ঢাকা ০১:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo শোক থেকে শক্তির অভ্যুদ্বয়: সার্বভৌমত্ব ও মুক্তির চূড়ান্ত লড়াই Logo ঘোড়া বর্ষের প্রতিপাদ্যে চীন-আরব সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধন Logo একচীন নীতিতে পুনরায় সমর্থন জানাল তিন আরব দেশ Logo ম্যাকাও প্রধান নির্বাহীর কার্যপ্রতিবেদন শুনলেন প্রেসিডেন্ট সি Logo দাম ও মানের সমন্বয়ে মধ্যপ্রাচ্যে এগিয়ে চীনা অটোমোবাইল Logo টানা নবম বছর গ্যাস উৎপাদনে চীনের মাইলফলক Logo শনিবার বাদ জোহর রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে শহীদ ওসমান হাদির জানাজা Logo বরুড়ায় মরহুম হাজী নোয়াব আলী স্মৃতি স্মরনে ডাবল ফ্রিজ কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধন Logo গণ ফ্রন্টের প্রয়াত চেয়ারম্যান মোঃ জাকির হোসেন এর স্মরণে মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠিত Logo সুনামগঞ্জে ১ টি স্টিল নৌকাসহ ৩১টি ভারতীয় গরু আটক

শোক থেকে শক্তির অভ্যুদ্বয়: সার্বভৌমত্ব ও মুক্তির চূড়ান্ত লড়াই

শাহিন আলম আশিক

​পুরো বাংলাদেশ আজ এক নিস্তব্ধ হাহাকারে স্তব্ধ। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদির শাহাদাত জাতিকে এক অপার্থিব শোকের সাগরে নিমজ্জিত করেছে। প্রতিটি জনপদ, প্রতিটি রাজপথ আজ বাকরুদ্ধ; দেশপ্রেমিক জনতার দীর্ঘশ্বাসে ভারী হয়ে আছে বাংলার আকাশ। কিন্তু এই শোক কি কেবলই চোখের জল ফেলার জন্য? না, এই শোক আসলে শোষণের শৃঙ্খল ভাঙার এক আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ। হাদির এই আত্মত্যাগ আমাদের অস্তিত্বের মূলে এক প্রচণ্ড নাড়া দিয়ে আমাদের এক নতুন মুক্তির লড়াইয়ের সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।

​শহীদ শরীফ ওসমান হাদি শুধু একজন লড়াকু তরুণ ছিলেন না, তিনি ছিলেন ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও হেজিমনি বিরোধী লড়াইয়ের এক অবিনাশী কণ্ঠস্বর। আজ যে গভীর শোক আমাদের আচ্ছন্ন করে আছে, তাকে স্থবিরতায় পর্যবসিত হতে দিলে চলবে না। এই শোকই হোক আমাদের শপথ। রাষ্ট্র যখন অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক চতুর্মাত্রিক সংকটে জর্জরিত, তখন প্রতিটি যুবককে হয়ে উঠতে হবে দেশ রক্ষার একেকটি অপরাজেয় হাতিয়ার। বিলাপ নয়, বরং ইস্পাতকঠিন সংকল্পই হোক আমাদের পথচলার শক্তি।

​ইতিহাস সাক্ষী, এই বাংলার মাটি কখনো পরশক্তির দাসত্ব মেনে নেয়নি। ১৯৭১ সালে আমাদের পূর্বপুরুষরা আত্মমর্যাদা রক্ষায় যে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন, তার মূল ভিত্তি ছিল সার্বভৌমত্ব।

যেকোনো পরাশক্তির নগ্ন হস্তক্ষেপ কিংবা কোনো আঞ্চলিক হেজমনি এ দেশের মাটিতে অতীতেও যেমন ধোপে টেকেনি, ভবিষ্যতেও টিকবে না। যারা বিদেশি প্রভুদের দালালি করে দেশমাতৃকার অখণ্ডতা নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে চায়, তাদের জেনে রাখা উচিত—বাংলার ইতিহাসে দালালের স্থান কখনো হয়নি, হবেও না।

​আমরা আজ এক ঐতিহাসিক ক্রান্তিলগ্নে দাঁড়িয়ে। একদিকে সীমানার ওপার থেকে আসা আধিপত্যবাদী চোখ রাঙানি, অন্যদিকে দেশীয় ষড়যন্ত্রকারীদের কূটচাল। এই মহাসংকট উত্তরণের একমাত্র পথ হলো দেশপ্রেমিক জনতার ইস্পাতকঠিন ঐক্য। প্রতিটি যুবককে আজ হাদির মতো নির্ভীক চিত্তে দাঁড়িয়ে প্রমাণ করতে হবে যে, বাংলাদেশ কোনো শক্তির ক্রীড়ানক নয়। এই লড়াই আমাদের মর্যাদা রক্ষার লড়াই, এই লড়াই আমাদের বেঁচে থাকার লড়াই।

​শহীদ শরীফ ওসমান হাদির রক্ত আমাদের ধমনিতে এক নতুন তেজ সঞ্চার করেছে। সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোনো আপস নেই—এই হোক আমাদের ইশতেহার। আসুন, এই শোককে আমরা দেশপ্রেমের অগ্নিমন্ত্রে রূপান্তর করি। প্রতিটি ঘরে ঘরে গড়ে উঠুক সার্বভৌমত্ব রক্ষার দুর্গ। আধিপত্যবাদের বিষদাঁত ভেঙে দিতে বাংলার তারুণ্য আবারও প্রমাণ করুক—বাংলাদেশ কখনো মাথা নত করতে জানে না এবং জানবে না।
​শোক হোক শক্তি, মুক্তিই হোক লক্ষ্য।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

শোক থেকে শক্তির অভ্যুদ্বয়: সার্বভৌমত্ব ও মুক্তির চূড়ান্ত লড়াই

SBN

SBN

শোক থেকে শক্তির অভ্যুদ্বয়: সার্বভৌমত্ব ও মুক্তির চূড়ান্ত লড়াই

আপডেট সময় ১১:০৪:৫৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫

শাহিন আলম আশিক

​পুরো বাংলাদেশ আজ এক নিস্তব্ধ হাহাকারে স্তব্ধ। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদির শাহাদাত জাতিকে এক অপার্থিব শোকের সাগরে নিমজ্জিত করেছে। প্রতিটি জনপদ, প্রতিটি রাজপথ আজ বাকরুদ্ধ; দেশপ্রেমিক জনতার দীর্ঘশ্বাসে ভারী হয়ে আছে বাংলার আকাশ। কিন্তু এই শোক কি কেবলই চোখের জল ফেলার জন্য? না, এই শোক আসলে শোষণের শৃঙ্খল ভাঙার এক আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ। হাদির এই আত্মত্যাগ আমাদের অস্তিত্বের মূলে এক প্রচণ্ড নাড়া দিয়ে আমাদের এক নতুন মুক্তির লড়াইয়ের সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।

​শহীদ শরীফ ওসমান হাদি শুধু একজন লড়াকু তরুণ ছিলেন না, তিনি ছিলেন ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও হেজিমনি বিরোধী লড়াইয়ের এক অবিনাশী কণ্ঠস্বর। আজ যে গভীর শোক আমাদের আচ্ছন্ন করে আছে, তাকে স্থবিরতায় পর্যবসিত হতে দিলে চলবে না। এই শোকই হোক আমাদের শপথ। রাষ্ট্র যখন অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক চতুর্মাত্রিক সংকটে জর্জরিত, তখন প্রতিটি যুবককে হয়ে উঠতে হবে দেশ রক্ষার একেকটি অপরাজেয় হাতিয়ার। বিলাপ নয়, বরং ইস্পাতকঠিন সংকল্পই হোক আমাদের পথচলার শক্তি।

​ইতিহাস সাক্ষী, এই বাংলার মাটি কখনো পরশক্তির দাসত্ব মেনে নেয়নি। ১৯৭১ সালে আমাদের পূর্বপুরুষরা আত্মমর্যাদা রক্ষায় যে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন, তার মূল ভিত্তি ছিল সার্বভৌমত্ব।

যেকোনো পরাশক্তির নগ্ন হস্তক্ষেপ কিংবা কোনো আঞ্চলিক হেজমনি এ দেশের মাটিতে অতীতেও যেমন ধোপে টেকেনি, ভবিষ্যতেও টিকবে না। যারা বিদেশি প্রভুদের দালালি করে দেশমাতৃকার অখণ্ডতা নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে চায়, তাদের জেনে রাখা উচিত—বাংলার ইতিহাসে দালালের স্থান কখনো হয়নি, হবেও না।

​আমরা আজ এক ঐতিহাসিক ক্রান্তিলগ্নে দাঁড়িয়ে। একদিকে সীমানার ওপার থেকে আসা আধিপত্যবাদী চোখ রাঙানি, অন্যদিকে দেশীয় ষড়যন্ত্রকারীদের কূটচাল। এই মহাসংকট উত্তরণের একমাত্র পথ হলো দেশপ্রেমিক জনতার ইস্পাতকঠিন ঐক্য। প্রতিটি যুবককে আজ হাদির মতো নির্ভীক চিত্তে দাঁড়িয়ে প্রমাণ করতে হবে যে, বাংলাদেশ কোনো শক্তির ক্রীড়ানক নয়। এই লড়াই আমাদের মর্যাদা রক্ষার লড়াই, এই লড়াই আমাদের বেঁচে থাকার লড়াই।

​শহীদ শরীফ ওসমান হাদির রক্ত আমাদের ধমনিতে এক নতুন তেজ সঞ্চার করেছে। সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোনো আপস নেই—এই হোক আমাদের ইশতেহার। আসুন, এই শোককে আমরা দেশপ্রেমের অগ্নিমন্ত্রে রূপান্তর করি। প্রতিটি ঘরে ঘরে গড়ে উঠুক সার্বভৌমত্ব রক্ষার দুর্গ। আধিপত্যবাদের বিষদাঁত ভেঙে দিতে বাংলার তারুণ্য আবারও প্রমাণ করুক—বাংলাদেশ কখনো মাথা নত করতে জানে না এবং জানবে না।
​শোক হোক শক্তি, মুক্তিই হোক লক্ষ্য।