ঢাকা ০৭:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

খিলগাঁও থেকে নিখোঁজ তিনজন শিশু ফিরলো মায়ের কোলে

স্টাফ রিপোর্টার

ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের জনাকীর্ণ প্ল্যাটফর্মে দিশেহারা হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিল তিন ছোট্ট শিশু—সিয়াম, আদম ও নূর মোহাম্মদ। এলোমেলো পোশাক, ক্লান্ত চোখ আর নিখোঁজ হওয়ার আতঙ্কে তারা ছিল সম্পূর্ণ একা। সাধারণ যাত্রীরা শিশুদের অস্বাভাবিক অবস্থা দেখে দ্রুত তাদের ঢাকা রেলওয়ে থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু বহু চেষ্টা সত্ত্বেও শিশুরা কোনো ঠিকানা জানাতে পারেনি।

পরবর্তীতে রেলওয়ে থানা থেকে যোগাযোগ করা হয় লোকাল এডুকেশন অ্যান্ড ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন—লিডোর সমাজকর্মীদের সঙ্গে। খবর পেয়ে লিডোর সমাজকর্মীরা ছুটে যান থানায়। ৯ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে ৪৩৮ নম্বর জিডির মাধ্যমে শিশু তিনজনকে লিডোর ট্রানজিশনাল শেল্টার সেতুবন্ধন, কমলাপুর শাখায় নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া হয়।

লিডোর সমাজকর্মী মাসুদ মাহাতাব জানান, “শিশুগুলো যখন আমাদের কাছে আসে, তারা প্রচণ্ড ভয় আর অনিশ্চয়তায় ছিল। ধাপে ধাপে কাউন্সিলিং করে আমরা তাদের কথা বলার জন্য স্বস্তি দিই। এরপর বিভিন্ন সূত্র, এলাকার লোকজন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে অবশেষে তাদের পরিবারের খোঁজ পাই।”

১৭ নভেম্বর ২০২৫—টানা অনুসন্ধানের আট দিন পর মিলল সেই কাঙ্ক্ষিত ঠিকানা। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে লিডোর সমাজকর্মীরা শিশু তিনজনকে নিয়ে তাদের নিজ নিজ বাড়িতে যান। একই দিন ঢাকা রেলওয়ে থানার ৯৩০ নম্বর জিডির মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে শিশুদের পরিবারে হস্তান্তর করা হয়।

শিশুদের পরিবার জানায়—এক অজ্ঞাত ব্যক্তি তাদের সন্তানদের নিয়ে কমলাপুর রেলস্টেশনে আসে। এরপরই শিশুরা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ও পথ হারায়। পরিবারের সদস্যরা জানান,
“রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ—সব জায়গায় খুঁজেছি। পোস্টার টাঙিয়েছি, লিফলেট বিলিয়েছি। প্রতিটা মুহূর্ত ছিল দুঃস্বপ্নের মতো। আজ লিডোর সহায়তায় সন্তানদের ফিরে পেয়ে আমরা কৃতজ্ঞ ও স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারছি।”

উল্লেখ্য, লিডো দীর্ঘদিন ধরে পথশিশুদের সুরক্ষা, অধিকার প্রতিষ্ঠা ও পুনর্বাসনে কাজ করে আসছে। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকা শিশুদের উদ্ধার, পরিবারে পুনর্মিলন, পুনর্বাসন, মোবাইল স্কুল, পথশালা ও বিভিন্ন সহায়তা প্রদান—এসব উদ্যোগের মাধ্যমে তারা নিয়মিতভাবে মানবিক সেবা দিয়ে যাচ্ছে।

তিন শিশুর পরিবার লিডোর সমাজকর্মী ও সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ইনসাফভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা গড়তে চাই -আলহাজ্ব সেলিম মাহমুদ

SBN

SBN

খিলগাঁও থেকে নিখোঁজ তিনজন শিশু ফিরলো মায়ের কোলে

আপডেট সময় ০৪:৪২:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫

স্টাফ রিপোর্টার

ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের জনাকীর্ণ প্ল্যাটফর্মে দিশেহারা হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিল তিন ছোট্ট শিশু—সিয়াম, আদম ও নূর মোহাম্মদ। এলোমেলো পোশাক, ক্লান্ত চোখ আর নিখোঁজ হওয়ার আতঙ্কে তারা ছিল সম্পূর্ণ একা। সাধারণ যাত্রীরা শিশুদের অস্বাভাবিক অবস্থা দেখে দ্রুত তাদের ঢাকা রেলওয়ে থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু বহু চেষ্টা সত্ত্বেও শিশুরা কোনো ঠিকানা জানাতে পারেনি।

পরবর্তীতে রেলওয়ে থানা থেকে যোগাযোগ করা হয় লোকাল এডুকেশন অ্যান্ড ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন—লিডোর সমাজকর্মীদের সঙ্গে। খবর পেয়ে লিডোর সমাজকর্মীরা ছুটে যান থানায়। ৯ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে ৪৩৮ নম্বর জিডির মাধ্যমে শিশু তিনজনকে লিডোর ট্রানজিশনাল শেল্টার সেতুবন্ধন, কমলাপুর শাখায় নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া হয়।

লিডোর সমাজকর্মী মাসুদ মাহাতাব জানান, “শিশুগুলো যখন আমাদের কাছে আসে, তারা প্রচণ্ড ভয় আর অনিশ্চয়তায় ছিল। ধাপে ধাপে কাউন্সিলিং করে আমরা তাদের কথা বলার জন্য স্বস্তি দিই। এরপর বিভিন্ন সূত্র, এলাকার লোকজন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে অবশেষে তাদের পরিবারের খোঁজ পাই।”

১৭ নভেম্বর ২০২৫—টানা অনুসন্ধানের আট দিন পর মিলল সেই কাঙ্ক্ষিত ঠিকানা। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে লিডোর সমাজকর্মীরা শিশু তিনজনকে নিয়ে তাদের নিজ নিজ বাড়িতে যান। একই দিন ঢাকা রেলওয়ে থানার ৯৩০ নম্বর জিডির মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে শিশুদের পরিবারে হস্তান্তর করা হয়।

শিশুদের পরিবার জানায়—এক অজ্ঞাত ব্যক্তি তাদের সন্তানদের নিয়ে কমলাপুর রেলস্টেশনে আসে। এরপরই শিশুরা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ও পথ হারায়। পরিবারের সদস্যরা জানান,
“রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ—সব জায়গায় খুঁজেছি। পোস্টার টাঙিয়েছি, লিফলেট বিলিয়েছি। প্রতিটা মুহূর্ত ছিল দুঃস্বপ্নের মতো। আজ লিডোর সহায়তায় সন্তানদের ফিরে পেয়ে আমরা কৃতজ্ঞ ও স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারছি।”

উল্লেখ্য, লিডো দীর্ঘদিন ধরে পথশিশুদের সুরক্ষা, অধিকার প্রতিষ্ঠা ও পুনর্বাসনে কাজ করে আসছে। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকা শিশুদের উদ্ধার, পরিবারে পুনর্মিলন, পুনর্বাসন, মোবাইল স্কুল, পথশালা ও বিভিন্ন সহায়তা প্রদান—এসব উদ্যোগের মাধ্যমে তারা নিয়মিতভাবে মানবিক সেবা দিয়ে যাচ্ছে।

তিন শিশুর পরিবার লিডোর সমাজকর্মী ও সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।