ঢাকা ০৬:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo নলছিটিতে ৪০টি টিউবওয়েল বিতরণ Logo অবৈধ ড্রেজারে ধ্বংসের মুখে বারেশ্বর বিলের তিন ফসলি জমি Logo কালীগঞ্জে ভাটা উচ্ছেদে এসে শ্রমিকদের বাধায় ফিরে গেলেন পরিবেশ অধিপ্তর Logo সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে ৫১ শিক্ষার্থী মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তির্ন Logo ১৬ই ডিসেম্বর: মুক্তির লড়াই, গণঅভ্যুত্থান ও নতুন বাংলাদেশের প্রত্যাশা Logo চীনের অর্থনীতি: চাপ সামলেও শক্তিশালী অগ্রগতি Logo বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে শক্তিশালী রাষ্ট্র গড়ার লক্ষ্যে চীন Logo ইউনিট ৭৩১: সংগঠিত রাষ্ট্রীয় অপরাধের অকাট্য প্রমাণ Logo আবুধাবিতে ওয়াং ই–শেখ আবদুল্লাহ বৈঠক Logo ১৫ ডিসেম্বর ১৯৭১: বিজয়ের একেবারে দ্বারপ্রান্তে—রণাঙ্গনে চূড়ান্ত আঘাতের দিন

মানিকগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা সনদ বানাতে পৌনে ৪ লাখ টাকা নেন যুব মহিলা লীগ নেত্রী

ডেস্ক রিপোর্ট

মানিকগঞ্জ জেলা যুব মহিলা লীগের যুগ্ম আহ্বায়কের বিরুদ্ধে সিংগাইর উপজেলার এক ব্যক্তিকে এক মাসের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা সনদ বানানোর তদবিরের জন্য ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঢাকায় কর্মরত একটি বেসরকারি টেলিভিশনের এক সাংবাদিকের আত্মীয়ের কাছ থেকে এ টাকা নেওয়া হয়। ওই সাংবাদিকের সঙ্গে জেলা যুব মহিলা লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সালেহা জাহানের ফোনালাপ ফাঁস হয়ে যাওয়ায় এ তথ্য জানা গেছে। সালেহা জাহান একাধারে সিংগাইর উপজেলা যুবলীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদকও।

সালেহা মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ-সদস্য মমতাজ বেগমের খুব আস্থাভাজন হওয়ায় ভুক্তভোগী পরিবারকে টাকা ফেরত দিতে নানা টালবাহানা করছেন। সালেহা ও তার স্বামী শ্রমিক লীগের উপজেলার সভাপতিসহ ৩-৪ জন অজ্ঞাতনামা যুবক নিয়ে বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগীর পরিবারকে ভয়ভীতি দেখান। সাংবাদিকদের কাছে এ ব্যাপারে কোনো কথা না বলতেও হুমকি ধমকি দেন।

ফাঁস হওয়া ফোনালাপের কথোপকথনের অডিও গণমাধ্যমের কাছে আসার পর সালেহা টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেন। তবে তিনি দাবি করেন- মুক্তিযোদ্ধা সনদ বানানো সম্ভব না হওয়ায় টাকা ফেরতও দিয়েছেন। ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি এখনো তার কাছে আরও ৭০ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে।

ভুক্তভোগী সিংগাইর উপজেলার বায়রা গ্রামের কলেজ শিক্ষার্থী গীতা সরকার। ২০২১ সালে উপজেলার ধল্লা এলাকার জেলা যুব মহিলা লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও উপজেলা যুবলীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক সালেহা জাহানের প্রলোভনে গীতা তার বাবাকে মুক্তিযোদ্ধা বানানোর জন্য ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা দেন।

গীতা সোমবার সকালে বলেন, স্কুল ও কলেজে অধ্যয়নের ফাঁকে তিনি টিউশনির জমানো টাকা, বড় বোনের কাছ থেকে ধার করা দেড় লাখ টাকা ও স্থানীয় এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে পরিবারের কাউকে না জানিয়ে সালেহা জাহানকে টাকা দেন।

গীতা বলেন, তার ব্যক্তিগত রূপালী ব্যাংকের হিসাব নম্বর থেকে সালেহা জাহানের ব্যাংক এশিয়ার একটি হিসাব নম্বরে আরটিজিএস’র মাধ্যমে ২০২১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি সাড়ে তিন লাখ টাকা দেন। আর নগদে দেন ২০ হাজার টাকা।

পাঁচ লাখ টাকা চুক্তিতে এক মাসের মধ্যে গীতার বাবা গুরু চন্দ্র সরকারকে মুক্তিযোদ্ধা সনদ বানিয়ে দেওয়ার কথা বলে টাকা নেন সালেহা। দুই বছর সাত মাস পেরিয়ে গেলেও মুক্তিযোদ্ধা সনদ বানানো তো দূরের কথা উল্টো চাপের মুখে রেখেছেন সালেহা। গীতা জানান, তার সত্তর বছর বয়সি বাবা এখনো বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বেহালা বাজান। সালেহার ফাঁদে পরে এমন কাজটি করা ঠিক হয়নি। বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় পরিবারের মান ইজ্জতের হানি হয়েছে বলেও জানান।

মানিকগঞ্জ জেলা যুব মহিলা লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সালেহার এ অপকর্মের দায় নিতে নারাজ খোদ দলটির জেলা আহ্বায়ক রোমেজা আক্তার খান মাহিন। তিনি বলেন-বিষয়টি কেন্দ্রীয় সভানেত্রীকে অবহিত করেছি। তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মুক্তিযোদ্ধার সনদ বানানোর কথা বলে টাকা নেওয়া জঘন্যতম ও নিন্দনীয় কাজ বলে মনে করেন সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মো. সায়েদুল ইসলাম। তিনি বলেন, সালেহার এ ধরনের কর্মকাণ্ড দলের সুনাম ক্ষুণ্ন করেছে।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

নলছিটিতে ৪০টি টিউবওয়েল বিতরণ

SBN

SBN

মানিকগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা সনদ বানাতে পৌনে ৪ লাখ টাকা নেন যুব মহিলা লীগ নেত্রী

আপডেট সময় ০৭:৫৬:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ডেস্ক রিপোর্ট

মানিকগঞ্জ জেলা যুব মহিলা লীগের যুগ্ম আহ্বায়কের বিরুদ্ধে সিংগাইর উপজেলার এক ব্যক্তিকে এক মাসের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা সনদ বানানোর তদবিরের জন্য ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঢাকায় কর্মরত একটি বেসরকারি টেলিভিশনের এক সাংবাদিকের আত্মীয়ের কাছ থেকে এ টাকা নেওয়া হয়। ওই সাংবাদিকের সঙ্গে জেলা যুব মহিলা লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সালেহা জাহানের ফোনালাপ ফাঁস হয়ে যাওয়ায় এ তথ্য জানা গেছে। সালেহা জাহান একাধারে সিংগাইর উপজেলা যুবলীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদকও।

সালেহা মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ-সদস্য মমতাজ বেগমের খুব আস্থাভাজন হওয়ায় ভুক্তভোগী পরিবারকে টাকা ফেরত দিতে নানা টালবাহানা করছেন। সালেহা ও তার স্বামী শ্রমিক লীগের উপজেলার সভাপতিসহ ৩-৪ জন অজ্ঞাতনামা যুবক নিয়ে বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগীর পরিবারকে ভয়ভীতি দেখান। সাংবাদিকদের কাছে এ ব্যাপারে কোনো কথা না বলতেও হুমকি ধমকি দেন।

ফাঁস হওয়া ফোনালাপের কথোপকথনের অডিও গণমাধ্যমের কাছে আসার পর সালেহা টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেন। তবে তিনি দাবি করেন- মুক্তিযোদ্ধা সনদ বানানো সম্ভব না হওয়ায় টাকা ফেরতও দিয়েছেন। ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি এখনো তার কাছে আরও ৭০ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে।

ভুক্তভোগী সিংগাইর উপজেলার বায়রা গ্রামের কলেজ শিক্ষার্থী গীতা সরকার। ২০২১ সালে উপজেলার ধল্লা এলাকার জেলা যুব মহিলা লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও উপজেলা যুবলীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক সালেহা জাহানের প্রলোভনে গীতা তার বাবাকে মুক্তিযোদ্ধা বানানোর জন্য ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা দেন।

গীতা সোমবার সকালে বলেন, স্কুল ও কলেজে অধ্যয়নের ফাঁকে তিনি টিউশনির জমানো টাকা, বড় বোনের কাছ থেকে ধার করা দেড় লাখ টাকা ও স্থানীয় এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে পরিবারের কাউকে না জানিয়ে সালেহা জাহানকে টাকা দেন।

গীতা বলেন, তার ব্যক্তিগত রূপালী ব্যাংকের হিসাব নম্বর থেকে সালেহা জাহানের ব্যাংক এশিয়ার একটি হিসাব নম্বরে আরটিজিএস’র মাধ্যমে ২০২১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি সাড়ে তিন লাখ টাকা দেন। আর নগদে দেন ২০ হাজার টাকা।

পাঁচ লাখ টাকা চুক্তিতে এক মাসের মধ্যে গীতার বাবা গুরু চন্দ্র সরকারকে মুক্তিযোদ্ধা সনদ বানিয়ে দেওয়ার কথা বলে টাকা নেন সালেহা। দুই বছর সাত মাস পেরিয়ে গেলেও মুক্তিযোদ্ধা সনদ বানানো তো দূরের কথা উল্টো চাপের মুখে রেখেছেন সালেহা। গীতা জানান, তার সত্তর বছর বয়সি বাবা এখনো বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বেহালা বাজান। সালেহার ফাঁদে পরে এমন কাজটি করা ঠিক হয়নি। বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় পরিবারের মান ইজ্জতের হানি হয়েছে বলেও জানান।

মানিকগঞ্জ জেলা যুব মহিলা লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সালেহার এ অপকর্মের দায় নিতে নারাজ খোদ দলটির জেলা আহ্বায়ক রোমেজা আক্তার খান মাহিন। তিনি বলেন-বিষয়টি কেন্দ্রীয় সভানেত্রীকে অবহিত করেছি। তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মুক্তিযোদ্ধার সনদ বানানোর কথা বলে টাকা নেওয়া জঘন্যতম ও নিন্দনীয় কাজ বলে মনে করেন সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মো. সায়েদুল ইসলাম। তিনি বলেন, সালেহার এ ধরনের কর্মকাণ্ড দলের সুনাম ক্ষুণ্ন করেছে।