
মোঃ মুক্তাদির হোসেন, কালীগঞ্জ (গাজীপুর)
সরকারি চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে গাজীপুরে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাধারণ সেবা দফতরের শ্রমিক মোঃ মাসুদের বিরুদ্ধে। শ্রমিক পদে চাকরি করলেও নিজেকে প্রভাবশালী পরিচয় দিয়ে এবং সচিবালয়ে আত্মীয় থাকার দাবি করে অসহায় মানুষের কাছ থেকে টাকা নিতেন তিনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মুন্সিগঞ্জ জেলার অন্তত ১০ জন ও গাজীপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আরও ৮–৯ জনের কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার নাম করে কাগজপত্র জমা নেন মাসুদ। প্রতি জনের কাছ থেকে প্রাথমিকভাবে নগদ ১ লাখ টাকা নেন এবং পরে মোট ৩.৫০ লাখ টাকা দাবি করেন।
এমনকি গাজীপুর সদরের সাংবাদিক নাসির ও সাংবাদিক এমদাদুল হক (ঘামা)–এর কাছ থেকেও তিনজনের জন্য দেড় লাখ টাকা নিয়েছিলেন তিনি। তবে সময়মতো চাকরি না দেওয়ায় তাদের সঙ্গে বিতর্কিত কথোপকথন হয় এবং ধাপে ধাপে টাকা ফেরত দেন। এ সংক্রান্ত ভিডিও ফুটেজ ও কল রেকর্ড সাংবাদিকদের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।
প্রশ্ন উঠেছে—মাত্র ১৬ হাজার টাকা মাসিক বেতনের একজন শ্রমিক কীভাবে কৃষি গবেষণাগারের সামনে দুটি দোকান নিলেন, যেখানে প্রতিটি দোকানের জন্য ৩ থেকে ৫ লাখ টাকা এডভান্স দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও মাসুদের বিরুদ্ধে অঢেল সম্পত্তি অর্জনের অভিযোগও পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে স্থানীয়রা জানান, মাসুদের অপকর্ম ধামাচাপা দেওয়ার কাজে সহযোগিতা করে আসছেন একই প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক জাহাঙ্গীর আলম। তিনি নিজেকে ল্যাব এসিস্ট্যান্ট পরিচয় দিলেও আসলে সাধারণ শ্রমিক। একাধিক অভিযোগ ওঠায় সম্প্রতি তাকে রক্তাক্ত বিভাগ থেকে বদলি করে খামার বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে মোবাইল ফোনে মাসুদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “এসব আমার বিরুদ্ধে একটি চক্রান্ত মাত্র।”
জনমনে প্রশ্ন—শ্রমিক পদে চাকরি করেও মাসুদ কিভাবে কোটি টাকার সম্পদের মালিক হলেন? কোথা থেকে আসছে তার এই আয়ের উৎস?
এ বিষয়ে তার গ্রামের বাড়ি, সম্পত্তি ও আয়ের উৎস নিয়ে থাকছে দ্বিতীয় পর্বে বিশেষ প্রতিবেদন।