
“পঞ্চদশ পাঁচশালা পরিকল্পনা উচ্চমানের উন্নয়নের উপর জোর দেয়, যা আমার মনে হয় খুবই বুদ্ধিমানের কাজ। চীন থেকে ‘বিচ্ছিন্ন’ হওয়া মানে বিশ্ব থেকে ‘বিচ্ছিন্ন’ হওয়া। যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বুদ্ধিমানের কাজ হল চীনের উন্নয়নকে আটকানোর চেষ্টা বন্ধ করা, কারণ চীনের উন্নয়ন অপ্রতিরোধ্য। চীনের উদ্ভাবনী উন্নয়ন বিশ্বকে উপকৃত করবে। বিশ্বের খুশি হওয়া উচিত যে, চীন রোবোটিক্স উৎপাদনে বিশ্বকে নেতৃত্ব দিচ্ছে।”
সম্প্রতি সিএমজিকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে জাতিসংঘে সিঙ্গাপুরের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি কিশোর মাহবুবানি এসব কথা বলেন।
চীন ও যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে, বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে চীনের বাণিজ্যের পরিমাণ এখন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও বেশি। এটি একটি বাস্তবতা। একই সাথে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন শিল্পের অনেক মূল উপাদানের জন্য চীনের উপর নির্ভর করে। স্পষ্টতই, চীন বিশ্ব ব্যবস্থার সাথে গভীরভাবে একীভূত হয়ে গেছে। তাই চীন থেকে “বিচ্ছিন্ন” করার প্রচেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্র কেবল চীন থেকে নয়, বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকেও নিজেকে বিচ্ছিন্ন হতে দেখবে। আমি বারবার যুক্তি দিয়েছি যে, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি বুদ্ধিমান পদক্ষেপ হল চীনের উন্নয়নকে আটকানো বন্ধ করা, কারণ চীনের উন্নয়ন অপ্রতিরোধ্য। পরিবর্তে, যুক্তরাষ্ট্রের চীনের সাথে পারস্পরিকভাবে উপকারী সহযোগিতা খোঁজা উচিত। সত্যি বলতে, বিশ্বব্যাপী সমৃদ্ধি এবং উন্নয়নও যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে, যা চীন ঠিক তাই করছে – সমস্ত দেশের সাথে সমৃদ্ধি ভাগাভাগি করে নেওয়া।
কিছু সময়ের জন্য, বিশেষ করে ঠান্ডা যুদ্ধের পর, অনেক অর্থনীতিবিদ বলেছিলেন, “পঞ্চদশ পাঁচশালা পরিকল্পনা পুরনো হয়ে গেছে এবং সেগুলো পরিত্যাগ করতে হবে; বাজারেরই সবকিছু নির্ধারণ করা উচিত।” সেই সময়ে এটাই প্রচলিত ধারণা ছিল, কিন্তু পরিস্থিতি বদলে গেছে। এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, বাজার একা দীর্ঘমেয়াদী সিদ্ধান্ত নিতে পারে না, কারণ বাজার নিজেই দীর্ঘমেয়াদী চিন্তাভাবনা ধারণ করে না। ঠিক এই কারণেই পাঁচশালা পরিকল্পনার প্রয়োজন। আমি মনে করি, চীনের পাঁচাশালা পরিকল্পনা মেনে চলা বুদ্ধিমানের কাজ। আসন্ন পঞ্চদশ পাঁচশালা পরিকল্পনা, যা উচ্চমানের উন্নয়নের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে, আমার মতে, অত্যন্ত অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ। আজকের উন্নয়ন আর কেবল প্রবৃদ্ধির হার অনুসরণ করে না, বরং প্রবৃদ্ধির মান, পরিবেশগত প্রভাব এবং মানুষের জীবনযাত্রার উন্নতির উপর আরও বেশি জোর দেয়। আমি আন্তরিকভাবে চীনের পঞ্চদশ পাঁচশালা পরিকল্পনার সম্পূর্ণ সাফল্য কামনা করি!
যদি কোন দেশ সত্যিকার অর্থে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, তাহলে তা হলো চীন। বিশ্বের প্রতি তিনটি রোবটের মধ্যে একটি রোবট চীনে তৈরি হয়, এবং প্রতিদিন “জন্মগ্রহণ” করা দুটি নতুন রোবটের মধ্যে একটি চীন থেকে আসে। অন্য কথায়, চীনের রোবট উৎপাদন অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় অনেক বেশি। স্পষ্টতই, চীন ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
উদাহরণস্বরূপ, বয়স্ক জনসংখ্যার বৃদ্ধি শ্রমিকের ঘাটতির দিকে পরিচালিত করবে, যা রোবোটিক্সে চীনের বিনিয়োগকে অত্যন্ত বুদ্ধিমানের পদক্ষেপ করে তুলবে। আমি আশা করি, চীন অন্যান্য দেশের সাথে তার অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা ভাগ করে নিতে পারবে, কারণ এই ধরনের রোবট অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলোকে তাদের স্থানীয় কর্মী এবং কারখানার উৎপাদনশীলতা উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে। তাই বিশ্বের খুশি হওয়া উচিত যে, চীন রোবট উৎপাদনে বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে। সূত্র: সিএমজি।
আন্তর্জাতিক: 
























