
মোঃ ইলিয়াছ আহমদ, বরুড়া
প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহনের দাবিতে
বরুড়ায় উপজেলা কিন্ডার গার্টেন এসোসিয়েশনের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২০ আগষ্ট বিকেলে বরুড়া রাফা কিন্ডার গার্টেন মিলনায়নে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি ও বরুড়া রাফা কিন্ডারগার্টেন এর প্রতিষ্ঠাতা মোঃ আমজাদ হোসেন ভুঁইয়ার সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন বরুড়া উপজেলা কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও খোশবাস কিন্ডারগার্টেন এর প্রতিষ্ঠাতা মোঃ নুরুল ইসলাম, সহ সভাপতি ও এসএমএ হামিদ স্মৃতি শিক্ষা কানন এর প্রতিষ্ঠাতা আজাদ হোসেন, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ও বরুড়া রাফা কিন্ডারগার্টেন এর পরিচালক মোঃ আবুল কালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহফুজুল হক, নির্বাহী সদস্য আমির হোসেন, শামসুল হক সহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বরুড়া উপজেলা কিন্ডার গার্টেন এসোসিয়েশনের সভাপতির বক্তব্যে জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ১৫/০৭/২০২৫ ইং তারিখের নির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক স্মারক নং-৩৮.০১.০০০০.১০৭.৩৩.০০১.২০২৫ তারিখ ১৭/০৭/২০২৫ এ জারিকৃত পরিপত্রের মাধ্যমে জানতে পারি যে, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বৃত্তি পরীক্ষা ২০২৫ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষার যুগান্তকারী ও সময়োপযোগী অবদান রাখা কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিপুল সংখ্যাক শিক্ষার্থীকে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করার পরিপত্রটি বৈষম্যমূলক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যদি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারে তবে শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের উপর যে মানষিক চাপ ও বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় তার সকল দায় দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা এবং ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত বৃত্তি পরীক্ষায় স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান থেকে অংশগ্রহণের মাধ্যমে কিন্ডারগার্ডেন ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে।
আজকের শিশু আগামীর ভবিষ্যৎ। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের হাতেই অর্পিত হবে দেশের আগামী নেতৃত্ব। শিক্ষায় দৃশ্যমান সাফল্য বাংলাদেশের একটি বিশাল অর্জন।
এ অর্জন স্বীকৃত সারাবিশ্বে। আমরা বাংলাদেশের কিন্ডারগার্টেন স্কুলের ৬ লক্ষ শিক্ষক গর্বিত এ জন্য যে, এ অর্জনের আংশীদার আমরাও। আপনি নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে, বাংলাদেশের প্রাথমিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশাপাশি নিজস্ব অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলো শিক্ষাক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী ও সময়োপযোগী অবদান রেখে আসছে এবং বেকারসমস্যা দূরীকরণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। দেশে প্রায় ৪০ হাজার কিন্ডাগার্টেন ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ৭০ লক্ষ শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত।
বৃত্তি শুধুমাত্র একটি আর্থিক অনুদান নয় এটি একটি শিশুর আত্মবিশ্বাস, সামাজিক স্বীকৃতি এবং শিক্ষাগত অগ্রগতির অনুপ্রেরণা। যখন একটি শিশু দেখবে তার বন্ধুরা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে কিন্তু সে নিতে পারছে না শুধুমাত্র তার বিদ্যালয়ের স্বীকৃতির ধরন ভিন্ন বলে, তখন তা তার মনোবলে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
এটি শিশুদের মধ্যেই একটি বৈষম্যমূলক মনোভাব গড়ে তোলে, যা জাতীয় শিক্ষানীতি এর সাম্যের নীতির পরিপন্থী। প্রাথমিক শিক্ষা মানে কেবল স্বাক্ষরতা নয়, এর মানে হচ্ছে জাতি গঠনে ভবিষ্যতের জন্য একটি শক্ত ভিত গড়ে দেওয়া। সেই ভিত গড়ার প্রথম ধাপেই যদি বৈষম্য শুরু হয়, তাহলে আমরা কীভাবে সমতার সমাজ গড়বো?
শিক্ষা শিশুদের মৌলিক অধিকার। কোন শিশুকে তার মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা আমাদের কারোরই কাম্য নয়। জুলাই বিপ্লবে বৈষম্যের বিরুদ্ধে অনেক শিক্ষার্থীর আত্মত্যাগের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত বর্তমান বৈষম্য বিরোধী সরকার। বিধায় বর্তমান সরকারের সময়ে কিন্ডারগার্টেনের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আবার সেই বৈষম্যের শিকার হোক এটা অপ্রত্যাশিত।
বিগত ১৭-০৭-২০২৫ তারিখের পরিপত্রটি প্রত্যাহার পূর্বক ২০২৫ এ অনুষ্ঠিতব্য প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহনের সুযোগ প্রদান সহ প্রাথমিক শিক্ষার জন্য গৃহীত অন্যান্য যেকোনো কার্যক্রমে প্রাথমিক শিক্ষায় অংশীজন হিসেবে কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সমঅধিকার যেন অক্ষুন্ন থাকে তার প্রতি সদয় দৃষ্টি দানের জোর দাবী জানান।