ঢাকা ০৮:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫, ৫ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo শেরপুরে স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত Logo বরুড়া উপজেলা ও পৌরসভার স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত Logo প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহনের দাবি Logo বাগেরহাটে সকল সরকারী খাল দখলমুক্ত করার দাবী‌তে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচী Logo কটিয়াদীতে রিলাক্স রেস্টুরেন্ট ও কমিউনিটি সেন্টারে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে অভিযান আটক -৬ Logo লাকসামে সরকারি জায়গায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ Logo ব্রাহ্মণপাড়ায় অবৈধ ড্রেজার মেশিন বন্ধ করার জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন Logo লালমনিরহাটে নিখোঁজের ২দিন পর নদীতে ভেসে ওঠলো অটোরিকশা চালকের লাশ Logo ব্রাহ্মণপাড়ায় পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু Logo ব্রাহ্মণপাড়ায় সরকারি খাল দখল করে ঘর নির্মাণের অভিযোগ

শাহরাস্তিতে জুলাই আন্দোলনে আহতদের গেজেটে ভুয়া নাম অন্তর্ভুক্তির অভিযোগ

মোঃ কামরুজ্জামান সেন্টুঃ

গত বছরের উত্তাল জুলাই আন্দোলনে চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে বড় ধরনের সংঘর্ষ না ঘটলেও, সম্প্রতি প্রকাশিত সরকারি গেজেটে এ উপজেলার ২৮ জনকে আহত হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় জুলাই আন্দোলনের আহতদের ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে এ, বি ও সি—তিন ক্যাটাগরিতে ভাগ করে আর্থিক সহায়তা নির্ধারণ করে। সেই তালিকায় শাহরাস্তির ২৮ জনের নাম উঠে আসে।

কিন্তু সরেজমিন অনুসন্ধান ও আন্দোলনকারীদের বক্তব্যে দেখা গেছে—তালিকায় অন্তর্ভুক্ত অনেকের নাম ও তথ্য বিতর্কিত। অভিযোগ উঠেছে, কেউ বন্ধ হাসপাতালের চিকিৎসা দেখিয়ে নাম তুলেছেন, কেউ পূর্বের মানসিক সমস্যাকে আন্দোলনে আহত দেখিয়েছেন, আবার কেউ নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মী হয়েও ‘আহত জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন।

মো. রায়হান নামে একজন (গেজেট নং ৯৩৯) দাবি করেছেন, তিনি ৪ আগস্ট যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের গুলিতে আহত হন এবং পরদিন শাহরাস্তির চিতোষী আইডিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। কিন্তু স্থানীয়দের মতে, উক্ত হাসপাতালটি সরকার পতনের দুই বছর আগেই বন্ধ হয়ে যায়। ফলে তার চিকিৎসার তথ্য নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে।

মো. ইউসুফ আলী (গেজেট নং ৯২২) দাবি করেছেন, ৫ আগস্ট কালিয়াপাড়ায় তিনি বাঁশের আঘাতে গুরুতর আহত হন এবং জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে এক লাখ টাকার চেকও পান। কিন্তু সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ওইদিন কালিয়াপাড়ায় কোনো সংঘর্ষই ঘটেনি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, গেজেটে অন্তর্ভুক্ত কয়েকজন আসলে ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় সাবেক পৌর মেয়রের বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আহত হয়েছিলেন। পরবর্তীতে তারা নিজেদের জুলাই আন্দোলনে আহত দাবি করে সরকারি সহায়তা নেন।

মো. কামরুল হাসান রাব্বি (গেজেট নং ৯২০) সিলেট সদর উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দা। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিনি ছাত্রলীগের কর্মী এবং আন্দোলনের সময় আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। অথচ শাহরাস্তির আহত তালিকায় তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

নাহিদুল ইসলাম রাতুল (গেজেট নং ১০৪৪) জুলাই আন্দোলনে মাথায় আঘাত পেয়ে মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন। কিন্তু সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, তিনি ছোটবেলা থেকেই মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। তারপরও তিনি সরকারি সহায়তা পেয়েছেন।

গেজেট নং ২০১৩-এর শাহজালাল দাবি করেছেন, ২ আগস্ট কাঁচ ভাঙার আঘাতে আহত হয়ে ৩ আগস্ট শাহরাস্তি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। কিন্তু হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ওইদিন এ ধরনের কোনো রোগী সেখানে চিকিৎসা নেননি।

এসডিএফ (সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন) থেকে শাহরাস্তিতে ১১ জনকে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে নাজমুল হাসানের পরিবারকে ‘জুলাই আন্দোলনে নিহত’ দেখিয়ে দুই লাখ টাকার চেক দেওয়া হয়। অথচ স্থানীয়দের মতে, নাজমুল গত ২৫ আগস্ট নারায়ণগঞ্জের একটি কারখানা অগ্নিকাণ্ডে মারা যান। মৃতদেহ উদ্ধার সম্ভব হয়নি। ফলে তার মৃত্যুর দাবিও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আরও জানা গেছে, সহায়তা পাওয়া সকল ব্যক্তিই ওই এনজিও-র সদস্য এবং সুবিধাভোগী। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে এসডিএফ শাহরাস্তি শাখায় যোগাযোগ করা হলে তারা জানান এটি একটি প্রকল্প। খিলাবাজার শাখায় গেলে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে। খিলাবাজার শাখায় গিয়ে সেখানে তাদের কার্যালয় তালাবদ্ধ পাওয়া যায়। সেখানে ৩ ঘন্টা অপেক্ষা করেও কোন কর্মকর্তার দেখা মিলেনি।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আব্দুল কাইয়ুম মাহিন বলেন, “আন্দোলনের সময় আমরা রাজপথে ছিলাম। অথচ গেজেটে যাদের নাম এসেছে তাদের অধিকাংশকেই আমরা চিনি না। অনেকে ভুয়া তথ্য দিয়ে সরকারি সহায়তা নিয়েছে। আমরা চাই ভুয়া নামগুলো বাতিল করে প্রকৃত আহতদের অন্তর্ভুক্ত করা হোক।”

উপজেলা নেতা আক্তার হোসেন শিহাব বলেন,
“আমি নিজে আন্দোলনে আহত হয়েছি। কিন্তু তালিকায় প্রকৃত আহতদের বাদ দিয়ে অচেনা নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। প্রশাসনের উচিত ভুয়া তথ্যদাতাদের বাদ দেওয়া।”

আরেক নেতা মাহবুব আলম বলেন,
“শাহরাস্তিতে বড় ধরনের সংঘর্ষ ঘটেনি। তবুও ২৮ জনকে আহত দেখানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত হওয়া জরুরি।”

সাবেক ছাত্রনেতা জুবায়ের আল নাহিয়ান বলেন, “আমি একজন সাবেক ছাত্রনেতা হিসেবে জুলাই আন্দোলন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলাম। সম্প্রতি জানতে পারলাম, শাহরাস্তিতে জুলাই-আহত যোদ্ধাদের একটি গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে এবং তারা সরকারি আর্থিক অনুদানও গ্রহণ করেছেন। অথচ এদের মধ্যে একটি অংশ ভুয়া তথ্য দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করেছে।

শাহরাস্তি প্রেসক্লাব সভাপতি মঈনুল ইসলাম কাজল জানান, আন্দোলনের সময় ইটপাটকেল নিক্ষেপ ছাড়া তেমন কোনো বড় সংঘর্ষ হয়নি। অথচ গেজেটে অনেক নাম এসেছে যাদের সম্পর্কে স্থানীয় সাংবাদিকদের কোনো ধারণাই নেই।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আকলিমা জাহান বলেন, ৫ আগস্ট হাসপাতালে ১৫ জন চিকিৎসা নেন, তবে তারা সবাই হালকা আঘাতপ্রাপ্ত ছিলেন।

শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজিয়া হোসেন বলেন, “আমরা ইতিমধ্যে পাঁচজনের নাম গেজেট থেকে বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছি। প্রয়োজনে আরও যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

শাহরাস্তিতে জুলাই আন্দোলনে আহতদের তালিকা ঘিরে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। স্থানীয় আন্দোলনকারীরা বলছেন, ভুয়া নাম অন্তর্ভুক্ত করে সরকারি সহায়তা নেওয়া হয়েছে, অথচ প্রকৃত আহতরা বঞ্চিত রয়েছেন। প্রশাসন জানিয়েছে, অভিযোগ পাওয়া তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

শেরপুরে স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

SBN

SBN

শাহরাস্তিতে জুলাই আন্দোলনে আহতদের গেজেটে ভুয়া নাম অন্তর্ভুক্তির অভিযোগ

আপডেট সময় ০৯:১৫:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫

মোঃ কামরুজ্জামান সেন্টুঃ

গত বছরের উত্তাল জুলাই আন্দোলনে চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে বড় ধরনের সংঘর্ষ না ঘটলেও, সম্প্রতি প্রকাশিত সরকারি গেজেটে এ উপজেলার ২৮ জনকে আহত হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় জুলাই আন্দোলনের আহতদের ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে এ, বি ও সি—তিন ক্যাটাগরিতে ভাগ করে আর্থিক সহায়তা নির্ধারণ করে। সেই তালিকায় শাহরাস্তির ২৮ জনের নাম উঠে আসে।

কিন্তু সরেজমিন অনুসন্ধান ও আন্দোলনকারীদের বক্তব্যে দেখা গেছে—তালিকায় অন্তর্ভুক্ত অনেকের নাম ও তথ্য বিতর্কিত। অভিযোগ উঠেছে, কেউ বন্ধ হাসপাতালের চিকিৎসা দেখিয়ে নাম তুলেছেন, কেউ পূর্বের মানসিক সমস্যাকে আন্দোলনে আহত দেখিয়েছেন, আবার কেউ নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মী হয়েও ‘আহত জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন।

মো. রায়হান নামে একজন (গেজেট নং ৯৩৯) দাবি করেছেন, তিনি ৪ আগস্ট যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের গুলিতে আহত হন এবং পরদিন শাহরাস্তির চিতোষী আইডিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। কিন্তু স্থানীয়দের মতে, উক্ত হাসপাতালটি সরকার পতনের দুই বছর আগেই বন্ধ হয়ে যায়। ফলে তার চিকিৎসার তথ্য নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে।

মো. ইউসুফ আলী (গেজেট নং ৯২২) দাবি করেছেন, ৫ আগস্ট কালিয়াপাড়ায় তিনি বাঁশের আঘাতে গুরুতর আহত হন এবং জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে এক লাখ টাকার চেকও পান। কিন্তু সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ওইদিন কালিয়াপাড়ায় কোনো সংঘর্ষই ঘটেনি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, গেজেটে অন্তর্ভুক্ত কয়েকজন আসলে ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় সাবেক পৌর মেয়রের বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আহত হয়েছিলেন। পরবর্তীতে তারা নিজেদের জুলাই আন্দোলনে আহত দাবি করে সরকারি সহায়তা নেন।

মো. কামরুল হাসান রাব্বি (গেজেট নং ৯২০) সিলেট সদর উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দা। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিনি ছাত্রলীগের কর্মী এবং আন্দোলনের সময় আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। অথচ শাহরাস্তির আহত তালিকায় তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

নাহিদুল ইসলাম রাতুল (গেজেট নং ১০৪৪) জুলাই আন্দোলনে মাথায় আঘাত পেয়ে মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন। কিন্তু সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, তিনি ছোটবেলা থেকেই মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। তারপরও তিনি সরকারি সহায়তা পেয়েছেন।

গেজেট নং ২০১৩-এর শাহজালাল দাবি করেছেন, ২ আগস্ট কাঁচ ভাঙার আঘাতে আহত হয়ে ৩ আগস্ট শাহরাস্তি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। কিন্তু হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ওইদিন এ ধরনের কোনো রোগী সেখানে চিকিৎসা নেননি।

এসডিএফ (সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন) থেকে শাহরাস্তিতে ১১ জনকে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে নাজমুল হাসানের পরিবারকে ‘জুলাই আন্দোলনে নিহত’ দেখিয়ে দুই লাখ টাকার চেক দেওয়া হয়। অথচ স্থানীয়দের মতে, নাজমুল গত ২৫ আগস্ট নারায়ণগঞ্জের একটি কারখানা অগ্নিকাণ্ডে মারা যান। মৃতদেহ উদ্ধার সম্ভব হয়নি। ফলে তার মৃত্যুর দাবিও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আরও জানা গেছে, সহায়তা পাওয়া সকল ব্যক্তিই ওই এনজিও-র সদস্য এবং সুবিধাভোগী। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে এসডিএফ শাহরাস্তি শাখায় যোগাযোগ করা হলে তারা জানান এটি একটি প্রকল্প। খিলাবাজার শাখায় গেলে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে। খিলাবাজার শাখায় গিয়ে সেখানে তাদের কার্যালয় তালাবদ্ধ পাওয়া যায়। সেখানে ৩ ঘন্টা অপেক্ষা করেও কোন কর্মকর্তার দেখা মিলেনি।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আব্দুল কাইয়ুম মাহিন বলেন, “আন্দোলনের সময় আমরা রাজপথে ছিলাম। অথচ গেজেটে যাদের নাম এসেছে তাদের অধিকাংশকেই আমরা চিনি না। অনেকে ভুয়া তথ্য দিয়ে সরকারি সহায়তা নিয়েছে। আমরা চাই ভুয়া নামগুলো বাতিল করে প্রকৃত আহতদের অন্তর্ভুক্ত করা হোক।”

উপজেলা নেতা আক্তার হোসেন শিহাব বলেন,
“আমি নিজে আন্দোলনে আহত হয়েছি। কিন্তু তালিকায় প্রকৃত আহতদের বাদ দিয়ে অচেনা নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। প্রশাসনের উচিত ভুয়া তথ্যদাতাদের বাদ দেওয়া।”

আরেক নেতা মাহবুব আলম বলেন,
“শাহরাস্তিতে বড় ধরনের সংঘর্ষ ঘটেনি। তবুও ২৮ জনকে আহত দেখানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত হওয়া জরুরি।”

সাবেক ছাত্রনেতা জুবায়ের আল নাহিয়ান বলেন, “আমি একজন সাবেক ছাত্রনেতা হিসেবে জুলাই আন্দোলন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলাম। সম্প্রতি জানতে পারলাম, শাহরাস্তিতে জুলাই-আহত যোদ্ধাদের একটি গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে এবং তারা সরকারি আর্থিক অনুদানও গ্রহণ করেছেন। অথচ এদের মধ্যে একটি অংশ ভুয়া তথ্য দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করেছে।

শাহরাস্তি প্রেসক্লাব সভাপতি মঈনুল ইসলাম কাজল জানান, আন্দোলনের সময় ইটপাটকেল নিক্ষেপ ছাড়া তেমন কোনো বড় সংঘর্ষ হয়নি। অথচ গেজেটে অনেক নাম এসেছে যাদের সম্পর্কে স্থানীয় সাংবাদিকদের কোনো ধারণাই নেই।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আকলিমা জাহান বলেন, ৫ আগস্ট হাসপাতালে ১৫ জন চিকিৎসা নেন, তবে তারা সবাই হালকা আঘাতপ্রাপ্ত ছিলেন।

শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজিয়া হোসেন বলেন, “আমরা ইতিমধ্যে পাঁচজনের নাম গেজেট থেকে বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছি। প্রয়োজনে আরও যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

শাহরাস্তিতে জুলাই আন্দোলনে আহতদের তালিকা ঘিরে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। স্থানীয় আন্দোলনকারীরা বলছেন, ভুয়া নাম অন্তর্ভুক্ত করে সরকারি সহায়তা নেওয়া হয়েছে, অথচ প্রকৃত আহতরা বঞ্চিত রয়েছেন। প্রশাসন জানিয়েছে, অভিযোগ পাওয়া তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।