ঢাকা ১০:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo সাংবাদিক সুরক্ষা ও কল্যাণ ফাউন্ডেশনের বার্ষিক বনভোজন অনুষ্ঠিত Logo পাকুন্দিয়ায় গৃহবধূকে হাত-পা বেঁধে ছুরিকাঘাতে হত্যা, স্বামী পলাতক Logo শোক থেকে শক্তির অভ্যুদ্বয়: সার্বভৌমত্ব ও মুক্তির চূড়ান্ত লড়াই Logo ঘোড়া বর্ষের প্রতিপাদ্যে চীন-আরব সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধন Logo একচীন নীতিতে পুনরায় সমর্থন জানাল তিন আরব দেশ Logo ম্যাকাও প্রধান নির্বাহীর কার্যপ্রতিবেদন শুনলেন প্রেসিডেন্ট সি Logo দাম ও মানের সমন্বয়ে মধ্যপ্রাচ্যে এগিয়ে চীনা অটোমোবাইল Logo টানা নবম বছর গ্যাস উৎপাদনে চীনের মাইলফলক Logo শনিবার বাদ জোহর রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে শহীদ ওসমান হাদির জানাজা Logo বরুড়ায় মরহুম হাজী নোয়াব আলী স্মৃতি স্মরনে ডাবল ফ্রিজ কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধন

মুরাদনগরে কৃষকের আতংক অবৈধ ড্রেজার, বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি

মাহফুজুর রহমান, মুরাদনগর (কুমিল্লা)

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কৃষি জমি থেকে অবৈধ ড্রেজারের মাধ্যমে মাটি কেটে বিক্রি করছে একদল মাটি খেকো ড্রেজার ব্যবসায়ী। উপজেলার চাপিতলা ও বাঙ্গরা পূর্ব ইউনিয়নের কৃষি জমিতেই ১০টি অবৈধ ড্রেজারের মাধ্যমে তিন ফসলি জমি থেকে মাটি উত্তোলন করছে স্থানীয় কিছু চক্র। এতে ক্ষতির মুখে পড়ছে স্থানীয় কৃষক ও জমির মালিকরা। ড্রেজার ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের মধ্যে চাপিতলা গ্রামের সালমান, আজিজ, খামারগ্রামের মাইনউদ্দিন, একই গ্রামের সাদ্দাম হোসেন ও সাগর মিয়া, সারোয়ার খন্দকার (ওরফে ড্রেজার সারোয়ার), বিল্লাল মিয়াসহ আরো কিছু সদস্য দীর্ঘদিন ধরে এই ড্রেজার ব্যবসায় জড়িত। তাদের ভয়ে সাধারন কৃষকরা প্রতিবাদ করতেও ভয় পায় বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কৃষক।

সরেজমিনে জানা যায়, চাপিতলা, দৌলতপুর, খামারগ্রাম, খাপুরায় জমির মাঝখানে ড্রেজার মেশিন লাগিয়ে মাইলের পর মাইল পাইপের সংযোগ দিয়ে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে মাটি উত্তোলন করে কোথাও ফসলি জমি আবার কোথাও বা পুকুর ভরাট করা হচ্ছে। ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে মাটি ও বালি উত্তোলনের ফলে আশ-পাশের তিন ফসলের জমিগুলো কূপের ন্যয় জলাশয়ে পরিণত হচ্ছে। ড্রেজার সিন্ডিকেট প্রথমে একটি জমিতে ড্রেজার বসিয়ে মাটি কেটে নিলে গর্ত হয়ে পার্শ্ববর্তী সকল জমি ভেঙ্গে পড়তে শুরু করে। তখনই জমির মালিকদের জিম্মি করে কম দামে জমি বিক্রিতে বাধ্য করে ড্রেজার ব্যবসায়ী চক্র।
উপজেলার চাপিতলা গ্রামের রেজাউল করিম বলেন, মুরাদনগরে আওয়ামী লীগের লোকজনরা ড্রেজার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। ৫ই আগস্টের পর কিছুদিন এই ড্রেজার মেশিন গুলো বন্ধ ছিলো। ইদানিং আবারও ব্যবসা শুরু করেছে। এই ড্রেজারের কারনে কৃষি জমির পরিমান কমে গিয়ে উৎপাদন কমে যাচ্ছে। দেশের এবং পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। ড্রেজার নির্মূলে স্থায়ী পদক্ষেপ নেয়া জরুরী।

চাপিতলার আকতারুজ্জামান অন্তর বলেন, চাপিতলা ও খামারগ্রাম এবং দৌলতপুর বিলে মাটি খেকো ব্যবসায়ীরা প্রথমে মাঝখানে একটা জমি কিনে ড্রেজার লাগিয়ে কেটে ফেলে। তারপর পাশের জমিগুলো ভাঙ্গা শুরু হলে জমির মালিকদের অনিচ্ছা সত্বেও কমদামে তাদের কাছে বিক্রি করতে বাধ্য হয়। আমরা এই ড্রেজার বন্ধসহ ফসলি জমি রক্ষার জোর দাবি জানাই।
ড্রেজার ব্যবসায়ী সাগর ও মাইনুদ্দিনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তারা সরাসির দেখা করার জন্য বলেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় বর্তমানে চাষাবাদযোগ্য জমির পরিমান ২৩হাজার ৯৪৮হেক্টর।

যা ২০২২সালে ছিলো ২৪ হাজার ২৯৩ হেক্টর। এর মধ্যে বেশীর ভাগই দুই থেকে তিন ফসলী জমি।
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সিফাত উদ্দিন বলেন, যেখান থেকেই ড্রেজারের অভিযোগ এসেছে সেখানেই অভিযান পরিচালনা করেছি। এটি স্থায়ীভাবে বন্ধে আমাদের সবাইকে সম্মিলিত ভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি অবৈধ ড্রেজার বন্ধে আমাদের অভিযান সবসময় অব্যাহত আছে।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সাংবাদিক সুরক্ষা ও কল্যাণ ফাউন্ডেশনের বার্ষিক বনভোজন অনুষ্ঠিত

SBN

SBN

মুরাদনগরে কৃষকের আতংক অবৈধ ড্রেজার, বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি

আপডেট সময় ০৩:১৯:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪

মাহফুজুর রহমান, মুরাদনগর (কুমিল্লা)

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কৃষি জমি থেকে অবৈধ ড্রেজারের মাধ্যমে মাটি কেটে বিক্রি করছে একদল মাটি খেকো ড্রেজার ব্যবসায়ী। উপজেলার চাপিতলা ও বাঙ্গরা পূর্ব ইউনিয়নের কৃষি জমিতেই ১০টি অবৈধ ড্রেজারের মাধ্যমে তিন ফসলি জমি থেকে মাটি উত্তোলন করছে স্থানীয় কিছু চক্র। এতে ক্ষতির মুখে পড়ছে স্থানীয় কৃষক ও জমির মালিকরা। ড্রেজার ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের মধ্যে চাপিতলা গ্রামের সালমান, আজিজ, খামারগ্রামের মাইনউদ্দিন, একই গ্রামের সাদ্দাম হোসেন ও সাগর মিয়া, সারোয়ার খন্দকার (ওরফে ড্রেজার সারোয়ার), বিল্লাল মিয়াসহ আরো কিছু সদস্য দীর্ঘদিন ধরে এই ড্রেজার ব্যবসায় জড়িত। তাদের ভয়ে সাধারন কৃষকরা প্রতিবাদ করতেও ভয় পায় বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কৃষক।

সরেজমিনে জানা যায়, চাপিতলা, দৌলতপুর, খামারগ্রাম, খাপুরায় জমির মাঝখানে ড্রেজার মেশিন লাগিয়ে মাইলের পর মাইল পাইপের সংযোগ দিয়ে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে মাটি উত্তোলন করে কোথাও ফসলি জমি আবার কোথাও বা পুকুর ভরাট করা হচ্ছে। ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে মাটি ও বালি উত্তোলনের ফলে আশ-পাশের তিন ফসলের জমিগুলো কূপের ন্যয় জলাশয়ে পরিণত হচ্ছে। ড্রেজার সিন্ডিকেট প্রথমে একটি জমিতে ড্রেজার বসিয়ে মাটি কেটে নিলে গর্ত হয়ে পার্শ্ববর্তী সকল জমি ভেঙ্গে পড়তে শুরু করে। তখনই জমির মালিকদের জিম্মি করে কম দামে জমি বিক্রিতে বাধ্য করে ড্রেজার ব্যবসায়ী চক্র।
উপজেলার চাপিতলা গ্রামের রেজাউল করিম বলেন, মুরাদনগরে আওয়ামী লীগের লোকজনরা ড্রেজার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। ৫ই আগস্টের পর কিছুদিন এই ড্রেজার মেশিন গুলো বন্ধ ছিলো। ইদানিং আবারও ব্যবসা শুরু করেছে। এই ড্রেজারের কারনে কৃষি জমির পরিমান কমে গিয়ে উৎপাদন কমে যাচ্ছে। দেশের এবং পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। ড্রেজার নির্মূলে স্থায়ী পদক্ষেপ নেয়া জরুরী।

চাপিতলার আকতারুজ্জামান অন্তর বলেন, চাপিতলা ও খামারগ্রাম এবং দৌলতপুর বিলে মাটি খেকো ব্যবসায়ীরা প্রথমে মাঝখানে একটা জমি কিনে ড্রেজার লাগিয়ে কেটে ফেলে। তারপর পাশের জমিগুলো ভাঙ্গা শুরু হলে জমির মালিকদের অনিচ্ছা সত্বেও কমদামে তাদের কাছে বিক্রি করতে বাধ্য হয়। আমরা এই ড্রেজার বন্ধসহ ফসলি জমি রক্ষার জোর দাবি জানাই।
ড্রেজার ব্যবসায়ী সাগর ও মাইনুদ্দিনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তারা সরাসির দেখা করার জন্য বলেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় বর্তমানে চাষাবাদযোগ্য জমির পরিমান ২৩হাজার ৯৪৮হেক্টর।

যা ২০২২সালে ছিলো ২৪ হাজার ২৯৩ হেক্টর। এর মধ্যে বেশীর ভাগই দুই থেকে তিন ফসলী জমি।
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সিফাত উদ্দিন বলেন, যেখান থেকেই ড্রেজারের অভিযোগ এসেছে সেখানেই অভিযান পরিচালনা করেছি। এটি স্থায়ীভাবে বন্ধে আমাদের সবাইকে সম্মিলিত ভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি অবৈধ ড্রেজার বন্ধে আমাদের অভিযান সবসময় অব্যাহত আছে।