
আব্দুর রাজ্জাক সরকার, স্টাফ রিপোর্টার,
গাইবান্ধায় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী শিশির চন্দ্র দেবনাথ কর্তৃক দৈনিক মুক্ত খবর পত্রিকার সাংবাদিক দীশা আক্তারসহ তিন সাংবাদিকের ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) গাইবান্ধা সদর থানার ওসি মো. শাহিনুর ইসলাম তালুকদার অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এঘটনায় সাংবাদিকদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অবিলম্বে ওই উপসহকারী প্রকৌশলীকে প্রত্যাহার ও আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।
অভিযোগকারী সাংবাদিক দিশা জানান, আমি দৈনিক মুক্ত খবর পত্রিকার গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। গত ২৪ সেপ্টেম্বর দুপুর আড়াইটার দিকে পেশাগত দায়িত্ব পালন ও পত্রিকার বিজ্ঞাপন সংগ্রহের জন্য আমিসহ আমার সহকর্মী ১। মোঃ খাইরুল ইসলাম, জেলা প্রতিনিধি, দৈনিক আমাদের সময়, ২। মোঃ শামীম রেজা, জেলা প্রতিনিধি, দৈনিক বাঙালির কন্ঠ, ৩। মোঃ আব্দুল মুনতাকিন জুয়েল, জেলা প্রতিনিধি, দৈনিক ভোরের আওয়াজগণ শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, গাইবান্ধা কার্যালয়ে ১নং আসামীর অফিস কক্ষে যাই এবং আমার সহকর্মীরা অন্যান্য ষ্টাফদের কক্ষে যায়। আমি আমার উক্ত পত্রিকায় টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি (টেন্ডার নোটিশ) প্রকাশের জন্য আসামী শিশির চন্দ্র দেবনাথ এর সহিত আলোচনা করি। আলোচনা করাকালে আসামী শিশির চন্দ্র দেবনাথ আমার পত্রিকার বিষয়ে বাজে মন্তব্য করে এবং পত্রিকায় টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি দিবে না বলিয়া অশ্লীল ভাষায় আমার সাথে কথাবার্তা বলে। আমি তাহাকে সংযত হয়ে কথাবার্তা বলার জন্য অনুরোধ করিলে আসামী শিশির চন্দ্র দেবনাথ মোবাইল ফোনে আসামী বেলাল আহমেদকে ঘটনা জানাইলে আসামী বেলাল আহমেদ মোবাইলে দরজা বন্ধ করে আমাকে মারধর করার হুকুম দেয়। ওই হুকুম পাইয়া আসামী শিশির চন্দ্র দেবনাথ আমার সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়ে। আমি কোন কিছু বোঝার পূর্বে সে তাহার চেয়ার থেকে উঠে দৌড় দিয়া দরজায় গিয়া দরজা বন্ধ করে এবং বলে যে, আজকে আমি সাংবাদিক সাইজ করবো। ঐ কথা বলিয়া আমার উপর চড়াও হয় এবং আমার সাথে ধস্তাধস্তি শুরু করে। এক পর্যায়ে আসামী শিশির চন্দ্র দেবনাথ আমার হাতে থাকা Realme C 55 মোবাইল ফোন মূল্য অনুমান-২৫,০০০/-টাকা কাড়িয়া নেয় এবং আমার শ্লীলতাহানি ঘটায়। আসামী শিশির চন্দ্র দেবনাথ আমাকে ধাক্কা মারিয়া মেঝেতে ফেলিয়া দিয়া আমাকে চড় থাপ্পড় মারে। আমার চিৎকার শুনিয়া আমার সহকর্মীরা আগাইয়া আসিয়া আমাকে উদ্ধার করে। উক্ত আসামী খুন করিবে, জখম করিবে মর্মে হুমকী ধামকী প্রদর্শন করে। আমার সহকর্মী খাইরুল ইসলাম অবস্থা বেগতিক দেখিয়া গাইবান্ধা প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিলন খন্দকার (আনন্দ টিভি) কে মোবাইল ফোনে সংবাদ দিলে তিনি ঘটনাস্থলে আসেন এবং ঘটনাটি সমাধানের চেষ্টা করেন। কিন্তু আসামী শিশির চন্দ্র দেবনাথ, গাইবান্ধা প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিলন খন্দকারের উপর চড়াও হয় এবং বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকী ধামকী প্রদর্শন করে। তিনি সরে গিয়া নিজেকে রক্ষা করেন। এদিকে উল্টো আমাদের নামে মামলা দিয়ে হেনস্তা করার চেষ্টা করছে। সাংবাদিক মহলের প্রশ্ন ওই শিশিরের খুঁটির জোর কোথায়? কেন এখনও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
এ ব্যাপারে অভিযুক্তদের বক্তব্যের জন্য বারবার চেষ্টা করেও তাদেরকে পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে গাইবান্ধা সদর থানার ওসি মো. শাহিনুর ইসলাম তালুকদার বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।