
মোঃ আল আমিন, বিশেষ প্রতিনিধি
গাইবান্ধা জেলার মোট ৩১৯টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে ৩১৬টিতে হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (CHCP) নিয়োজিত থাকলেও, এসব ক্লিনিকের সেবা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, সদর উপজেলার ৮ নং বোয়ালী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের খামার বোয়ালী চৌরাঙ্গী কমিউনিটি ক্লিনিকের দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (CHCP) আরিফ কবির নিয়মিত সময়মতো অফিসে উপস্থিত থাকেন না। এতে চিকিৎসার জন্য আসা শিশু-কিশোর, গর্ভবতী নারী ও বয়স্করা চিকিৎসা না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকারি বরাদ্দকৃত ঔষধও সঠিকভাবে সরবরাহ করা হয় না। রোগীদের অনেক সময় বলা হয়, “ঔষধ নেই অথবা চেয়ারম্যানের সিগনেচার আনতে হবে, নইলে ঔষধ পাওয়া যাবে না।” ফলে দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে বাইরে থেকে ঔষধ কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি জনগণের আস্থা কমে যাচ্ছে।
শুধু অব্যবস্থাপনাই নয়, আরিফ কবিরের বিরুদ্ধে সরকারি ঔষধ আত্মসাত করে বাজারে বিক্রির অভিযোগও রয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, সরকারের একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ তার অনিয়মের কারণে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ছে।
সূত্র জানিয়েছে, আরিফ কবির শুধু ক্লিনিককর্মী নন, তিনি গাইবান্ধা সদর উপজেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী। স্থানীয়দের ধারণা, রাজনৈতিক প্রভাব কাজে লাগিয়েই তিনি চাকরি নিশ্চিত করেছেন এবং অনিয়মের অভিযোগের পরও প্রশাসনিক পদক্ষেপ এড়িয়ে যাচ্ছেন।
গ্রামবাসীর দাবি, “কমিউনিটি ক্লিনিক হলো গ্রামের মানুষের একমাত্র ভরসা। যদি এখানেই দুর্নীতি আর অবহেলা চলে, তাহলে গরিব মানুষ চিকিৎসা পাবে কোথায়?”
সচেতন মহল মনে করছেন, রাজনৈতিক প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয়রা সরাসরি অভিযোগ করতে সাহস পান না। তবে সাধারণ মানুষ প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দ্রুত তদন্ত ও অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।