ঢাকা ০৭:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫, ২৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ (ভিডিও) Logo ঝিনাইগাতীতে ১৩৮৬ বোতল ভারতীয় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মদ উদ্ধার Logo দুই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের নেতা নির্বাচিত Logo সকল মানুষের জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে হবে -মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা Logo রূপসায় রবীন্দ্র স্মৃতি সংগ্রহশালায় সমাপনী দিনে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান Logo কালীগঞ্জে বিশেষ অভিযানে পৌর প্যানেল মেয়রসহ আ’লীগের ১০ নেতাকর্মী আটক Logo কটিয়াদীতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ ২০২৫ অনুষ্ঠিত Logo খুলনায় সংবাদ সংগ্রহে বাধা ও সাংবাদিকের উপর হামলার অভিযোগ Logo বিশ্বব্যাপী যুদ্ধবন্ধের দাবিতে বরুড়া মানববন্ধন Logo শেরপুরে মাদ্রাসার ছাত্র অপহরণ ও হত্যা চেষ্টার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

কটিয়াদীতে জুতা সেলাই করে সন্তানদের নিয়ে মায়া রানীর বেঁচে থাকার লড়াই

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার পূর্ব চারিপাড়া গ্রামের বাসিন্দার মায়া রানী (৩২)। চার সন্তানের জননী। নিজেদের জমি না থাকায় অন্যের জমিতে থাকা একটি পরিত্যক্ত ঘরে থাকেন তারা। মায়া রানীর স্বামী যোগেশ রবিদাস মুচির কাজ করতেন। মাস তিনেক আগে মৃত্যু হয় তার। স্বামী মারা গেলে শিশু সন্তানদেরকে নিয়ে মহাবিপদে পড়েন মায়া রানী। অভাবের সংসারে খেয়ে না খেয়ে চলছিল তাদের জীবন। কিন্তু পেটের জ্বালা যে বড় জ্বালা। তাই বাধ্য হয়েই সংসার চালাতে স্বামীর পথ অনুসরণ করে জুতা সেলাই কাজ শুরু করেন তিনি। উপজেলার একমাত্র নারী মুচি তিনি। জীবন সংসারে হচ্ছেন অসম লড়াইয়ে মুখোমুখি। চার শিশুর মুখে ভাত তুলে দিতে মাঝে মাঝেই নিজে এক বেলা খেয়ে কাটান মায়া রানী। এত কষ্ট করে জীবন চললেও তার ভাগ্যে জোটেনি সরকারি বিধবা ভাতা। ঠাঁই হয়নি সরকারি কোন আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে।

জানা গেছে, মায়া রানীর চার সন্তানের মধ্যে বড় মেয়ে লিপি রানী (১৪) বাড়িতে থাকেন। ছেলে সাধন (৯) ও মেয়ে চৈতী রানী (৭) মাকে জুতা সেলাই কাজে সহযোগিতা করে। সব থেকে ছোট মেয়ে বৈশাখী রানী ৫ বছরের। বড় মেয়ে তৃতীয় শ্রেণি ও ছেলে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন। অভাবের সংসারে ছেলে মেয়েদের পড়ালেখা করানো সম্ভব হয় নাই। ভারি কাজ করার মত শক্তি ও সামর্থ্য নাই মায়া রানীর। তার ওপর অসুখ- বিসুখ লেগেই থাকে। স্বামীর মৃত্যুর পর সন্তানদের নিয়ে কটিয়াদী সরকারি কলেজ সংলগ্ন রাস্তার পাশে তার স্বামী যেখানে বসে জুতা সেলাই করতেন সেখানেই বসে কাজ করেন তিনি। স্বামীর জীবদ্দশায় আশ্রয়ণের একটি ঘরের জন্য চেষ্টা করেছিলেন। অদৃশ্য কারণে তাও ভাগ্যে জুটেনি। ভূমিহীন ও গৃহহীন এই পরিবারটি অন্যের জমিতে থাকা একটি পরিত্যক্ত ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। যে কোনও দিন তাদেরকে ঘরটি ছাড়তে হতে পারে। যদিও সরকার ইতোমধ্যে কটিয়াদী উপজেলাকে গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা করেছেন।

মায়া রানী বলেন, হঠাৎ পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি স্বামীকে হারিয়ে চোখে মুখে অন্ধকার দেখা শুরু করি। ক্ষুধার তাড়নায় স্বামীর রেখে যাওয়া যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি দিয়ে মুচির কাজই শুরু করি। প্রথম তেমন কাজ না পারলেও এখন শিখে নিয়েছি। সেলাই- কালি করে কোনও কোনও দিন ২০০ থেকে ৩০০ টাকা আয় হয়। আবার কোনও দিন ১০০ টাকাও আয় হয় না। এই টাকা দিয়ে ৫ জনের সংসার আর চলছে না। খেয়ে না খেয়ে চলছে আমাদের জীবন। এমন পরিস্থিতিতে তিনি চাইলেন সরকারি, বেসরকারি, সমাজের বিত্তবান মানুষের আর্থিক সহযোগিতা ও মাথা গোঁজার ঠাঁই।

প্রতিবেশী হাসনা জাহান বলেন, মায়া রানী খুবই অসহায় নারী। সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাওয়া তার জন্য একান্ত জরুরি।

এ বিষয়ে আচমিতা ইউপি চেয়ারম্যান মতিউর রহমান বলেন, আশ্রয়ণের ঘরের তালিকা পূর্ববর্তী চেয়ারম্যানের সময় হয়েছে। কেন এই পরিবারটি তালিকাভুক্ত হয়নি বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে বিধবা ভাতার ব্যাপারে তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার খানজাদা শাহরিয়ার বিন মান্নান বলেন, ঘরের তালিকা থেকে মায়া রানীর নাম তখন কী কারণে বাদ পড়েছে জানি না। তবে আশ্রয়ণের ঘর বরাদ্দ নিয়েছেন এমন অনেকে সেই ঘরে বসবাস করেন না শুনেছি। এমন কাউকে পাওয়া গেলে তার বরাদ্দ বাতিল করে মায়া রানীর নামে বরাদ্দ দেয়ার চেষ্টা করবো।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ (ভিডিও)

SBN

SBN

কটিয়াদীতে জুতা সেলাই করে সন্তানদের নিয়ে মায়া রানীর বেঁচে থাকার লড়াই

আপডেট সময় ১০:০৮:২৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৬ মে ২০২৩

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার পূর্ব চারিপাড়া গ্রামের বাসিন্দার মায়া রানী (৩২)। চার সন্তানের জননী। নিজেদের জমি না থাকায় অন্যের জমিতে থাকা একটি পরিত্যক্ত ঘরে থাকেন তারা। মায়া রানীর স্বামী যোগেশ রবিদাস মুচির কাজ করতেন। মাস তিনেক আগে মৃত্যু হয় তার। স্বামী মারা গেলে শিশু সন্তানদেরকে নিয়ে মহাবিপদে পড়েন মায়া রানী। অভাবের সংসারে খেয়ে না খেয়ে চলছিল তাদের জীবন। কিন্তু পেটের জ্বালা যে বড় জ্বালা। তাই বাধ্য হয়েই সংসার চালাতে স্বামীর পথ অনুসরণ করে জুতা সেলাই কাজ শুরু করেন তিনি। উপজেলার একমাত্র নারী মুচি তিনি। জীবন সংসারে হচ্ছেন অসম লড়াইয়ে মুখোমুখি। চার শিশুর মুখে ভাত তুলে দিতে মাঝে মাঝেই নিজে এক বেলা খেয়ে কাটান মায়া রানী। এত কষ্ট করে জীবন চললেও তার ভাগ্যে জোটেনি সরকারি বিধবা ভাতা। ঠাঁই হয়নি সরকারি কোন আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে।

জানা গেছে, মায়া রানীর চার সন্তানের মধ্যে বড় মেয়ে লিপি রানী (১৪) বাড়িতে থাকেন। ছেলে সাধন (৯) ও মেয়ে চৈতী রানী (৭) মাকে জুতা সেলাই কাজে সহযোগিতা করে। সব থেকে ছোট মেয়ে বৈশাখী রানী ৫ বছরের। বড় মেয়ে তৃতীয় শ্রেণি ও ছেলে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন। অভাবের সংসারে ছেলে মেয়েদের পড়ালেখা করানো সম্ভব হয় নাই। ভারি কাজ করার মত শক্তি ও সামর্থ্য নাই মায়া রানীর। তার ওপর অসুখ- বিসুখ লেগেই থাকে। স্বামীর মৃত্যুর পর সন্তানদের নিয়ে কটিয়াদী সরকারি কলেজ সংলগ্ন রাস্তার পাশে তার স্বামী যেখানে বসে জুতা সেলাই করতেন সেখানেই বসে কাজ করেন তিনি। স্বামীর জীবদ্দশায় আশ্রয়ণের একটি ঘরের জন্য চেষ্টা করেছিলেন। অদৃশ্য কারণে তাও ভাগ্যে জুটেনি। ভূমিহীন ও গৃহহীন এই পরিবারটি অন্যের জমিতে থাকা একটি পরিত্যক্ত ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। যে কোনও দিন তাদেরকে ঘরটি ছাড়তে হতে পারে। যদিও সরকার ইতোমধ্যে কটিয়াদী উপজেলাকে গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা করেছেন।

মায়া রানী বলেন, হঠাৎ পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি স্বামীকে হারিয়ে চোখে মুখে অন্ধকার দেখা শুরু করি। ক্ষুধার তাড়নায় স্বামীর রেখে যাওয়া যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি দিয়ে মুচির কাজই শুরু করি। প্রথম তেমন কাজ না পারলেও এখন শিখে নিয়েছি। সেলাই- কালি করে কোনও কোনও দিন ২০০ থেকে ৩০০ টাকা আয় হয়। আবার কোনও দিন ১০০ টাকাও আয় হয় না। এই টাকা দিয়ে ৫ জনের সংসার আর চলছে না। খেয়ে না খেয়ে চলছে আমাদের জীবন। এমন পরিস্থিতিতে তিনি চাইলেন সরকারি, বেসরকারি, সমাজের বিত্তবান মানুষের আর্থিক সহযোগিতা ও মাথা গোঁজার ঠাঁই।

প্রতিবেশী হাসনা জাহান বলেন, মায়া রানী খুবই অসহায় নারী। সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাওয়া তার জন্য একান্ত জরুরি।

এ বিষয়ে আচমিতা ইউপি চেয়ারম্যান মতিউর রহমান বলেন, আশ্রয়ণের ঘরের তালিকা পূর্ববর্তী চেয়ারম্যানের সময় হয়েছে। কেন এই পরিবারটি তালিকাভুক্ত হয়নি বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে বিধবা ভাতার ব্যাপারে তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার খানজাদা শাহরিয়ার বিন মান্নান বলেন, ঘরের তালিকা থেকে মায়া রানীর নাম তখন কী কারণে বাদ পড়েছে জানি না। তবে আশ্রয়ণের ঘর বরাদ্দ নিয়েছেন এমন অনেকে সেই ঘরে বসবাস করেন না শুনেছি। এমন কাউকে পাওয়া গেলে তার বরাদ্দ বাতিল করে মায়া রানীর নামে বরাদ্দ দেয়ার চেষ্টা করবো।


Fatal error: Uncaught wfWAFStorageFileException: Unable to save temporary file for atomic writing. in /home/bestweb/public_html/wp-content/plugins/wordfence/vendor/wordfence/wf-waf/src/lib/storage/file.php:34 Stack trace: #0 /home/bestweb/public_html/wp-content/plugins/wordfence/vendor/wordfence/wf-waf/src/lib/storage/file.php(658): wfWAFStorageFile::atomicFilePutContents('/home/bestweb/p...', '<?php exit('Acc...') #1 [internal function]: wfWAFStorageFile->saveConfig('transient') #2 {main} thrown in /home/bestweb/public_html/wp-content/plugins/wordfence/vendor/wordfence/wf-waf/src/lib/storage/file.php on line 34