মোঃ ইলিয়াস আলী, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ দু’চোখ যেদিকে যায় শুধু হলুদ আর হলুদ। আঁকাবাঁকা রাস্তার দু’পাশে প্রকৃতি যেন সেজেছে আপন মহিমায়। এমন নয়নাভিরাম সরিষা ফুলের দৃশ্য, ফুলের গন্ধ, পাখির কিচিরমিচির শব্দ আর মৌমাছির গুঞ্জন মনকে বিমোহিত করে।
প্রকৃতি হলুদের দুয়ার উন্মুক্ত করে দিয়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার মাঠের পর মাঠ। খেতের পর খেত সরিষা আর সরিষা। হলদে সাজের সমাহার ইঙ্গিত করছে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রজাপতির দল ছুটে বেড়াচ্ছে ফুলে ফুলে। মৌমাছির ভনভনানিতে মুখর সরিষার বিস্তৃত মাঠ। ফুল থেকে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত হাজারো মৌমাছির দল। এদিকে সরিষার ভালো ফলনে কৃষকদের মুখেও সোনা রাঙানো হাসি।
রাণীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ, লেহেম্বা, হোসেনগাঁও, রাতোর, নন্দুয়ার, ধর্মগড়, কাশিপুর, বাচোর ইউনিয়নে বিস্তীর্ণ মাঠে এখন সরিষার হলুদ রঙের ফুলের সমারোহ। যেন হলুদ রঙের সুষমা শোভা পাচ্ছে দিকে দিকে। গুনগুন শব্দে মধুলোভী মৌমাছিরা এখন এক ফুল থেকে অন্য ফুলে বসে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। চলতি রবিশস্য মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং সরিষাখেতে রোগবালাই কম হওয়ায় সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষক ও কৃষি বিভাগ।
কৃষক দুলাল হোসেন জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এবারো তিনি ৫ বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছেন। গাছ ভালো হওয়ায় ভালো ফলনও আশা করছেন।গত বছরে লাভবান হওয়ায় এবার ২ বিঘা বেশি আবাদ করেছেন।
কৃষক খিজমত আলী বলেন, গত বছর সরিষার চাষ না করলেও তিনি এ বছর চাষ করেছেন। কারণ, বাজারে ভোজ্য তেলের দাম বেশি। তাই তিনি এবার ৩ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। প্রতিটি ইউনিয়নের কৃষকদের আশা এবারে সরিষার বাম্পার ফলন হবে ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় দেবনাথ জানান, গত মৌসুমে সরিষার অর্জিত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৫ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু চলতি মৌসুমে উপজেলায় এবার ৬ হাজার ৩৯০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে ৬ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে। অর্থাৎ চলতি মৌসুমে গত বছরের চেয়ে ১২৮০ হেক্টর জমিতে সরিষা বেশি চাষ হয়েছে।