে আসার ইতিবাচক প্রবণতা দেখাচ্ছে।
ওয়াং ই আরো বলেন, এ বছর চীন-ভারত কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৭৫তম বার্ষিকী। উভয়পক্ষকে এই ৭৫ বছরের অভিজ্ঞতা ও শিক্ষা গভীরভাবে আত্মস্থ করতে হবে, সঠিক কৌশলগত উপলব্ধি গড়ে তুলতে হবে, একে অপরকে অংশীদার ও সুযোগ হিসেবে দেখতে হবে—প্রতিপক্ষ বা হুমকি হিসেবে নয়। আমাদের মূল্যবান সম্পদ উভয় দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে নিয়োজিত করতে হবে, যাতে প্রতিবেশী দুই বৃহৎ শক্তি পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও আস্থা, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, যৌথ উন্নয়ন এবং সহযোগিতার মাধ্যমে উভয়ের জয়লাভের পথ খুঁজে পায়।

ওয়াং ই জোর দিয়ে বলেন, চীন আন্তরিকতা, সদিচ্ছা, পারস্পরিক সুবিধা ও অন্তর্ভুক্তিমূলকতার নীতিতে বিশ্বাসী এবং ভারতসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে শান্তি, নিরাপত্তা, সমৃদ্ধি, সৌন্দর্য ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ‘পাঁচটি বড় বাড়ি’ গড়ে তুলতে চায়। চীন ও ভারত উভয়পক্ষকে আত্মবিশ্বাস দৃঢ় করতে হবে, একে অপরের দিকে অগ্রসর হতে হবে, সকল বাধা অতিক্রম করে সহযোগিতা সম্প্রসারিত করতে হবে, চীন-ভারত সম্পর্কের উন্নয়নের গতিশীলতা সুদৃঢ় করতে হবে। এভাবে দুই মহান প্রাচ্য সভ্যতার পুনরুত্থান প্রক্রিয়া পরস্পরকে সহায়তা ও পরিপূর্ণ করবে, যা এশিয়া তথা সমগ্র বিশ্বের জন্য সর্বাধিক প্রয়োজনীয় স্থিতিশীলতা ও নিশ্চয়তা প্রদান করবে।

এস জয়শঙ্কর বলেন, দুই নেতার নির্দেশনায় ভারত-চীন সম্পর্ক উন্নতির পথে এগোচ্ছে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা স্বাভাবিক হচ্ছে। তিনি তিব্বতে ভারতীয় তীর্থযাত্রীদের সুবিধা প্রদানের জন্য চীনকে ধন্যবাদ জানান। ভারত ও চীনের পরস্পরের কৌশলগত উপলব্ধি উন্নত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, দুটি বৃহত্তম উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে ভারত ও চীন বহুপাক্ষিকতাবাদে বিশ্বাসী এবং বিশ্বের বহুমেরুকরণ ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় কাজ করছে। তাইওয়ান চীনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ভারতীয় পক্ষ দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৭৫তম বার্ষিকীকে একটি সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করে চীনের সাথে রাজনৈতিক আস্থা গভীরতর করতে, অর্থনৈতিক-বাণিজ্যিকসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারস্পরিক সুবিধাপ্রদ সহযোগিতা জোরদার করতে, সাংস্কৃতিক বিনিময় বৃদ্ধি করতে এবং সীমান্ত অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় একত্রে কাজ করতে আগ্রহী। ভারতীয় পক্ষ চীন কর্তৃক সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার থিয়ানচিন শীর্ষ সম্মেলন সফলভাবে আয়োজনের পূর্ণ সমর্থন জানায় এবং ব্রিক্সসহ বিভিন্ন বহুপাক্ষিক কাঠামোয় চীনের সাথে সমন্বয় ও সহযোগিতা জোরদার করতে ইচ্ছুক।
উভয়পক্ষ অন্যান্য আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ইস্যু নিয়েও মতবিনিময় করেছে।

সূত্র: স্বর্ণা-হাশিম-লিলি,চায়না মিডিয়া গ্রুপ।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

সুবিদাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ

SBN

SBN

নয়াদিল্লিতে জয়শঙ্কর-ওয়াং ই বৈঠক: সম্পর্ক উন্নতির পথে ভারত-চীন

আপডেট সময় ০৮:৪৮:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫

চীনের কমিউনিস্ট পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই স্থানীয় সময় গত ১৮ই আগস্ট সোমবার নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সাথে বৈঠক করেছেন।

ওয়াং ই বলেন, বর্তমান বিশ্বে শতবর্ষব্যাপী পরিবর্তন ত্বরান্বিত হচ্ছে, একতরফা দাদাগিরি ও শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে, মুক্ত বাণিজ্য ও আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা গুরুতর চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার ৮০তম বার্ষিকীতে, মানবজাতি তার ভবিষ্যৎ গতিপথ নির্ধারণের একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। ২৮০ কোটিরও বেশি জনসংখ্যা নিয়ে চীন ও ভারত বিশ্বের দুটি বৃহত্তম উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বৈশ্বিক দায়িত্ব পালন করে সমস্ত উন্নয়নশীল দেশের জন্য একটি উদাহরণ স্থাপন করতে পারে এবং বিশ্বের বহুমেরুকরণ ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের গণতন্ত্রীকরণে অবদান রাখতে পারে।

ওয়াং ই উল্লেখ করেন, প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাজানে সফল সাক্ষাৎ চীন-ভারত সম্পর্কের নতুন সূচনা করেছে। উভয়পক্ষ নেতৃবৃন্দের মধ্যে অর্জিত ঐকমত্য বাস্তবায়ন করছে, বিভিন্ন স্তরের সংলাপ পুনরায় শুরু হয়েছে, সীমান্ত অঞ্চলে শান্তি বজায় রয়েছে, ভারতীয় তীর্থযাত্রীরা পুনরায় তিব্বতের পবিত্র পর্বত ও হ্রদে যাত্রা করতে পারছেন, চীন-ভারত সম্পর্ক সহযোগিতার মূলস্রোতে ফিরে আসার ইতিবাচক প্রবণতা দেখাচ্ছে।
ওয়াং ই আরো বলেন, এ বছর চীন-ভারত কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৭৫তম বার্ষিকী। উভয়পক্ষকে এই ৭৫ বছরের অভিজ্ঞতা ও শিক্ষা গভীরভাবে আত্মস্থ করতে হবে, সঠিক কৌশলগত উপলব্ধি গড়ে তুলতে হবে, একে অপরকে অংশীদার ও সুযোগ হিসেবে দেখতে হবে—প্রতিপক্ষ বা হুমকি হিসেবে নয়। আমাদের মূল্যবান সম্পদ উভয় দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে নিয়োজিত করতে হবে, যাতে প্রতিবেশী দুই বৃহৎ শক্তি পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও আস্থা, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, যৌথ উন্নয়ন এবং সহযোগিতার মাধ্যমে উভয়ের জয়লাভের পথ খুঁজে পায়।

ওয়াং ই জোর দিয়ে বলেন, চীন আন্তরিকতা, সদিচ্ছা, পারস্পরিক সুবিধা ও অন্তর্ভুক্তিমূলকতার নীতিতে বিশ্বাসী এবং ভারতসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে শান্তি, নিরাপত্তা, সমৃদ্ধি, সৌন্দর্য ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ‘পাঁচটি বড় বাড়ি’ গড়ে তুলতে চায়। চীন ও ভারত উভয়পক্ষকে আত্মবিশ্বাস দৃঢ় করতে হবে, একে অপরের দিকে অগ্রসর হতে হবে, সকল বাধা অতিক্রম করে সহযোগিতা সম্প্রসারিত করতে হবে, চীন-ভারত সম্পর্কের উন্নয়নের গতিশীলতা সুদৃঢ় করতে হবে। এভাবে দুই মহান প্রাচ্য সভ্যতার পুনরুত্থান প্রক্রিয়া পরস্পরকে সহায়তা ও পরিপূর্ণ করবে, যা এশিয়া তথা সমগ্র বিশ্বের জন্য সর্বাধিক প্রয়োজনীয় স্থিতিশীলতা ও নিশ্চয়তা প্রদান করবে।

এস জয়শঙ্কর বলেন, দুই নেতার নির্দেশনায় ভারত-চীন সম্পর্ক উন্নতির পথে এগোচ্ছে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা স্বাভাবিক হচ্ছে। তিনি তিব্বতে ভারতীয় তীর্থযাত্রীদের সুবিধা প্রদানের জন্য চীনকে ধন্যবাদ জানান। ভারত ও চীনের পরস্পরের কৌশলগত উপলব্ধি উন্নত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, দুটি বৃহত্তম উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে ভারত ও চীন বহুপাক্ষিকতাবাদে বিশ্বাসী এবং বিশ্বের বহুমেরুকরণ ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় কাজ করছে। তাইওয়ান চীনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ভারতীয় পক্ষ দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৭৫তম বার্ষিকীকে একটি সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করে চীনের সাথে রাজনৈতিক আস্থা গভীরতর করতে, অর্থনৈতিক-বাণিজ্যিকসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারস্পরিক সুবিধাপ্রদ সহযোগিতা জোরদার করতে, সাংস্কৃতিক বিনিময় বৃদ্ধি করতে এবং সীমান্ত অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় একত্রে কাজ করতে আগ্রহী। ভারতীয় পক্ষ চীন কর্তৃক সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার থিয়ানচিন শীর্ষ সম্মেলন সফলভাবে আয়োজনের পূর্ণ সমর্থন জানায় এবং ব্রিক্সসহ বিভিন্ন বহুপাক্ষিক কাঠামোয় চীনের সাথে সমন্বয় ও সহযোগিতা জোরদার করতে ইচ্ছুক।
উভয়পক্ষ অন্যান্য আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ইস্যু নিয়েও মতবিনিময় করেছে।

সূত্র: স্বর্ণা-হাশিম-লিলি,চায়না মিডিয়া গ্রুপ।