ঢাকা ১১:৪৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo শাহরাস্তিতে তিন বছরের শিশুর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার : চাচা চাচী আটক Logo সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের স্টোরে নষ্ট আড়াই কোটি টাকার ওষুধ Logo দুই ছাত্রীকে অপহরণ,নির্যাতন ও ধর্ষণের চেষ্টার প্রতিবাদে মানববন্ধন Logo ব্রাহ্মণপাড়ায় ২ হাজার পিস ইয়াবাসহ নারী-পুরুষ গ্রেফতার Logo রূপসায় পারিবারিক কলহের জেরে স্বামীর হাতে স্ত্রী খুন Logo কালীগঞ্জে ইয়াবা ও গাজাসহ দুই মাদক ব্যবসায়ী আটক Logo বিএসসি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সমর্থনে ঢাবি শিক্ষকদের সংবাদ সম্মেলন Logo বেইজিংয়ে ফ্যাসিবাদ-বিরোধী বিজয়ের ৮০তম বার্ষিকীতে জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান Logo ন্যায়, শান্তি ও বিজয়ের বার্তা নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান Logo কুচকাওয়াজ ও যুদ্ধবিমানের শট দিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করেছে সিএমজি’র অনুষ্ঠান

ঝিনাইগাতীতে দিঘীরপাড় ফাযিল মাদরাসায় সরকারি বই বিক্রির অভিযোগে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

মোঃ বেলায়েত হোসেন, শেরপুর

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার দিঘীরপাড় ফাযিল মাদরাসায় শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য প্রেরিত সরকারি বই বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

অভিযোগে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ওবায়দুল ইসলাম, সহকারি শিক্ষক (শিক্ষক প্রতিনিধি) নওশেদ আলী এবং অফিস সহকারি শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে সরকারি বই বিক্রির অভিযোগ ওঠে।

১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মারিয়া, রাহিদুল ইসলাম, মোবাস্সার, আবু বকর সিদ্দিক, মুন্নি, রিয়াজুল ইসলামসহ আরও অনেকে অভিযোগ করে বলেন, “আমাদের মাঝে বিনামূল্যের সরকারি বই সম্পূর্ণভাবে বিতরণ করা হয়নি। বাইরে কেজি দরে বই বিক্রি করেছে। এখনো আমাদের ২-৩টি বই হাতে আসেনি। উপরন্তু বই প্রদানের সময় আমাদের কাছ থেকে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করেছে কর্তৃপক্ষ।”

এ বিষয়ে স্থানীয় সচেতন মহল বলেন, বিনামূল্যের সরকারি বই বিক্রি করা একটি গুরুতর অনিয়ম এবং শিক্ষার্থীদের মৌলিক অধিকারের প্রতি চরম অবহেলা। তারা ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে দিঘীরপাড় ফাযিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ওবায়দুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমাদের প্রতিষ্ঠানে সরকারি বই বিতরণে কোনো অনিয়ম হয়নি। কিছু শিক্ষার্থী হয়তো সময়মতো বই হাতে পায়নি। কিন্তু বই বিক্রির অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।”

ঝিনাইগাতী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (অঃদাঃ) মো. রহুল আমিন তালুকদার বলেন, “এ ধরনের অভিযোগ খুবই গুরুতর। আমি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখব। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এ বিষয়ে ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, “সরকারি বই বিনামূল্যে বিতরণের কথা। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ নেওয়া বা বই বিক্রি করা আইনগত অপরাধ। এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রমাণ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

এ ঘটনায় অভিভাবকেরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “যেখানে সরকারের উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে বই তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে, সেখানে দায়িত্বশীল শিক্ষক-কর্মচারীদের এ ধরনের অনিয়ম কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”

অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা দ্রুত বাকি বই বুঝে পাওয়া এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যের সরকারি বই পৌঁছে দেওয়া সরকারের অঙ্গীকার, অথচ দিঘীরপাড় ফাযিল মাদরাসার বই বিক্রির এ অভিযোগ শুধু শিক্ষাঙ্গনে অনিয়মের চিত্রই নয়, বরং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অধিকার হরণ বলেও মন্তব্য করেছেন স্থানীয়রা।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

শাহরাস্তিতে তিন বছরের শিশুর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার : চাচা চাচী আটক

SBN

SBN

ঝিনাইগাতীতে দিঘীরপাড় ফাযিল মাদরাসায় সরকারি বই বিক্রির অভিযোগে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

আপডেট সময় ০৭:০১:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

মোঃ বেলায়েত হোসেন, শেরপুর

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার দিঘীরপাড় ফাযিল মাদরাসায় শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য প্রেরিত সরকারি বই বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

অভিযোগে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ওবায়দুল ইসলাম, সহকারি শিক্ষক (শিক্ষক প্রতিনিধি) নওশেদ আলী এবং অফিস সহকারি শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে সরকারি বই বিক্রির অভিযোগ ওঠে।

১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মারিয়া, রাহিদুল ইসলাম, মোবাস্সার, আবু বকর সিদ্দিক, মুন্নি, রিয়াজুল ইসলামসহ আরও অনেকে অভিযোগ করে বলেন, “আমাদের মাঝে বিনামূল্যের সরকারি বই সম্পূর্ণভাবে বিতরণ করা হয়নি। বাইরে কেজি দরে বই বিক্রি করেছে। এখনো আমাদের ২-৩টি বই হাতে আসেনি। উপরন্তু বই প্রদানের সময় আমাদের কাছ থেকে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করেছে কর্তৃপক্ষ।”

এ বিষয়ে স্থানীয় সচেতন মহল বলেন, বিনামূল্যের সরকারি বই বিক্রি করা একটি গুরুতর অনিয়ম এবং শিক্ষার্থীদের মৌলিক অধিকারের প্রতি চরম অবহেলা। তারা ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে দিঘীরপাড় ফাযিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ওবায়দুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমাদের প্রতিষ্ঠানে সরকারি বই বিতরণে কোনো অনিয়ম হয়নি। কিছু শিক্ষার্থী হয়তো সময়মতো বই হাতে পায়নি। কিন্তু বই বিক্রির অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।”

ঝিনাইগাতী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (অঃদাঃ) মো. রহুল আমিন তালুকদার বলেন, “এ ধরনের অভিযোগ খুবই গুরুতর। আমি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখব। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এ বিষয়ে ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, “সরকারি বই বিনামূল্যে বিতরণের কথা। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ নেওয়া বা বই বিক্রি করা আইনগত অপরাধ। এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রমাণ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

এ ঘটনায় অভিভাবকেরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “যেখানে সরকারের উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে বই তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে, সেখানে দায়িত্বশীল শিক্ষক-কর্মচারীদের এ ধরনের অনিয়ম কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”

অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা দ্রুত বাকি বই বুঝে পাওয়া এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যের সরকারি বই পৌঁছে দেওয়া সরকারের অঙ্গীকার, অথচ দিঘীরপাড় ফাযিল মাদরাসার বই বিক্রির এ অভিযোগ শুধু শিক্ষাঙ্গনে অনিয়মের চিত্রই নয়, বরং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অধিকার হরণ বলেও মন্তব্য করেছেন স্থানীয়রা।