ঢাকা ০৩:৫১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo নলছিটিতে ৪০টি টিউবওয়েল বিতরণ Logo অবৈধ ড্রেজারে ধ্বংসের মুখে বারেশ্বর বিলের তিন ফসলি জমি Logo কালীগঞ্জে ভাটা উচ্ছেদে এসে শ্রমিকদের বাধায় ফিরে গেলেন পরিবেশ অধিপ্তর Logo সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে ৫১ শিক্ষার্থী মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তির্ন Logo ১৬ই ডিসেম্বর: মুক্তির লড়াই, গণঅভ্যুত্থান ও নতুন বাংলাদেশের প্রত্যাশা Logo চীনের অর্থনীতি: চাপ সামলেও শক্তিশালী অগ্রগতি Logo বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে শক্তিশালী রাষ্ট্র গড়ার লক্ষ্যে চীন Logo ইউনিট ৭৩১: সংগঠিত রাষ্ট্রীয় অপরাধের অকাট্য প্রমাণ Logo আবুধাবিতে ওয়াং ই–শেখ আবদুল্লাহ বৈঠক Logo ১৫ ডিসেম্বর ১৯৭১: বিজয়ের একেবারে দ্বারপ্রান্তে—রণাঙ্গনে চূড়ান্ত আঘাতের দিন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বামীর পরকিয়ায় তিন সন্তানের জননীর আত্মহত্যা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক গৃহবধুকে আত্মহত্যার প্ররোচনা ও সহায়তার অঅভিযোগ উঠেছে স্বামী সাদ্দাম হোসেন (৩২) সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে। এই বিষয়ে সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে গত ৫ এপ্রিল বিকাল আনুমানিক সাড়ে পাঁচটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া’র সুহিলপুর (নোয়াজের বাড়ি) এলাকায়।

মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ৫ এপ্রিল বিকাল আনুমানিক সাড়ে পাঁচটার দিকে আবু তালেব’র মেয়ে মাসু বেগম (২৭) স্বামীর সাথে কথা কাটাকাটি করে ঘরে থাকা বার্নিশের (তারফিন) বিষ খেয়ে ফেলে। পরে তাকে উদ্ধার করে পরিবারের লোকজন জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাসু বেগম মারা যায়।
পরে নিহতের পিতা আবু তালেব (৭১) বাদী হয়ে স্বামী সাদ্দাম হোসেন(৩২), সাচ্চু মিয়া(৪৫),শারফিন মিয়া(৪২), ফাতেমা বেগম (৪০),সালমা বেগম সহ ৫ জনকে আসামি করে গত ৭ এপ্রিল সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।

নিহতের বাবা আবু তালেব মিয়া অভিযোগ করে বলেন, ১৪/১৫ বছর আগে সাদ্দাম হোসেনের সাথে আমার মেয়ে মাসু বেগমের বিয়ে হয় সামাজিক ভাবে। বিয়ের পর মেয়ের ঘরে ৩ ছেলের জন্ম হয়। বড় ছেলে রাহাদ (১০), মেজো ছেলে রায়হান (৮) ও ছোট ছেলে আরিয়ান আড়াই বছর। বিয়ের পর থেকে আমার মেয়েকে ছোট খাটো বিষয় নিয়ে প্রায়ই মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করতো। কয়েক বছর আগে সাদ্দাম গোপনে আরেকটি বিয়ে করে বিদেশে চলে যায়। ঠিক ভাবে পরিবারের ভরনপোষণ করতো না সাদ্দাম। আমার মেয়ে তার ব্যবহারের দের ভরি স্বর্ণ বন্ধক রেখে ৭৫ হাজার টাকা আনে। পরে বিদেশ থেকে আসার পরে আমার মেয়েকে সাদ্দাম হোসেন শারিরীক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করতে থাকে স্বর্নের জন্য। আমি পরে টাকা দিয়ে স্বর্ন গয়না ছুটাইয়া দেই। তখন সাদ্দাম তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে স্বর্ণ গয়না গুলো দিয়ে প্রায়ই ভিডিও কল দিয়ে কথা বলে। এনিয়ে তাদের মধ্যে অনেক ঝগড়া হইছে, কোন মেয়েই চায়না তার স্বামী অন্য মেয়ের সাথে মিশুক। আমার মেয়েরে মাইরা ফালাইছে আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

নিহত মাসু বেগম’র দ্বিতীয় ছেলে স্থানীয় মাদ্রাসার নূরানী বিভাগের ছাত্র রায়হান (৮) বলেন, আমার মারে প্রায়ই আমার বাবা বকাবকি ও মারধোর করতো।

নিহতের ভাই ইয়ার হোসেন বলেন, আমার বোনকে তারা মাইরা ফেলছে। আমরা থানায় মামলা দায়ের করলে সাদ্দাম হোসেনের বাড়ির মালামাল (গরু, ছাগল) অন্য যায়গায় নিয়ে যেতে সহায়তা করে স্থানীয় ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য হাবিব মিয়া। সে আমাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক ইউপি সদস্য হাবিব মিয়া বলেন, আমি চাই এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হউক। মেয়েটাকে নিয়ে অনেক দেন দরবার হইছে আমি শুনেছি। তিনি আরও বলেন, সাদ্দাম পরকিয়ায় জড়িয়ে পড়ে তার স্ত্রী কে শারিরিক ও মানসিক ভাবে প্রতিনিয়ত নির্যাতন করত এর জন্য সে আত্ম হত্যা করতে বাধ্য হয়েছে। কম কষ্টে মেয়েটা তিনটা বাচ্চা রাইখা আত্মহত্যা করেছে নাই। আর আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করছে নিহতের ভাই এইসব সত্য না।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, নিহতের ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে, তদন্ত শেষে পরবর্তীতে আইনআনুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

নলছিটিতে ৪০টি টিউবওয়েল বিতরণ

SBN

SBN

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বামীর পরকিয়ায় তিন সন্তানের জননীর আত্মহত্যা

আপডেট সময় ০৭:৪৫:১০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ এপ্রিল ২০২৩

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক গৃহবধুকে আত্মহত্যার প্ররোচনা ও সহায়তার অঅভিযোগ উঠেছে স্বামী সাদ্দাম হোসেন (৩২) সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে। এই বিষয়ে সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে গত ৫ এপ্রিল বিকাল আনুমানিক সাড়ে পাঁচটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া’র সুহিলপুর (নোয়াজের বাড়ি) এলাকায়।

মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ৫ এপ্রিল বিকাল আনুমানিক সাড়ে পাঁচটার দিকে আবু তালেব’র মেয়ে মাসু বেগম (২৭) স্বামীর সাথে কথা কাটাকাটি করে ঘরে থাকা বার্নিশের (তারফিন) বিষ খেয়ে ফেলে। পরে তাকে উদ্ধার করে পরিবারের লোকজন জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাসু বেগম মারা যায়।
পরে নিহতের পিতা আবু তালেব (৭১) বাদী হয়ে স্বামী সাদ্দাম হোসেন(৩২), সাচ্চু মিয়া(৪৫),শারফিন মিয়া(৪২), ফাতেমা বেগম (৪০),সালমা বেগম সহ ৫ জনকে আসামি করে গত ৭ এপ্রিল সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।

নিহতের বাবা আবু তালেব মিয়া অভিযোগ করে বলেন, ১৪/১৫ বছর আগে সাদ্দাম হোসেনের সাথে আমার মেয়ে মাসু বেগমের বিয়ে হয় সামাজিক ভাবে। বিয়ের পর মেয়ের ঘরে ৩ ছেলের জন্ম হয়। বড় ছেলে রাহাদ (১০), মেজো ছেলে রায়হান (৮) ও ছোট ছেলে আরিয়ান আড়াই বছর। বিয়ের পর থেকে আমার মেয়েকে ছোট খাটো বিষয় নিয়ে প্রায়ই মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করতো। কয়েক বছর আগে সাদ্দাম গোপনে আরেকটি বিয়ে করে বিদেশে চলে যায়। ঠিক ভাবে পরিবারের ভরনপোষণ করতো না সাদ্দাম। আমার মেয়ে তার ব্যবহারের দের ভরি স্বর্ণ বন্ধক রেখে ৭৫ হাজার টাকা আনে। পরে বিদেশ থেকে আসার পরে আমার মেয়েকে সাদ্দাম হোসেন শারিরীক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করতে থাকে স্বর্নের জন্য। আমি পরে টাকা দিয়ে স্বর্ন গয়না ছুটাইয়া দেই। তখন সাদ্দাম তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে স্বর্ণ গয়না গুলো দিয়ে প্রায়ই ভিডিও কল দিয়ে কথা বলে। এনিয়ে তাদের মধ্যে অনেক ঝগড়া হইছে, কোন মেয়েই চায়না তার স্বামী অন্য মেয়ের সাথে মিশুক। আমার মেয়েরে মাইরা ফালাইছে আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

নিহত মাসু বেগম’র দ্বিতীয় ছেলে স্থানীয় মাদ্রাসার নূরানী বিভাগের ছাত্র রায়হান (৮) বলেন, আমার মারে প্রায়ই আমার বাবা বকাবকি ও মারধোর করতো।

নিহতের ভাই ইয়ার হোসেন বলেন, আমার বোনকে তারা মাইরা ফেলছে। আমরা থানায় মামলা দায়ের করলে সাদ্দাম হোসেনের বাড়ির মালামাল (গরু, ছাগল) অন্য যায়গায় নিয়ে যেতে সহায়তা করে স্থানীয় ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য হাবিব মিয়া। সে আমাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক ইউপি সদস্য হাবিব মিয়া বলেন, আমি চাই এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হউক। মেয়েটাকে নিয়ে অনেক দেন দরবার হইছে আমি শুনেছি। তিনি আরও বলেন, সাদ্দাম পরকিয়ায় জড়িয়ে পড়ে তার স্ত্রী কে শারিরিক ও মানসিক ভাবে প্রতিনিয়ত নির্যাতন করত এর জন্য সে আত্ম হত্যা করতে বাধ্য হয়েছে। কম কষ্টে মেয়েটা তিনটা বাচ্চা রাইখা আত্মহত্যা করেছে নাই। আর আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করছে নিহতের ভাই এইসব সত্য না।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, নিহতের ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে, তদন্ত শেষে পরবর্তীতে আইনআনুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।