ঢাকা ০১:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo চাঁদপুর প্রত্যেক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বিদায় সংবর্ধনা দিলেন পুলিশ সুপার Logo ৭ ডিসেম্বর বিজয়ের দুয়ারে উত্তাল বাংলাদেশ Logo বুড়িচংয়ে ভাবিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ দেবরের বিরুদ্ধে, শ্বশুরবাড়ির সবাই পলাতক Logo মায়ানমারে পাচারকালে বিপুল পরিমাণ নিত্য পণ্য ও ঔষধ সহ ৬ পাচারকারী আটক Logo বাংলাদেশ সংবাদপত্র কর্মচারি ফেডারেশনের দ্বি বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত Logo ঝিনাইদহে পরিবার কল্যাণ সেবা সপ্তাহের উদ্বোধন Logo ঝিনাইদহে হানাদারমুক্ত দিবস পালিত Logo উইলিয়াম লাইয়ের মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া: যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করল চীন Logo ফ্রান্স ও চীনের ফার্স্ট লেডির সাথে অভিনেতাদের বন্ধুত্বপূর্ণ মতবিনিময় Logo সভ্যতার বিনিময়ে নতুন মাত্রা: সি চিন পিং-ম্যাকখোঁ বৈঠক

ভোলায় ক্যাপসিক্যাম চাষে সফল প্রবাসী হাফিজুর রহমান

ভোলার দুর্গম চরে ঝালবিহীন বিদেশি ক্যাপসিক্যাম মরিচ চাষ করে সফল হয়েছেন প্রবাসী হাফিজুর রহমান। তার দেখাদেখি ভোলায় এখন আরও অনেকেই ক্যাপসিক্যাম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। বিদেশি এই মরিচ চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ভোলা জেলা কৃষি বিভাগ।

ভোলা সদর উপজেলা পূর্ব ইলিশা ইউনিয়ন এর হাফিজুর রহমান দীর্ঘ প্রায় এক যুগ বিদেশ ছিলেন। কয়েক বছর আগে দেশে ফিরে বিভিন্ন কাজ করেছেন। কোনটাতেই সফলতা পাননি। অবশেষে উদ্যোগ নেন কৃষি কাজের। সিদ্ধান্ত নেন প্রচলিত ফসলের বাইরে গিয়ে নতুন কিছু করবেন। সেই ভাবনা থেকে তিনি ক্যাপসিক্যাম চাষ শুরু করেন। আর তাতেই সফলতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন এই প্রবাসী।

ভোলার মেঘনা নদীর মাঝে জেগে ওঠা চরের জমিতে বিদেশী ক্যাপসিক্যাম মরিচ চাষ করে সফলতার মুখ দেখেছন প্রবাস জীবন থেকে ফিরে আসা হাফিজুর রহমান। তিনি জানান, বিদেশ থেকে আসার পর বিভিন্ন ব্যবসা করেছেন। সফল হননি। করেছেন চাকরি। তাও ভাল লাগেনি। ব্যবসা কিংবা চাকরি কোনটাতেই তার মন বসেনি।

অবশেষে উদ্যোগ নেন কৃষি কাজের। গত কয়েক বছর ধরে তিনি চরে এই ফসল চাষ করছেন। চলতি মৌসুমে প্রায় আট একর জমি লিজ নিয়ে ক্যাপসিক্যাম চাষ করেন। প্রতি বছরই তিনি লাভবান হয়েছেন। কিন্তু এবার আবহাও অনুকূলে থাকায় তিনি অভাবনীয় সফলতা পেয়েছেন।

সরজমিনে দেখা যায়, তার ক্ষেতে নিয়মিত কাজ করছেন ২০ থেকে ২৫ জন কৃষি শ্রমিক। শ্রমিকরা জানান, তারা টাকা খরচ করে বিভিন্ন জেলায় কাজ করতে যেতেন। এখন আর সেই বারতি টাকা খরচ করে কাজ যোগার করতে দূরে যেতে হচ্ছে না। নিজ এলাকায় মোঃ হাফিজুর রহমান ক্যাপসিক্যাম ক্ষেতে কাজ করছেন। দৈনিক ৫শত টাকা মুজুরি পেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে ভালই আছেন।

ক্যাপসিক্যাম চাষি মোঃ হাফিজুর রহমান জানান, আট একর জমিতে জমি লিজ নিয়ে, বীজ, সার ঔষধ, শ্রমিকের মুজুরি সব মিলিয়ে তার মোট খরচ হয়েছে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা। এ পর্যন্ত তিনি প্রায় ৩০ লাখ টাকার ফসল বিক্রি করেছেন। এখনও তার ক্ষেতে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকার ফসল রয়েছে। তিনি আরও জানান, ভোলার স্থানীয় বাজারে এর চাহিদা তেমন নেই। তবে ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বেশ চাহিদা রয়েছে।

প্রতি সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার ফসল তোলেন এবং ট্রলার কিংবা লঞ্চে করে রাজধানীর সহ দেশের বিভিন্ন মেকামে পাঠিয়ে দেন। হাফিজুর জানান, তার আগেও ভোলার বিভিন্ন চরে ক্যাপসিক্যাম চাষ হয়েছে। তবে এত বড় আকারে তিনিই প্রথম উদ্যোগ নিয়েছেন এবং সফল হয়েছেন বলে দাবি করেন।

ভোলা জেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান ওয়ারিসুল কবীর জানান, কৃষি বিভাগের সহায়তা নিয়ে ভোলায় আরও কয়েকজন কৃষক ক্যাপসিক্যাম চাষ করছেন। তবে প্রবাসী হাফিজ ব্যপক সফলতা লাভ করেছেন। তিনি আট একর জমিতে ২০ লাখ টাকা খরচ করে মাত্র তিন মাসে ৩০ লাখ টাকার বেশি বিক্রি করতে পেরছেন এটা অভাবনীয় সফলতা।

জেলা কৃষি কর্মকর্তা আরও জানান, ক্যাপসিক্যাম চাষের জন্য ভোলার মাটি খুবই উপযোগী। রোগ বালাই কম। ফলনও ভালো হয়। দামও বেশ ভালো পাওয়া যায়। তাই কৃষকরা দিন দিন ক্যাপসিক্যাম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

চাঁদপুর প্রত্যেক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বিদায় সংবর্ধনা দিলেন পুলিশ সুপার

SBN

SBN

ভোলায় ক্যাপসিক্যাম চাষে সফল প্রবাসী হাফিজুর রহমান

আপডেট সময় ০৯:৪১:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ এপ্রিল ২০২৩

ভোলার দুর্গম চরে ঝালবিহীন বিদেশি ক্যাপসিক্যাম মরিচ চাষ করে সফল হয়েছেন প্রবাসী হাফিজুর রহমান। তার দেখাদেখি ভোলায় এখন আরও অনেকেই ক্যাপসিক্যাম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। বিদেশি এই মরিচ চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ভোলা জেলা কৃষি বিভাগ।

ভোলা সদর উপজেলা পূর্ব ইলিশা ইউনিয়ন এর হাফিজুর রহমান দীর্ঘ প্রায় এক যুগ বিদেশ ছিলেন। কয়েক বছর আগে দেশে ফিরে বিভিন্ন কাজ করেছেন। কোনটাতেই সফলতা পাননি। অবশেষে উদ্যোগ নেন কৃষি কাজের। সিদ্ধান্ত নেন প্রচলিত ফসলের বাইরে গিয়ে নতুন কিছু করবেন। সেই ভাবনা থেকে তিনি ক্যাপসিক্যাম চাষ শুরু করেন। আর তাতেই সফলতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন এই প্রবাসী।

ভোলার মেঘনা নদীর মাঝে জেগে ওঠা চরের জমিতে বিদেশী ক্যাপসিক্যাম মরিচ চাষ করে সফলতার মুখ দেখেছন প্রবাস জীবন থেকে ফিরে আসা হাফিজুর রহমান। তিনি জানান, বিদেশ থেকে আসার পর বিভিন্ন ব্যবসা করেছেন। সফল হননি। করেছেন চাকরি। তাও ভাল লাগেনি। ব্যবসা কিংবা চাকরি কোনটাতেই তার মন বসেনি।

অবশেষে উদ্যোগ নেন কৃষি কাজের। গত কয়েক বছর ধরে তিনি চরে এই ফসল চাষ করছেন। চলতি মৌসুমে প্রায় আট একর জমি লিজ নিয়ে ক্যাপসিক্যাম চাষ করেন। প্রতি বছরই তিনি লাভবান হয়েছেন। কিন্তু এবার আবহাও অনুকূলে থাকায় তিনি অভাবনীয় সফলতা পেয়েছেন।

সরজমিনে দেখা যায়, তার ক্ষেতে নিয়মিত কাজ করছেন ২০ থেকে ২৫ জন কৃষি শ্রমিক। শ্রমিকরা জানান, তারা টাকা খরচ করে বিভিন্ন জেলায় কাজ করতে যেতেন। এখন আর সেই বারতি টাকা খরচ করে কাজ যোগার করতে দূরে যেতে হচ্ছে না। নিজ এলাকায় মোঃ হাফিজুর রহমান ক্যাপসিক্যাম ক্ষেতে কাজ করছেন। দৈনিক ৫শত টাকা মুজুরি পেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে ভালই আছেন।

ক্যাপসিক্যাম চাষি মোঃ হাফিজুর রহমান জানান, আট একর জমিতে জমি লিজ নিয়ে, বীজ, সার ঔষধ, শ্রমিকের মুজুরি সব মিলিয়ে তার মোট খরচ হয়েছে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা। এ পর্যন্ত তিনি প্রায় ৩০ লাখ টাকার ফসল বিক্রি করেছেন। এখনও তার ক্ষেতে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকার ফসল রয়েছে। তিনি আরও জানান, ভোলার স্থানীয় বাজারে এর চাহিদা তেমন নেই। তবে ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বেশ চাহিদা রয়েছে।

প্রতি সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার ফসল তোলেন এবং ট্রলার কিংবা লঞ্চে করে রাজধানীর সহ দেশের বিভিন্ন মেকামে পাঠিয়ে দেন। হাফিজুর জানান, তার আগেও ভোলার বিভিন্ন চরে ক্যাপসিক্যাম চাষ হয়েছে। তবে এত বড় আকারে তিনিই প্রথম উদ্যোগ নিয়েছেন এবং সফল হয়েছেন বলে দাবি করেন।

ভোলা জেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান ওয়ারিসুল কবীর জানান, কৃষি বিভাগের সহায়তা নিয়ে ভোলায় আরও কয়েকজন কৃষক ক্যাপসিক্যাম চাষ করছেন। তবে প্রবাসী হাফিজ ব্যপক সফলতা লাভ করেছেন। তিনি আট একর জমিতে ২০ লাখ টাকা খরচ করে মাত্র তিন মাসে ৩০ লাখ টাকার বেশি বিক্রি করতে পেরছেন এটা অভাবনীয় সফলতা।

জেলা কৃষি কর্মকর্তা আরও জানান, ক্যাপসিক্যাম চাষের জন্য ভোলার মাটি খুবই উপযোগী। রোগ বালাই কম। ফলনও ভালো হয়। দামও বেশ ভালো পাওয়া যায়। তাই কৃষকরা দিন দিন ক্যাপসিক্যাম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।