ঢাকা ০৭:৪৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৫ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo গুলশান-বনানীর অর্ধশতাধিক স্পা সেন্টার থেকে অর্ধ লক্ষ হারে চাঁদা আদায় Logo কটিয়াদীতে মুবাশ্বির ফুটবল একাডেমীর মিনি ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্টিত Logo দৈনিক আলোর জগত পত্রিকার সম্পাদক ফারুক আলম তালুকদারের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত Logo বরুড়া হাজী নোয়াব আলী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত Logo বাঘাইছড়িতে ইয়াবা সহ দুই জন আটক করেছে Logo রূপগঞ্জে এসএসসি পরীক্ষার্থীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ Logo মারিশ্যা (২৭ বিজিবি) কর্তৃক শীতার্ত দুঃস্থ মানুষের মাঝে শীতবস্ত বিতরণ Logo মোংলায় পবিত্র আল-কোরআনকে অবমাননা করে বক্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ Logo কিশোরগঞ্জে পুলিশ পরিচয়ে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা ছিনতাই Logo সার্বভৌমত্ব রক্ষায় চীনা গণমুক্তি ফৌজ অব্যাহতভাবে সামরিক প্রস্তুতি নেবে: চাং

কালীগঞ্জে অবৈধ করাত কলের রমরমা ব্যবসা, সরকার হারাচ্ছেন রাজস্ব

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে সরকারি অনুমোদন ছাড়াই চলছে অধিকাংশ অবৈধ ”স” মিল বা করাত কলের রমরমা ব্যবসা। এ কারণে সরকার হারাচ্ছে মোটা অঙ্কের রাজস্ব। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সরকারি নিয়ম ও নির্দেশনা তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে অসংখ্য করাতকল। স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের প্রভাব ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় নজরধারি না থাকায় এ উপজেলায় যন্ত্রতন্ত্র ভাবে গড়ে উঠেছে এসব স’মিল বা করাত কল। এসব স’মিলের কারণে উজাড় হচ্ছে বনজ ও ফলদসহ নানান প্রজাতির গাছ। যার ফলে হুমকির মুখে পড়েছে পরিবেশ। উপজেলা বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলছেন এ উপজেলায় মোট করাত কল আছে ৫০ টি। লাইসেন্স আছে ১৫ টির। আর ১২ টি আছে লাইসেন্স নবায়নের প্রক্রিয়ায়, যার অধিকাংশ কালীগঞ্জ শহরে। সঠিক হিসাব হলো কালীগঞ্জ উপজেলায় মোট করাত কল আছে ৭৭ টির অধিক।
তবে স’মিল মালিকরা বলছেন, উপজেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা সফিকুল ইসলামকে অফিসে পাওয়া যায় না। যে কারনে লাইসেন্স থাকলেও নবায়ন হয় না দীর্ঘদিন ধরে। গত এক বছরের অধিক সময় ধরে সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই। বর্তমানে উপজেলার কয়েকটি স’মিল রয়েছে তা সঠিক তথ্য জানেন না বন বিভাগ।
উপজেলা বন বিভাগ আরও বলছেন, অনুমোদনহীন এসব মিলে বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়মিত তদারকি না করায় সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব। করাত-কলের মালিক ও অসাধু কাঠ ব্যবসায়ীরা নীরবেই এসব কাজ করে যাচ্ছে। যেখানে-সেখানে স’মিল স্থাপনের কারণে হুমকির মুখে রয়েছে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ। কমছে অক্সিজেনের ভারসাম্য।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বন আইন ১৯২৭ ও তৎপ্রণীত স’মিল (লাইসেন্স) বিধিমালা ২০১২ অনুযায়ী কোনো স’মিল মালিক লাইসেন্স না নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন না। লাইসেন্স নেওয়ার পর থেকে প্রতিবছর তা নবায়ন করতে হবে। স’মিল স্থাপনের জন্য বন বিভাগের লাইসেন্স পাওয়ার পর কাজ শুরু করতে হয়। লাগে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, এ ছাড়া যেখানে-সেখানে স’মিল স্থাপন করা যাবে না।
কোলা বাজার এলাকার ভাই ভাই স’মিলের গিয়ে দেখা যায় শ্রমিকরা কাঠ চিঁড়া কাজে ব্যস্ত। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মালিক আতাউর রহমান জানায়, আমার লাইসেন্স এখনো সম্পন্ন হয়নি। বন বিভাগের লোক মাঝে মধ্যে আসে তখন তাদের একটু চা নাস্তা খেতে টাকা দিয়ে হয়। এভাবে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অবৈধ করাত কল চলছে দীর্ঘ বছর ধরে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক করাত-কল মালিক বলেন, দীর্ঘদিন আমাদের স’মিল চলছে। অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছি এখনও অনুমোদন পাইনি।
কালীগঞ্জ উপজেলা মানবাধিকার কর্মি ও পরিবেশবাদী শিবুপদ বিশ^াস বলেন, যারা অবৈধভাবে এসব স’মিল চালাচ্ছেন, তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগসাজশে এই কর্মকান্ড করে থাকেন। তাছাড়া এই উপজেলায কখন কোন বন কর্মকর্তা আসে তা অনেকেই জানেন না। কারন এ সকল বন কর্মকর্তাদের কোন মিটিং এ দেখা যায় না। ফলে বন বিভাগের সকল কর্মকান্ড আড়ালেই থেকে যায়। তিনি আরও বলেন সরকারি বিধি মোতাবেক করাত কলগুলো পরিচালনা হচ্ছে না কারন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঠিক নজরদারির অভাব। এ ব্যাপারে আমি উপজেলা প্রশাসনের কথা বলেছি কিন্তু উপজেলায় স্থায়ী বন কর্মকর্তা না থাকায় কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো শফিকুল ইসলাম বলেন, আমি এখানে আজ ৪ মাস বদলী হয়ে আসছি। তাছাড়া কালীগঞ্জ, কোটচাঁদপুর ও মহেশপুর উপজেলা আমাকে দেখতে হয়, এজন্য আমি সঠিক কোনো পরিসংখ্যান দিতে পারবো না। আমার জানা মতে উপজেলায় করাত কল আছে ৫০ টি, লাইসেন্স আছে ১৫ টি, এবং ১২ টি করাত কলের লাইসেন্স নবায়নের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। অবৈধ স’মিলগুলোর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়া অবৈধভাবে স-মিল স্থাপন বা চালানোর কোন সুযোগ নেই। আমরা দ্রæত উপজেলা প্রশাসনের সহযোগীতা নিয়ে অবৈধ করাত কলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করবো। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইশরাত জাহান বলেন, এটা সম্পূর্ণ বন বিভাগের কার্যক্রম। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারি। বন বিভাগ এ ব্যাপারে যদি কোন সহযোগীতা চাই উপজেলা প্রশাসন সর্বাত্ত¡ক সহযোগিতা করবে।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

গুলশান-বনানীর অর্ধশতাধিক স্পা সেন্টার থেকে অর্ধ লক্ষ হারে চাঁদা আদায়

SBN

SBN

কালীগঞ্জে অবৈধ করাত কলের রমরমা ব্যবসা, সরকার হারাচ্ছেন রাজস্ব

আপডেট সময় ০৬:৫০:২৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৩

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে সরকারি অনুমোদন ছাড়াই চলছে অধিকাংশ অবৈধ ”স” মিল বা করাত কলের রমরমা ব্যবসা। এ কারণে সরকার হারাচ্ছে মোটা অঙ্কের রাজস্ব। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সরকারি নিয়ম ও নির্দেশনা তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে অসংখ্য করাতকল। স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের প্রভাব ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় নজরধারি না থাকায় এ উপজেলায় যন্ত্রতন্ত্র ভাবে গড়ে উঠেছে এসব স’মিল বা করাত কল। এসব স’মিলের কারণে উজাড় হচ্ছে বনজ ও ফলদসহ নানান প্রজাতির গাছ। যার ফলে হুমকির মুখে পড়েছে পরিবেশ। উপজেলা বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলছেন এ উপজেলায় মোট করাত কল আছে ৫০ টি। লাইসেন্স আছে ১৫ টির। আর ১২ টি আছে লাইসেন্স নবায়নের প্রক্রিয়ায়, যার অধিকাংশ কালীগঞ্জ শহরে। সঠিক হিসাব হলো কালীগঞ্জ উপজেলায় মোট করাত কল আছে ৭৭ টির অধিক।
তবে স’মিল মালিকরা বলছেন, উপজেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা সফিকুল ইসলামকে অফিসে পাওয়া যায় না। যে কারনে লাইসেন্স থাকলেও নবায়ন হয় না দীর্ঘদিন ধরে। গত এক বছরের অধিক সময় ধরে সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই। বর্তমানে উপজেলার কয়েকটি স’মিল রয়েছে তা সঠিক তথ্য জানেন না বন বিভাগ।
উপজেলা বন বিভাগ আরও বলছেন, অনুমোদনহীন এসব মিলে বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়মিত তদারকি না করায় সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব। করাত-কলের মালিক ও অসাধু কাঠ ব্যবসায়ীরা নীরবেই এসব কাজ করে যাচ্ছে। যেখানে-সেখানে স’মিল স্থাপনের কারণে হুমকির মুখে রয়েছে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ। কমছে অক্সিজেনের ভারসাম্য।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বন আইন ১৯২৭ ও তৎপ্রণীত স’মিল (লাইসেন্স) বিধিমালা ২০১২ অনুযায়ী কোনো স’মিল মালিক লাইসেন্স না নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন না। লাইসেন্স নেওয়ার পর থেকে প্রতিবছর তা নবায়ন করতে হবে। স’মিল স্থাপনের জন্য বন বিভাগের লাইসেন্স পাওয়ার পর কাজ শুরু করতে হয়। লাগে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, এ ছাড়া যেখানে-সেখানে স’মিল স্থাপন করা যাবে না।
কোলা বাজার এলাকার ভাই ভাই স’মিলের গিয়ে দেখা যায় শ্রমিকরা কাঠ চিঁড়া কাজে ব্যস্ত। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মালিক আতাউর রহমান জানায়, আমার লাইসেন্স এখনো সম্পন্ন হয়নি। বন বিভাগের লোক মাঝে মধ্যে আসে তখন তাদের একটু চা নাস্তা খেতে টাকা দিয়ে হয়। এভাবে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অবৈধ করাত কল চলছে দীর্ঘ বছর ধরে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক করাত-কল মালিক বলেন, দীর্ঘদিন আমাদের স’মিল চলছে। অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছি এখনও অনুমোদন পাইনি।
কালীগঞ্জ উপজেলা মানবাধিকার কর্মি ও পরিবেশবাদী শিবুপদ বিশ^াস বলেন, যারা অবৈধভাবে এসব স’মিল চালাচ্ছেন, তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগসাজশে এই কর্মকান্ড করে থাকেন। তাছাড়া এই উপজেলায কখন কোন বন কর্মকর্তা আসে তা অনেকেই জানেন না। কারন এ সকল বন কর্মকর্তাদের কোন মিটিং এ দেখা যায় না। ফলে বন বিভাগের সকল কর্মকান্ড আড়ালেই থেকে যায়। তিনি আরও বলেন সরকারি বিধি মোতাবেক করাত কলগুলো পরিচালনা হচ্ছে না কারন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঠিক নজরদারির অভাব। এ ব্যাপারে আমি উপজেলা প্রশাসনের কথা বলেছি কিন্তু উপজেলায় স্থায়ী বন কর্মকর্তা না থাকায় কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো শফিকুল ইসলাম বলেন, আমি এখানে আজ ৪ মাস বদলী হয়ে আসছি। তাছাড়া কালীগঞ্জ, কোটচাঁদপুর ও মহেশপুর উপজেলা আমাকে দেখতে হয়, এজন্য আমি সঠিক কোনো পরিসংখ্যান দিতে পারবো না। আমার জানা মতে উপজেলায় করাত কল আছে ৫০ টি, লাইসেন্স আছে ১৫ টি, এবং ১২ টি করাত কলের লাইসেন্স নবায়নের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। অবৈধ স’মিলগুলোর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়া অবৈধভাবে স-মিল স্থাপন বা চালানোর কোন সুযোগ নেই। আমরা দ্রæত উপজেলা প্রশাসনের সহযোগীতা নিয়ে অবৈধ করাত কলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করবো। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইশরাত জাহান বলেন, এটা সম্পূর্ণ বন বিভাগের কার্যক্রম। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারি। বন বিভাগ এ ব্যাপারে যদি কোন সহযোগীতা চাই উপজেলা প্রশাসন সর্বাত্ত¡ক সহযোগিতা করবে।