ঢাকা ০৮:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

ঢাকা ওয়াসায় স্বৈরাচারের দোসররা ধরা ছোয়ার বাইরে

মরিয়ম আক্তার মারিয়াঃ

ঢাকা ওয়াসার সাবেক এমডি তাকসীম এ খানের পক্ষে শুদ্ধতার সাফায় আন্দোলন, নিজের আত্মীয়দের দিয়ে ঠিকাদারী ব্যবসা পরিচালনা সহ ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর অনেকেই বিএনপি ও জামায়াতের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে ওয়াসার রাজনীতির মাঠ দখলের পায়তারা করছেন বলে জানা যায়।

সূত্র মতে ২০২৩ সালের ১২ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত সহস্রাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী ওয়াসা ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন। তাদের হাতে ছিল বিভিন্ন লেখা সংবলিত ফেস্টুন। মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা ‘জয়বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’, ‘হলুদ সাংবাদিক সাবধান সাবধান’সহ নানা স্লোগান দেন।
কারণ, ওয়াসার সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসীম এ খানের
‘যুক্তরাষ্ট্রে ১৪ টি বাড়ি আছে মর্মে যে কোন একটি পত্রিকাতে সংবাদ প্রকাশ হয়। তাই সে সংবাদ প্রকাশের প্রতিবাদে সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসীম এ খানের পক্ষে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ প্রচার হয়েছে মর্মে তারা ঐ আন্দোলন করেন। আন্দোলনকারীদের দাবি ছিল ‘ঢাকা ওয়াসার সফলতা ও তাদের আত্মত্যাগকে বিকৃত করা হচ্ছে এবং সেগুলো বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছিল তারা। তারা আরো দাবি করেন, ঢাকা ওয়াসা দুর্নীতিগ্রস্ত নয়। এমনকি ওয়াসার ওপর তথ্যসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমরা সবাই একে অন্যের পরিপূরক। যে সাংবাদিক বিরোধী আন্দোলনে ওয়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে একাধিক ঠিকাদার ও যোগ দিয়েছিলেন।

অনুসন্ধানে আরও জানা যায়,, ঢাকা ওয়াসার একাধিক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ঠিকাদারী ব্যবসার সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। যে বিষয়ে একাধিক পত্রিকাতে ও সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। আর এদের অধিকাংশই সুবিধাবাদী আওয়ামীলীগের সদস্য ছিলেন, যারা বর্তমানে বিএনপি ও জামায়াতের পরিচয় বহন করার চেষ্টা করে চলেছেন। তাছাড়াও ২০২৪ সালের নির্বাচনে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা তাদের ফেসবুক প্রোফাইলে নৌকার পক্ষে ভোট প্রার্থনা সহ রাতের ভোটে প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

সরকারি চাকরির পাশাপাশি ঠিকাদারী ব্যবসার সাথে জড়িত থাকার ব্যাপারে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল মজিদের মুঠোফোন যোগাযোগ করলে তিনি দৈনিক মুক্তির লড়াই কে বলেন আমার স্ত্রী শারমিন জাহানের বিরুদ্ধে ঠিকাদারি ব্যবসার কথাটা মিথ্যা। তিনি আরো বলেন, অন্য একজনের লাইসেন্সের নামের স্থানে আমার স্ত্রীর নাম বসিয়ে দিয়ে তারা আমাকে হয়রানির চেষ্টা করছে। এমন উত্তরের জবাবে তার নিকট জানতে চাইলাম আপনি তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিয়েছেন কি,না। তিনি সরাসরি উত্তর দিলেন এখন পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

ঢাকা ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল মজিদের স্ত্রীর নামে ঠিকাদারি ব্যবসার ব্যাপারে সেখানকার বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মু: রাশেদুজ্জামান, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাজিব আহমেদ ও শ্রম ও কল্যাণ বিভাগের উপ-সচিব নুরুজ্জামান মিয়াজিসহ ৩ জনের সমন্বয়ে ২০২৫ সালের ১৯ মার্চ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় এবং ১০ কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।

তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল মজিদের স্ত্রীর ঠিকাদারী ব্যবসার অভিযোগে তদন্ত কমিটির শ্রম ও কল্যাণ শাখার উপ-সচিব মো: নুরুজ্জামান মিয়াজীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ‘দৈনিক মুক্তির লড়াই কে বলেন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল মজিদ স্যার আমার চেয়ে সিনিয়র হওয়ার কারণে আমি এ কমিটিতে আর নাই।

তদন্ত কমিটির অন্যতম সদস্য বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মু: রাশেদুজ্জামানের মুঠোফোনে যোগাযোগের মাধ্যমে প্রতিবেদনের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি ‘দৈনিক মুক্তির লড়াই’কে বলেন, ১০ কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার কথা থাকলেও এ ব্যাপারে এখনো কোনো প্রতিবেদন জমা দেয়া হয় নাই। প্রতিবেদন না দেয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঢাকা ওয়াসার পাবলিক রিলেশন অফিসার (পিআরও)মোঃ আব্দুল কাদের সাহেব সঠিক তথ্য দিতে পারবেন।

তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল মজিদের স্ত্রীর ঠিকাদারী ব্যবসার তদন্ত ও প্রতিবেদনের ব্যাপারে জানতে ঢাকা ওয়াসার পাবলিক রিলেশন অফিসার (পিআরও)মোঃ আব্দুল কাদেরের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, এগুলো অনেক পুরাতন খবর। পুনরায় জানতে চাইলাম এ ব্যাপারে কোন প্রতিবেদন হয়েছে কি,না? উত্তরে জানালেন আগামীকাল দেখে বলতে পারব বলে জানান।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

উচ্চমানের উন্মুক্ততা ও বৈশ্বিক সহযোগিতায় চীনের প্রতিশ্রুতি

SBN

SBN

ঢাকা ওয়াসায় স্বৈরাচারের দোসররা ধরা ছোয়ার বাইরে

আপডেট সময় ০৫:২৬:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

মরিয়ম আক্তার মারিয়াঃ

ঢাকা ওয়াসার সাবেক এমডি তাকসীম এ খানের পক্ষে শুদ্ধতার সাফায় আন্দোলন, নিজের আত্মীয়দের দিয়ে ঠিকাদারী ব্যবসা পরিচালনা সহ ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর অনেকেই বিএনপি ও জামায়াতের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে ওয়াসার রাজনীতির মাঠ দখলের পায়তারা করছেন বলে জানা যায়।

সূত্র মতে ২০২৩ সালের ১২ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত সহস্রাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী ওয়াসা ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন। তাদের হাতে ছিল বিভিন্ন লেখা সংবলিত ফেস্টুন। মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা ‘জয়বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’, ‘হলুদ সাংবাদিক সাবধান সাবধান’সহ নানা স্লোগান দেন।
কারণ, ওয়াসার সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসীম এ খানের
‘যুক্তরাষ্ট্রে ১৪ টি বাড়ি আছে মর্মে যে কোন একটি পত্রিকাতে সংবাদ প্রকাশ হয়। তাই সে সংবাদ প্রকাশের প্রতিবাদে সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসীম এ খানের পক্ষে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ প্রচার হয়েছে মর্মে তারা ঐ আন্দোলন করেন। আন্দোলনকারীদের দাবি ছিল ‘ঢাকা ওয়াসার সফলতা ও তাদের আত্মত্যাগকে বিকৃত করা হচ্ছে এবং সেগুলো বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছিল তারা। তারা আরো দাবি করেন, ঢাকা ওয়াসা দুর্নীতিগ্রস্ত নয়। এমনকি ওয়াসার ওপর তথ্যসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমরা সবাই একে অন্যের পরিপূরক। যে সাংবাদিক বিরোধী আন্দোলনে ওয়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে একাধিক ঠিকাদার ও যোগ দিয়েছিলেন।

অনুসন্ধানে আরও জানা যায়,, ঢাকা ওয়াসার একাধিক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ঠিকাদারী ব্যবসার সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। যে বিষয়ে একাধিক পত্রিকাতে ও সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। আর এদের অধিকাংশই সুবিধাবাদী আওয়ামীলীগের সদস্য ছিলেন, যারা বর্তমানে বিএনপি ও জামায়াতের পরিচয় বহন করার চেষ্টা করে চলেছেন। তাছাড়াও ২০২৪ সালের নির্বাচনে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা তাদের ফেসবুক প্রোফাইলে নৌকার পক্ষে ভোট প্রার্থনা সহ রাতের ভোটে প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

সরকারি চাকরির পাশাপাশি ঠিকাদারী ব্যবসার সাথে জড়িত থাকার ব্যাপারে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল মজিদের মুঠোফোন যোগাযোগ করলে তিনি দৈনিক মুক্তির লড়াই কে বলেন আমার স্ত্রী শারমিন জাহানের বিরুদ্ধে ঠিকাদারি ব্যবসার কথাটা মিথ্যা। তিনি আরো বলেন, অন্য একজনের লাইসেন্সের নামের স্থানে আমার স্ত্রীর নাম বসিয়ে দিয়ে তারা আমাকে হয়রানির চেষ্টা করছে। এমন উত্তরের জবাবে তার নিকট জানতে চাইলাম আপনি তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিয়েছেন কি,না। তিনি সরাসরি উত্তর দিলেন এখন পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

ঢাকা ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল মজিদের স্ত্রীর নামে ঠিকাদারি ব্যবসার ব্যাপারে সেখানকার বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মু: রাশেদুজ্জামান, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাজিব আহমেদ ও শ্রম ও কল্যাণ বিভাগের উপ-সচিব নুরুজ্জামান মিয়াজিসহ ৩ জনের সমন্বয়ে ২০২৫ সালের ১৯ মার্চ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় এবং ১০ কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।

তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল মজিদের স্ত্রীর ঠিকাদারী ব্যবসার অভিযোগে তদন্ত কমিটির শ্রম ও কল্যাণ শাখার উপ-সচিব মো: নুরুজ্জামান মিয়াজীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ‘দৈনিক মুক্তির লড়াই কে বলেন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল মজিদ স্যার আমার চেয়ে সিনিয়র হওয়ার কারণে আমি এ কমিটিতে আর নাই।

তদন্ত কমিটির অন্যতম সদস্য বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মু: রাশেদুজ্জামানের মুঠোফোনে যোগাযোগের মাধ্যমে প্রতিবেদনের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি ‘দৈনিক মুক্তির লড়াই’কে বলেন, ১০ কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার কথা থাকলেও এ ব্যাপারে এখনো কোনো প্রতিবেদন জমা দেয়া হয় নাই। প্রতিবেদন না দেয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঢাকা ওয়াসার পাবলিক রিলেশন অফিসার (পিআরও)মোঃ আব্দুল কাদের সাহেব সঠিক তথ্য দিতে পারবেন।

তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল মজিদের স্ত্রীর ঠিকাদারী ব্যবসার তদন্ত ও প্রতিবেদনের ব্যাপারে জানতে ঢাকা ওয়াসার পাবলিক রিলেশন অফিসার (পিআরও)মোঃ আব্দুল কাদেরের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, এগুলো অনেক পুরাতন খবর। পুনরায় জানতে চাইলাম এ ব্যাপারে কোন প্রতিবেদন হয়েছে কি,না? উত্তরে জানালেন আগামীকাল দেখে বলতে পারব বলে জানান।