ঢাকা ১১:৪৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo অভ্যন্তরীণ চাহিদা সম্প্রসারণে চীনের কৌশল: সি চিন পিংয়ের প্রবন্ধে বিশ্লেষণ Logo চীনে আমদানি-রপ্তানিতে গতি, অর্থনীতিতে ইতিবাচক সংকেত Logo রিয়াদে চীন-সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের কৌশলগত সংলাপ Logo ১৭ ডিসেম্বর ১৯৭১: বিজয়ের পরদিন, রাষ্ট্র গঠন ও যুদ্ধবিধ্বস্ত জাতির পুনর্গঠনের প্রথম দিন Logo সুবিদাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ Logo মহান বিজয় দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ঢাকা প্রেসক্লাবের শ্রদ্ধা নিবেদন Logo কটিয়াদীতে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে শহীদ স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধাঞ্জলি Logo বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে জনসাধারণের জন্য ৭ টি জাহাজ উন্মুক্ত করেছে কোস্ট গার্ড Logo বরুড়ায় বিজয় দিবস উপলক্ষে মহিলা দলের আলোচনা সভা ও র‍্যালি অনুষ্ঠিত Logo সুবিধাবঞ্চিত ও ঝরে পড়া শিশুদের নিয়ে সিড ফাউন্ডেশনের বিজয় দিবস উদযাপন

মাছ ধরায় ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা ঘাটে ফিরছে জেলেরা

কক্সবাজার প্রতিনিধিঃ সাগরে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার কারণে কক্সবাজার উপকূলে ফিরতে শুরু করেছে মাছ ধরার ট্রলারগুলো। এরই মধ্যে উপকূলে নোঙর করেছে শত শত ট্রলার। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা, বৈরি আবহাওয়ার প্রভাব ও দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে টিকে থাকতে এই আইনের সংশোধন আনতে সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন জেলেরা।

শনিবার (২০ মে) দুপুর সাড়ে ১২টার সময় নাজিরারটেক মাছ ঘাটে মৎস্য ব্যবসায়ী ও ট্রলার মালিকরা বলছেন, নিষেধাজ্ঞার সময় ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করে মাছ শিকার করে, তাই তাদের ঠেকাতে সাগরে নজরদারি বাড়ানো দরকার।

দেশের মৎস্য সম্পদের সুরক্ষা ও মাছের বংশবিস্তারে সাগরে মাছ ধরার ওপর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে আজ। শুক্রবার মধ্যরাত থেকে শুরু হতে যাওয়া এই নিষেধাজ্ঞা আগামী ২৩ জুলাই পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।

জানা যায়, ২০১৫ সাল থেকে বঙ্গোপসাগরে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রলারে প্রতিবছর ৬৫ দিন মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা চালু করা হয় পরে ২০১৯ সালে সব ধরনের নৌযানকে এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়। শুরু থেকেই জেলেরা এই নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করলেও মৎস্য বিভাগ বলছে, নিষেধাজ্ঞার কারণে সামুদ্রিক মাছের পরিমাণ বাড়ছে তবে জেলেদের এই সময়টাতে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে ভবিষ্যতে আরও সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হবে।

সকালে বাঁকখালী নদীস্থ ফিশারিঘাটসহ আশেপাশের এলাকাগুলো ঘুরে দেখা যায়, সরকারি ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা, তাই সাগরে মাছ শিকার না করে একের পর এক ট্রলার ফিরছে উপকূলে। এসব ট্রলার নোঙর করছে বাঁকখালী নদীর তীরে। তবে আগত জেলেদের চোখে-মুখে হতাশার ছাপ। কারণ অনেক জেলেরই ঋণের বোঝা মাথায়। জেলেদের দাবি, নিষেধাজ্ঞার সময় খাদ্য সহায়তার পরিমাণ বৃদ্ধিসহ আর্থিক সহায়তা প্রদানের।

গভীর সমুদ্র থেকে কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের জেটি ঘাটে ফেরা এফবি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি নুর মোহাম্মদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র সময়ে ৭ দিন ছিলাম তীরে। তার পরে সাগরে ছিলাম ৪ দিন আবার চলে আসছি। ১ লাখ টাকা খরচ করে ৪০ হাজার টাকা মাছ বিক্রি করেছি। সরকার আমাদের ৮৬ কেজি চাল দেয় কিন্তু এই বাজারে শুধু চাল দিয়ে সংসার চলে?
আরেক জেলে ছৈয়দ আলম বলেন, সরকার অবরোধ দেয় তা আমরা মানি এবং উপকারও পাচ্ছি। তবে ৬৫ দিনের অবরোধে জেলেরা ঋণের বোঝা বাড়াচ্ছে অন্যদিকে ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করে মাছ শিকার করে নিচ্ছে। আমাদের দাবি, এই সকল বিষয়ে সরকার যেন নজর দেয়।

আর নিষেধাজ্ঞাকালীন ভারতীয় জেলেদের সমুদ্রে মাছ ধরা রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানালেন মৎস্য ব্যবসায়ীরা। মৎস্য ব্যবসায়ী শামীম আহমেদ বলেন, মৎস্য ভিত্তিক অর্থনীতির সুরক্ষায় এসব জেলেদের পেশা পরিবর্তন রোধে খাদ্য সহায়তার পরিমাণ বৃদ্ধিসহ আর্থিক সহায়তা প্রদানের। এছাড়াও নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে ভারতীয় জেলেদের আগ্রাসন রোধেও কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার।

অন্যদিকে জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির দাবি, ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা সংশোধন এবং জেলেদের জন্য ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবস্থা করা।

জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, নিষেধাজ্ঞার কারণে এরই মধ্যে উপকূলে শত শত মাছ ধরার ট্রলার উপকূলে ফিরেছে। বাকি ট্রলারগুলোও শনিবার সকালের মধ্যে ফিরে আসবে। সরকারের দেওয়া সকল আইন জেলেরা মেনে আসছে। তবে আমাদের দাবি, যদি সরকার এই পেশাকে টিকিয়ে রাখতে চায় তাহলে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা সংশোধন এবং জেলেদের জন্য ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে তা-না হলে দিনদিন এই পেশা বিলীন হতে থাকবে।

এদিকে প্রশাসন জানিয়েছে, সমুদ্র সম্পদ রক্ষা ও বৃদ্ধিতে সরকার যে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তা সঠিকভাবে বাস্তবায়নে নৌ-পুলিশ, কোস্ট-গার্ড, নৌবাহিনীসহ সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সার্বিকভাবে তৎপর থাকবে। জেলেদেরকে পর্যাপ্ত সচেতন করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা সময়ের মধ্যে কেউ মাছ শিকারে গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কক্সবাজারে নিবন্ধিত নৌযান রয়েছে ৫ হাজার ১১৩টি। আর ১ লাখের বেশি জেলে থাকলেও নিবন্ধনের আওতায় এসেছে ৬৫ হাজারের মতো।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

অভ্যন্তরীণ চাহিদা সম্প্রসারণে চীনের কৌশল: সি চিন পিংয়ের প্রবন্ধে বিশ্লেষণ

SBN

SBN

মাছ ধরায় ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা ঘাটে ফিরছে জেলেরা

আপডেট সময় ০৭:৪৫:৫৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ মে ২০২৩

কক্সবাজার প্রতিনিধিঃ সাগরে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার কারণে কক্সবাজার উপকূলে ফিরতে শুরু করেছে মাছ ধরার ট্রলারগুলো। এরই মধ্যে উপকূলে নোঙর করেছে শত শত ট্রলার। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা, বৈরি আবহাওয়ার প্রভাব ও দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে টিকে থাকতে এই আইনের সংশোধন আনতে সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন জেলেরা।

শনিবার (২০ মে) দুপুর সাড়ে ১২টার সময় নাজিরারটেক মাছ ঘাটে মৎস্য ব্যবসায়ী ও ট্রলার মালিকরা বলছেন, নিষেধাজ্ঞার সময় ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করে মাছ শিকার করে, তাই তাদের ঠেকাতে সাগরে নজরদারি বাড়ানো দরকার।

দেশের মৎস্য সম্পদের সুরক্ষা ও মাছের বংশবিস্তারে সাগরে মাছ ধরার ওপর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে আজ। শুক্রবার মধ্যরাত থেকে শুরু হতে যাওয়া এই নিষেধাজ্ঞা আগামী ২৩ জুলাই পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।

জানা যায়, ২০১৫ সাল থেকে বঙ্গোপসাগরে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রলারে প্রতিবছর ৬৫ দিন মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা চালু করা হয় পরে ২০১৯ সালে সব ধরনের নৌযানকে এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়। শুরু থেকেই জেলেরা এই নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করলেও মৎস্য বিভাগ বলছে, নিষেধাজ্ঞার কারণে সামুদ্রিক মাছের পরিমাণ বাড়ছে তবে জেলেদের এই সময়টাতে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে ভবিষ্যতে আরও সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হবে।

সকালে বাঁকখালী নদীস্থ ফিশারিঘাটসহ আশেপাশের এলাকাগুলো ঘুরে দেখা যায়, সরকারি ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা, তাই সাগরে মাছ শিকার না করে একের পর এক ট্রলার ফিরছে উপকূলে। এসব ট্রলার নোঙর করছে বাঁকখালী নদীর তীরে। তবে আগত জেলেদের চোখে-মুখে হতাশার ছাপ। কারণ অনেক জেলেরই ঋণের বোঝা মাথায়। জেলেদের দাবি, নিষেধাজ্ঞার সময় খাদ্য সহায়তার পরিমাণ বৃদ্ধিসহ আর্থিক সহায়তা প্রদানের।

গভীর সমুদ্র থেকে কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের জেটি ঘাটে ফেরা এফবি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি নুর মোহাম্মদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র সময়ে ৭ দিন ছিলাম তীরে। তার পরে সাগরে ছিলাম ৪ দিন আবার চলে আসছি। ১ লাখ টাকা খরচ করে ৪০ হাজার টাকা মাছ বিক্রি করেছি। সরকার আমাদের ৮৬ কেজি চাল দেয় কিন্তু এই বাজারে শুধু চাল দিয়ে সংসার চলে?
আরেক জেলে ছৈয়দ আলম বলেন, সরকার অবরোধ দেয় তা আমরা মানি এবং উপকারও পাচ্ছি। তবে ৬৫ দিনের অবরোধে জেলেরা ঋণের বোঝা বাড়াচ্ছে অন্যদিকে ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করে মাছ শিকার করে নিচ্ছে। আমাদের দাবি, এই সকল বিষয়ে সরকার যেন নজর দেয়।

আর নিষেধাজ্ঞাকালীন ভারতীয় জেলেদের সমুদ্রে মাছ ধরা রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানালেন মৎস্য ব্যবসায়ীরা। মৎস্য ব্যবসায়ী শামীম আহমেদ বলেন, মৎস্য ভিত্তিক অর্থনীতির সুরক্ষায় এসব জেলেদের পেশা পরিবর্তন রোধে খাদ্য সহায়তার পরিমাণ বৃদ্ধিসহ আর্থিক সহায়তা প্রদানের। এছাড়াও নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে ভারতীয় জেলেদের আগ্রাসন রোধেও কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার।

অন্যদিকে জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির দাবি, ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা সংশোধন এবং জেলেদের জন্য ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবস্থা করা।

জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, নিষেধাজ্ঞার কারণে এরই মধ্যে উপকূলে শত শত মাছ ধরার ট্রলার উপকূলে ফিরেছে। বাকি ট্রলারগুলোও শনিবার সকালের মধ্যে ফিরে আসবে। সরকারের দেওয়া সকল আইন জেলেরা মেনে আসছে। তবে আমাদের দাবি, যদি সরকার এই পেশাকে টিকিয়ে রাখতে চায় তাহলে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা সংশোধন এবং জেলেদের জন্য ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে তা-না হলে দিনদিন এই পেশা বিলীন হতে থাকবে।

এদিকে প্রশাসন জানিয়েছে, সমুদ্র সম্পদ রক্ষা ও বৃদ্ধিতে সরকার যে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তা সঠিকভাবে বাস্তবায়নে নৌ-পুলিশ, কোস্ট-গার্ড, নৌবাহিনীসহ সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সার্বিকভাবে তৎপর থাকবে। জেলেদেরকে পর্যাপ্ত সচেতন করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা সময়ের মধ্যে কেউ মাছ শিকারে গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কক্সবাজারে নিবন্ধিত নৌযান রয়েছে ৫ হাজার ১১৩টি। আর ১ লাখের বেশি জেলে থাকলেও নিবন্ধনের আওতায় এসেছে ৬৫ হাজারের মতো।