
যশোর জেলা প্রতিনিধি: যশোরের কেশবপুরের পল্লীতে এক কিশোরীকে ধর্ষণ ও অন্তঃসত্ত্বার দায়ে আল আমিন নামে এক শিশুকে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছে একটি আদালত। রোববার শিশু আদালতের (জেলা ও দায়রা জজ) বিচারক মো. গোলাম কবির এক রায়ে এ সাজা দিয়েছেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আল আমিন কেশবপুরের শ্রীফলা গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে। সাজাপ্রাপ্ত আল আমিন পলাতক রয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্পেশাল পিপি সেতারা খাতুন।
রায়ের উল্লেখ করা হয়েছে, ভুমিষ্ট হওয়া কন্যা সন্তানের পিতৃত্ব পরিচয় অর্থাৎ জন্ম সনদে আল আমিনের নাম থাকবে। এছাড়া ওই কন্যার বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত তার ভরণ পোষণ ব্যয়ভার সরকার বহন করবে। যা আল আমিনের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি থেকে আদায় করতে হবে। যদি আল আমিনের সম্পত্তি না থাকে সেক্ষেত্রে ভবিষ্যতে সম্পত্তির মালিক হলে সে সময় সে সম্পত্তি থেকে ব্যয়ের টাকা আদায় করবে।রায়ে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, মামলার বিচারকালে ওই কিশোরীর কন্যা সন্তান ভুমিষ্ট হয়। পরে ওই সন্তান ও আল আমিনের ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে প্রমাণিত হয় কিশোরীর গর্ভের সন্তান আল আমিনের।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, কিশোরী ও আসামির বাড়ি পাশাপাশি। সেই সুবাদে উভয় উভয়ের বাড়িতে যাতায়াত করত। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আসামি আল আমিন বিভিন্ন সময়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর থেকে ২০২০ সালের ১০ মের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে তার সাথে শারিরীক সম্পর্ক করে। এরমধ্যে কিশোরীর শারীরিক পরিবর্তন দেখা দেয়ায় অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের নজরে আসে। আসামি আল আমিন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করেছে পরিবারের সদস্যদের জানায় ওই কিশোরী। ওই বছরের ১০ জুলাই আল আমিনের পরিবারের সদস্যদের কাছে ঘটনাটি জানিয়ে বিয়ের প্রস্তাব দেয়া হয়। তারা বিয়েতে রাজী না হওয়ায় ১৭ জুলাই আল আমিনকে আসামি করে ধর্ষণের অভিযোগে কেশবপুর থানায় মামলা করেন কিশোরীর পিতা। এ মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সুপ্রভাত মন্ডল ওই বছরের ৩১ অক্টোবর আসামি আল আমিনকে অভিযুক্ত করে শিশু হওয়ায় আদালতে অভিযোগপত্র দেন। দীর্ঘ সাক্ষী গ্রহণ শেষে আসামি আল আলামিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে ১০ বছর সশ্রম কারাদন্ড, ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৪ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন।