ঢাকা ০৯:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খুলনায় শীতের পিঠা বাজারে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়

নাহিদ জামান, খুলনা

শীত আসলেই পিঠার কথা মনে পড়ে। শীত কালীন পিঠার মধ্যে জনপ্রিয় পিঠা ভাপা ও চিতই। সন্ধ্যার সাথে সাথে হিমেল হাওয়ার প্রভাবে বেড়ে যায় শীতের তীব্রতা। আর এই সময় খুলনা শহরের ফুটপাতে পিঠা তৈরিতে ব্যাস্ত থাকেন মৌসুমি পিঠা বিক্রেতা।
তারা ফুটপাতের উপর অস্থায়ী কাঠের চুলা বসিয়ে পিঠা তৈরির জন্য চুলায় আগুন লাগিয়ে পিঠার সাজ বসান চুলায়। বড় ডিসে চাউলের গুড়া, পরিমান মত লবন ও পানি দিয়ে গুলিয়ে ওড়ং দিয়ে সাজের মধ্যে ঢেলে ঢাকুন দিয়ে ঢেকে দেয়। কিছু সময় পরে ঢাকুন সরালেই তৈরি হয়ে যায় চিতই পিঠা। এই পিঠা কে কাচি খোচা পিঠাও বলে থাকে। কারন এই পিঠা তৈরি হলে কাচি দিয়ে তুলে ডিসের ভেতর রাখা হয়। ক্রেতার মুখরোচকের জন্য পিঠার সাথে তৈরি করেন ধনিয়া পাতা, শুটকি, শরিষা, শুকনা মরিচ সহ বিভিন্ন রকম ভর্তা যা ক্রেতা আকর্ষনের জন্য যথেষ্ট।
চাউলের গুড়া ও খেজুরের গুড় ছোট সাজের ভেতর দিয়ে পাতলা কাপড়ে মুড়ে পাতিলের ওপর বসিয়ে আগুনের তাপে পানির বাষ্প উঠে তৈরি হয় ভাপা পিঠা।
খুলনার বিভিন্ন বাজারে, রাস্তার মোড়ে, পাকা রাস্তার পাশে ভ্রাম্যমাণ পিঠার দোকান ঘুরে দেখা যায়। সকাল ও সন্ধ্যায় পিঠা বিক্রি হয়। বিশেষ করে সন্ধ্যার সময় এই পিঠার চাহিদা বেশি।

প্রতিদিন বিকাল ৫টা থেকে রাত১২ পর্যন্ত চলে পিঠা বিক্রি। শীতের সকালে বা সন্ধ্যায় গরম গরম ধোঁয়া ওঠা ভাপা পিঠার যে স্বাদ সেটা অন্য কোনো সময় পাওয়া যায় না। শীতে যত রকমেরই পিঠা তৈরি হোক না কেন, ভাপা পিঠার ও চিতাই পিঠার সঙ্গে অন্য কোনো পিঠার তুলনাই হয় না।

এই পিঠা বিক্রি করেই শীতের সময় অনেকে সংসার চালান। শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে, ফুটপাতে দোকান নিয়ে বসে পড়েছেন মৌসুমি পিঠা ব্যবসায়ীরা। তেমন একটা পুঁজি লাগে না বলে সহজেই এ ব্যবসা শুরু করা যায়। তাই সল্প পুজির অনেকেই মৌসুমী পিঠা বিক্রয়ের এই ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছেন।
এ সব দোকানগুলোতে দেখা যায় পিঠা পাগল লোকজনদের উপচেপড়া ভিড়। বিক্রেতারাও আনন্দের সঙ্গে ভাপা পিঠা বিক্রি করে থাকে। সাতরাস্তা মোড়, মোল্লা বাড়ী মোড়, রূপসা ঘাট, বাসস্ট্যান্ড নগরে ফুটপাতে এই পিঠার দোকান দেখা যায়। শীতের পিঠা বিক্রি করে সংসারের অভাব দূর করছেন অনেকে।
প্রতি বছরের শীতের সময় এই পিঠার বাজার জমে উঠে। রূপসা বাজারে পিঠা বিক্রয় করে রুবি ও রুবির মায়ের সংসার চলে। তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা এই ব্যাবসা করেই স্বাবলম্বী হয়েছে, তাদের সংসার খুব ভালই চলছে। সকালে পিঠা বিক্রি হলেও বিশেষ করে সন্ধ্যার সময় এই পিঠার চাহিদা বেশি থাকে বলেও জানান তারা।

সাত রাস্তা মোড়ে পিঠা ব্যাবসায়ী নুরু ও তার ভাই এবং সন্তানদের নিয়ে জীবনযুদ্ধে সংসারের হাল ধরেছেন। বছরের ছয় মাস পিঠা তৈরি ও ছয় মাস বাড়িতে থেকে কষ্ট করে চলে নুরুর সংসার।

তিনি বলেন আমি কয়েক বছর ধরে বছরের ছয় মাস পিঠা বিক্রি করে ছেলে মেয়েদের পড়াশোনার খরচ বহন করছি। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও রয়েছে ক্রেতার ভিড়। প্রতিনিয়ত ক্রেতার ভিড় বেড়েই চলেছে। এতে আয় রোজগার ও হচ্ছে ভালো। এভাবে শীতের পিঠা বিক্রি করে সংসারের অভাব দূর করছেন অনেকে।
ক্রেতা সানজিদা বলেন, শীত মানেই পিঠা খাওয়ার ধুম। তবে সেই পিঠা যদি হয় ভাপা পিঠা তাহলে তো কোনো কথাই নেই। নিজেকে রিফ্রেশ করার জন্য দিনের শেষে বন্ধুদের নিয়ে সন্ধ্যায় পিঠা খেতে আসি। প্রতি বছর শিতের জন্য বসে থাকি। শীত আসলেই সন্ধার পরে বন্ধুদের নিয়ে চলে আসি। এর ভেতর আলাদা একটা আনন্দ অনুভব করি আমরা।

আপলোডকারীর তথ্য

খুলনায় শীতের পিঠা বাজারে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়

আপডেট সময় ০২:৫২:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৪

নাহিদ জামান, খুলনা

শীত আসলেই পিঠার কথা মনে পড়ে। শীত কালীন পিঠার মধ্যে জনপ্রিয় পিঠা ভাপা ও চিতই। সন্ধ্যার সাথে সাথে হিমেল হাওয়ার প্রভাবে বেড়ে যায় শীতের তীব্রতা। আর এই সময় খুলনা শহরের ফুটপাতে পিঠা তৈরিতে ব্যাস্ত থাকেন মৌসুমি পিঠা বিক্রেতা।
তারা ফুটপাতের উপর অস্থায়ী কাঠের চুলা বসিয়ে পিঠা তৈরির জন্য চুলায় আগুন লাগিয়ে পিঠার সাজ বসান চুলায়। বড় ডিসে চাউলের গুড়া, পরিমান মত লবন ও পানি দিয়ে গুলিয়ে ওড়ং দিয়ে সাজের মধ্যে ঢেলে ঢাকুন দিয়ে ঢেকে দেয়। কিছু সময় পরে ঢাকুন সরালেই তৈরি হয়ে যায় চিতই পিঠা। এই পিঠা কে কাচি খোচা পিঠাও বলে থাকে। কারন এই পিঠা তৈরি হলে কাচি দিয়ে তুলে ডিসের ভেতর রাখা হয়। ক্রেতার মুখরোচকের জন্য পিঠার সাথে তৈরি করেন ধনিয়া পাতা, শুটকি, শরিষা, শুকনা মরিচ সহ বিভিন্ন রকম ভর্তা যা ক্রেতা আকর্ষনের জন্য যথেষ্ট।
চাউলের গুড়া ও খেজুরের গুড় ছোট সাজের ভেতর দিয়ে পাতলা কাপড়ে মুড়ে পাতিলের ওপর বসিয়ে আগুনের তাপে পানির বাষ্প উঠে তৈরি হয় ভাপা পিঠা।
খুলনার বিভিন্ন বাজারে, রাস্তার মোড়ে, পাকা রাস্তার পাশে ভ্রাম্যমাণ পিঠার দোকান ঘুরে দেখা যায়। সকাল ও সন্ধ্যায় পিঠা বিক্রি হয়। বিশেষ করে সন্ধ্যার সময় এই পিঠার চাহিদা বেশি।

প্রতিদিন বিকাল ৫টা থেকে রাত১২ পর্যন্ত চলে পিঠা বিক্রি। শীতের সকালে বা সন্ধ্যায় গরম গরম ধোঁয়া ওঠা ভাপা পিঠার যে স্বাদ সেটা অন্য কোনো সময় পাওয়া যায় না। শীতে যত রকমেরই পিঠা তৈরি হোক না কেন, ভাপা পিঠার ও চিতাই পিঠার সঙ্গে অন্য কোনো পিঠার তুলনাই হয় না।

এই পিঠা বিক্রি করেই শীতের সময় অনেকে সংসার চালান। শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে, ফুটপাতে দোকান নিয়ে বসে পড়েছেন মৌসুমি পিঠা ব্যবসায়ীরা। তেমন একটা পুঁজি লাগে না বলে সহজেই এ ব্যবসা শুরু করা যায়। তাই সল্প পুজির অনেকেই মৌসুমী পিঠা বিক্রয়ের এই ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছেন।
এ সব দোকানগুলোতে দেখা যায় পিঠা পাগল লোকজনদের উপচেপড়া ভিড়। বিক্রেতারাও আনন্দের সঙ্গে ভাপা পিঠা বিক্রি করে থাকে। সাতরাস্তা মোড়, মোল্লা বাড়ী মোড়, রূপসা ঘাট, বাসস্ট্যান্ড নগরে ফুটপাতে এই পিঠার দোকান দেখা যায়। শীতের পিঠা বিক্রি করে সংসারের অভাব দূর করছেন অনেকে।
প্রতি বছরের শীতের সময় এই পিঠার বাজার জমে উঠে। রূপসা বাজারে পিঠা বিক্রয় করে রুবি ও রুবির মায়ের সংসার চলে। তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা এই ব্যাবসা করেই স্বাবলম্বী হয়েছে, তাদের সংসার খুব ভালই চলছে। সকালে পিঠা বিক্রি হলেও বিশেষ করে সন্ধ্যার সময় এই পিঠার চাহিদা বেশি থাকে বলেও জানান তারা।

সাত রাস্তা মোড়ে পিঠা ব্যাবসায়ী নুরু ও তার ভাই এবং সন্তানদের নিয়ে জীবনযুদ্ধে সংসারের হাল ধরেছেন। বছরের ছয় মাস পিঠা তৈরি ও ছয় মাস বাড়িতে থেকে কষ্ট করে চলে নুরুর সংসার।

তিনি বলেন আমি কয়েক বছর ধরে বছরের ছয় মাস পিঠা বিক্রি করে ছেলে মেয়েদের পড়াশোনার খরচ বহন করছি। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও রয়েছে ক্রেতার ভিড়। প্রতিনিয়ত ক্রেতার ভিড় বেড়েই চলেছে। এতে আয় রোজগার ও হচ্ছে ভালো। এভাবে শীতের পিঠা বিক্রি করে সংসারের অভাব দূর করছেন অনেকে।
ক্রেতা সানজিদা বলেন, শীত মানেই পিঠা খাওয়ার ধুম। তবে সেই পিঠা যদি হয় ভাপা পিঠা তাহলে তো কোনো কথাই নেই। নিজেকে রিফ্রেশ করার জন্য দিনের শেষে বন্ধুদের নিয়ে সন্ধ্যায় পিঠা খেতে আসি। প্রতি বছর শিতের জন্য বসে থাকি। শীত আসলেই সন্ধার পরে বন্ধুদের নিয়ে চলে আসি। এর ভেতর আলাদা একটা আনন্দ অনুভব করি আমরা।