ঢাকা ০২:৪৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাণীনগরে পানিবন্দি শতাধিক পরিবার : দূর্ভোগে এলাকাবাসী চান প্রতিকার

মোঃ রায়হান, নওগাঁ

টানা তিন দিনের অবিরাম বৃষ্টিতে নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার চকাদিন গ্রামে নেমে এসেছে জলাবদ্ধতার ভয়াবহতা। ঘরবাড়ি, রাস্তা, বাজার-সবখানেই হাঁটু সমান পানি। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে শতাধিক পরিবার। ঘরের ভেতরে ঢুকে পড়া পানি জীবনের নিত্য প্রয়োজনীয় কাজকর্মকেও করে তুলেছে দুঃসহ।

বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেছে রান্নাঘর, নষ্ট হয়েছে আসবাব, আর ঘরে শুকনো জায়গা বলতে কিছুই নেই। নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। শিশুরা স্কুলে যেতে পারছে না, অনেকে আবার ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

এলাকায় পারাপারের একমাত্র উপায় এখন ছোট ছোট বাঁশ ও কাঠের তৈরি অস্থায়ী সেতু। প্রতিদিনই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেই সেতু পার হয়ে চলাচল করছেন স্থানীয়রা।

তুলা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান মালিক মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন,

মিলের চারপাশে বহুদিন ধরেই পানি জমে আছে। এখন ঘরের ভেতরেও পানি ঢুকে গেছে। মেশিন, তুলা, শ্রমিকদের থাকার জায়গা সবকিছু পানিতে ভাসছে। সেচ না দিলে পুরো উৎপাদন বন্ধ হয়ে যেত। কিন্তু এত খরচে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া এখন অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

আরেক মিল মালিক মোঃ উজ্জ্বল জানান,
প্রায় পাঁচ মাস ধরে পানি নিয়ে ভুগছি। এবার টানা বৃষ্টিতে অবস্থা ভয়াবহ। তুলা আর যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে গেছে—লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি। চেয়ারম্যানকে বহুবার বলেছি, কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নেই।

এক প্রতিবন্ধী বৃদ্ধ বলেন,
আমার এক হাত ভাঙা, বাঁশের সেতু দিয়ে যেতে পারি না। বাধ্য হয়ে পানিতে নেমে যাই, মাঝে মাঝে পড়ে যাইও। কেউ খোঁজ নেয় না।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, বারবার জানানো সত্ত্বেও জনপ্রতিনিধিরা কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। স্থায়ী ড্রেনেজ ব্যবস্থা ছাড়া এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি অসম্ভব বলে দাবি তাদের।

এ বিষয়ে রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রাকিবুল হাসান বলেন,
চকাদিন এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে অনেক পরিবার ভুগছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। খুব দ্রুত সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় বরাদ্দের মাধ্যমে আগামী এক-দুই মাসের মধ্যেই সমস্যার স্থায়ী সমাধান করা হবে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

রাণীনগরে পানিবন্দি শতাধিক পরিবার : দূর্ভোগে এলাকাবাসী চান প্রতিকার

আপডেট সময় ০২:১৮:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর ২০২৫

মোঃ রায়হান, নওগাঁ

টানা তিন দিনের অবিরাম বৃষ্টিতে নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার চকাদিন গ্রামে নেমে এসেছে জলাবদ্ধতার ভয়াবহতা। ঘরবাড়ি, রাস্তা, বাজার-সবখানেই হাঁটু সমান পানি। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে শতাধিক পরিবার। ঘরের ভেতরে ঢুকে পড়া পানি জীবনের নিত্য প্রয়োজনীয় কাজকর্মকেও করে তুলেছে দুঃসহ।

বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেছে রান্নাঘর, নষ্ট হয়েছে আসবাব, আর ঘরে শুকনো জায়গা বলতে কিছুই নেই। নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। শিশুরা স্কুলে যেতে পারছে না, অনেকে আবার ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

এলাকায় পারাপারের একমাত্র উপায় এখন ছোট ছোট বাঁশ ও কাঠের তৈরি অস্থায়ী সেতু। প্রতিদিনই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেই সেতু পার হয়ে চলাচল করছেন স্থানীয়রা।

তুলা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান মালিক মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন,

মিলের চারপাশে বহুদিন ধরেই পানি জমে আছে। এখন ঘরের ভেতরেও পানি ঢুকে গেছে। মেশিন, তুলা, শ্রমিকদের থাকার জায়গা সবকিছু পানিতে ভাসছে। সেচ না দিলে পুরো উৎপাদন বন্ধ হয়ে যেত। কিন্তু এত খরচে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া এখন অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

আরেক মিল মালিক মোঃ উজ্জ্বল জানান,
প্রায় পাঁচ মাস ধরে পানি নিয়ে ভুগছি। এবার টানা বৃষ্টিতে অবস্থা ভয়াবহ। তুলা আর যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে গেছে—লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি। চেয়ারম্যানকে বহুবার বলেছি, কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নেই।

এক প্রতিবন্ধী বৃদ্ধ বলেন,
আমার এক হাত ভাঙা, বাঁশের সেতু দিয়ে যেতে পারি না। বাধ্য হয়ে পানিতে নেমে যাই, মাঝে মাঝে পড়ে যাইও। কেউ খোঁজ নেয় না।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, বারবার জানানো সত্ত্বেও জনপ্রতিনিধিরা কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। স্থায়ী ড্রেনেজ ব্যবস্থা ছাড়া এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি অসম্ভব বলে দাবি তাদের।

এ বিষয়ে রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রাকিবুল হাসান বলেন,
চকাদিন এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে অনেক পরিবার ভুগছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। খুব দ্রুত সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় বরাদ্দের মাধ্যমে আগামী এক-দুই মাসের মধ্যেই সমস্যার স্থায়ী সমাধান করা হবে।