ঢাকা ০১:৪৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সাংবাদিকরা কারোই বন্ধু নয়, আমাদের করণীয়

একজন খ্যাতিমান সাংবাদিক ইউসুফ আলীর বিদায়

মোঃ ইলিয়াছ আহমদ:

মোঃ ইউসুফ আলী, একজন পরিচিত মুখ। পেশায় সাংবাদিক হিসেবে বরুড়ার ৩৩৩ গ্রামে তার পরিচিতি ছিলো। তিনি দৈনিক বরুড়া কন্ঠ পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক ছিলেন। তার আগে তিনি বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে উপজেলা ও জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছেন। ২১ জুলাই ২৩ ইং কিডনি জনিত রোগে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজেউন।
তার শেষ জানাজা হয়েছে নিজ গ্রাম বিলপুকুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে। গ্রামবাসী স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে জানাজায় অংশ গ্রহণ করেন। লক্ষণীয় একজন খ্যাতিমান সাংবাদিকদের শেষ বিদায়ে দুইজন রাজনীতি কর্মী জানাজায় অংশ গ্রহণ করেছেন মাত্র। একজন ভবানীপুর ইউনিয়নের চারবারের চেয়ারম্যান ও বিএনপির উপজেলা কমিটির সহ সভাপতি সৈয়দ রেজাউল হক রেজু, আরেকজন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম। অথচ এই ইউসুফ আলী বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে ফিচার সহ নানাহ খবর লিখেছেন। সাংবাদিক কারোই বন্ধু হতে পারে না। কারণ সত্য টা লিখলে কারোর না কারোর বিপক্ষে চলে যায়। প্রশাসনের কাউকে জানাজায় নজরে পড়েনি। একজন চেয়ারম্যান সাহেবদের কে ও শেষ বিদায় দেখেনি। ২১ জুলাই ২৩ ইং ঢাকাস্থ বরুড়া জনকল্যাণ সমিতির মেজবান ও মিলনমেলা ছিল। এটা হয়তো জানাজায় প্রভাব পড়ছে। কারণ অনেকে মেজবানে ছিলেন। যদি ও বরুড়া জনকল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবদুস সামাদ ভাই ইউসুফ আলীর মৃত্যু সংবাদটি বরুড়ার মিলনমেলায় স্ব প্রনোদিত হয়ে ঘোষণা করেছে। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি সামাদ ভাইয়ের কাছে।
তারপর ও বলছি সাংবাদিক ভাইদের কে এই জানাজার নামাজ থেকে আমরা শিক্ষা নিতে পারি সাংবাদিকদের বন্ধু কেহ নয়। মানুষের জন্য সাংবাদিকদরা কাজ করে যেতে হবে। অসহায় নির্যাতিত মানুষের পক্ষে কলমের লেখনীর মাধ্যমে দাঁড়াতে হবে।
জীবিত কালে সাংবাদিকদের পাশাপাশি একজন মানুষ তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন সড়ক মন্ত্রনালয়ের যুগ্ম সচিব মনীন্দ্র কিশোর মজুমদার। ইউসুফ আলী সাপ্তাহে দু’বার কিডনি ডায়ালাইসিস করতেন। এক বছর যাবৎ ৫০০ টাকা করে প্রতিবার দেয়ার ব্যবস্হা করে দিয়েছিলেন মনীন্দ্র কিশোর মজুমদার দাদা। তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এছাড়াও ইঞ্জিনিয়ার আতিকুর রহমান সবসময় তার পাশে ছিলেন।
ইউসুফ আলী ৯০ দশক থেকে আলোচিত সাংবাদিক। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সংবাদপত্রের সাথে জড়িত ছিলেন তিনি।
তার ৪ টি কন্যা সন্তান ও স্তী রয়েছে। দুটো মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। একটি ভিক্টোরিয়া কলেজে ও একটি বরুড়া হাজী নোয়াব আলী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়েন। স্ত্রীর আপ্রাণ চেষ্টায় মেয়েরা এগিয়ে যাচ্ছে। স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের চেয়ারম্যান ইন্জিনিয়ার মোঃ আতিকুর রহমান স্যারের সুবাধে বড় মেয়টি টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ারিং এ লেখা পড়া করছেন। বিশ্ববিদ্যালয় ও হোস্টেলের সকল খরচ সহ যাবতীয় তিনি বহন করেন। তার কাছে ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ইউসুফ আলী দিন কে দিন সংবাদের জন্য দৌড়াতেন। মানুষের খবর আগে। পরিবারের সময় দেয়া বা খুজ খবর নেয়ার সময় ছিলো না তার হাতে।
আজ সে আমাদের মাঝে নেই। বরুড়া প্রেসক্লাবের নির্বাহী সদস্য ছিলেন তিনি। সংবাদপত্রে যারা জড়িত তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি। পরিবার কে সময় দিন। সংবাদপত্রের পাশাপাশি অন্য কাজে জড়িত হউন। পরিবার কে দাড়ঁ করাতে হলে অর্থের বিকল্প নেই। অর্থ হতে হবে সৎ পথের উপার্জিত।
আজ ইউসুফ আলীর কিছুই নেই। বরুড়া বাজারে ভাড়া করা একটি বাসাতে তিনি থাকতেন। জানাজার সুবাধে ইউসুফ আলীর বাড়িতে যাওয়া হয়েছে। পুরোনো একটি ঘর ছাড়া কিছুই নেই। অথচ ইউসুফ আলীর কলমের অনেক দাঁড় ছিলো। অন্যায় ভাবে কিছুই করে নি তার জ্বলন্ত উদহারন তার ঘরবাড়ি দেখলে বুঝা যায়। শুধু মানুষের জন্যই কাজ করেছেন। নিজের জন্য কিছুই করেন নি। স্ত্রী সুবাধে কন্যা সন্তান গুলো সামনে এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। দোয়া চাই সকলের কাছে আল্লাহ যেন তার কন্যা সন্তান গুলো কে মানুষ করেন।
প্রিয় সহকর্মী বন্ধুরা,
ইউসুফ আলীর মৃত্যু আমাদের চোখ খুলে দিয়ে গেছে। বরুড়ায় কর্মরত প্রথম সাংবাদিক তিনি মৃত্যু বরণ করছেন। যদি ও তার আগে ইদ্রিস ভাই মারা যান। ইদ্রিস ভাই সাংবাদিকতার পাশাপাশি সরকারি চাকুরী করেছেন। মমতাজ ভাই হারিছ মাহমুদ ভাই ঢাকায় সাংবাদিকতা করেছেন। নিজ গ্রামে শায়িত হয়েছেন। শেষ বিদায়ের সময় ছিলাম। দেখেছি কাছ থেকে তাদের বিদায় টুকু।
আবার ও বলছি সাংবাদিক কারোই বন্ধু নয়। স্বাধীন চেতা পেশা হিসেবে শুধু সাংবাদিকতা করবেন না। পাশাপাশি নিজেকে স্বাবলম্বী করতে অন্য কিছু করুন। এ দ্রব্য মূল্যের বাজারে নিজেকে টিকিয়ে রাখতে হলে আমাদের কে স্বাবলম্বী হতে হবে।
ইউসুফ আলী ভাই তুমি কবরে ভালো থাকো। এই কামনা করি মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে।
ক্ষমা করে দিও আমাদের কে বন্ধু হিসেবে ভালো পরামর্শ দিতে পারেনি জীবত কালে।

লেখক:
মোঃ ইলিয়াছ আহমদ
সাধারণ সম্পাদক বরুড়া প্রেসক্লাব
বরুড়া, কুমিল্লা।

আপলোডকারীর তথ্য

সাংবাদিকরা কারোই বন্ধু নয়, আমাদের করণীয়

একজন খ্যাতিমান সাংবাদিক ইউসুফ আলীর বিদায়

আপডেট সময় ১১:৩৪:৩২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ জুলাই ২০২৩

মোঃ ইলিয়াছ আহমদ:

মোঃ ইউসুফ আলী, একজন পরিচিত মুখ। পেশায় সাংবাদিক হিসেবে বরুড়ার ৩৩৩ গ্রামে তার পরিচিতি ছিলো। তিনি দৈনিক বরুড়া কন্ঠ পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক ছিলেন। তার আগে তিনি বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে উপজেলা ও জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছেন। ২১ জুলাই ২৩ ইং কিডনি জনিত রোগে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজেউন।
তার শেষ জানাজা হয়েছে নিজ গ্রাম বিলপুকুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে। গ্রামবাসী স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে জানাজায় অংশ গ্রহণ করেন। লক্ষণীয় একজন খ্যাতিমান সাংবাদিকদের শেষ বিদায়ে দুইজন রাজনীতি কর্মী জানাজায় অংশ গ্রহণ করেছেন মাত্র। একজন ভবানীপুর ইউনিয়নের চারবারের চেয়ারম্যান ও বিএনপির উপজেলা কমিটির সহ সভাপতি সৈয়দ রেজাউল হক রেজু, আরেকজন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম। অথচ এই ইউসুফ আলী বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে ফিচার সহ নানাহ খবর লিখেছেন। সাংবাদিক কারোই বন্ধু হতে পারে না। কারণ সত্য টা লিখলে কারোর না কারোর বিপক্ষে চলে যায়। প্রশাসনের কাউকে জানাজায় নজরে পড়েনি। একজন চেয়ারম্যান সাহেবদের কে ও শেষ বিদায় দেখেনি। ২১ জুলাই ২৩ ইং ঢাকাস্থ বরুড়া জনকল্যাণ সমিতির মেজবান ও মিলনমেলা ছিল। এটা হয়তো জানাজায় প্রভাব পড়ছে। কারণ অনেকে মেজবানে ছিলেন। যদি ও বরুড়া জনকল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবদুস সামাদ ভাই ইউসুফ আলীর মৃত্যু সংবাদটি বরুড়ার মিলনমেলায় স্ব প্রনোদিত হয়ে ঘোষণা করেছে। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি সামাদ ভাইয়ের কাছে।
তারপর ও বলছি সাংবাদিক ভাইদের কে এই জানাজার নামাজ থেকে আমরা শিক্ষা নিতে পারি সাংবাদিকদের বন্ধু কেহ নয়। মানুষের জন্য সাংবাদিকদরা কাজ করে যেতে হবে। অসহায় নির্যাতিত মানুষের পক্ষে কলমের লেখনীর মাধ্যমে দাঁড়াতে হবে।
জীবিত কালে সাংবাদিকদের পাশাপাশি একজন মানুষ তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন সড়ক মন্ত্রনালয়ের যুগ্ম সচিব মনীন্দ্র কিশোর মজুমদার। ইউসুফ আলী সাপ্তাহে দু’বার কিডনি ডায়ালাইসিস করতেন। এক বছর যাবৎ ৫০০ টাকা করে প্রতিবার দেয়ার ব্যবস্হা করে দিয়েছিলেন মনীন্দ্র কিশোর মজুমদার দাদা। তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এছাড়াও ইঞ্জিনিয়ার আতিকুর রহমান সবসময় তার পাশে ছিলেন।
ইউসুফ আলী ৯০ দশক থেকে আলোচিত সাংবাদিক। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সংবাদপত্রের সাথে জড়িত ছিলেন তিনি।
তার ৪ টি কন্যা সন্তান ও স্তী রয়েছে। দুটো মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। একটি ভিক্টোরিয়া কলেজে ও একটি বরুড়া হাজী নোয়াব আলী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়েন। স্ত্রীর আপ্রাণ চেষ্টায় মেয়েরা এগিয়ে যাচ্ছে। স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের চেয়ারম্যান ইন্জিনিয়ার মোঃ আতিকুর রহমান স্যারের সুবাধে বড় মেয়টি টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ারিং এ লেখা পড়া করছেন। বিশ্ববিদ্যালয় ও হোস্টেলের সকল খরচ সহ যাবতীয় তিনি বহন করেন। তার কাছে ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ইউসুফ আলী দিন কে দিন সংবাদের জন্য দৌড়াতেন। মানুষের খবর আগে। পরিবারের সময় দেয়া বা খুজ খবর নেয়ার সময় ছিলো না তার হাতে।
আজ সে আমাদের মাঝে নেই। বরুড়া প্রেসক্লাবের নির্বাহী সদস্য ছিলেন তিনি। সংবাদপত্রে যারা জড়িত তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি। পরিবার কে সময় দিন। সংবাদপত্রের পাশাপাশি অন্য কাজে জড়িত হউন। পরিবার কে দাড়ঁ করাতে হলে অর্থের বিকল্প নেই। অর্থ হতে হবে সৎ পথের উপার্জিত।
আজ ইউসুফ আলীর কিছুই নেই। বরুড়া বাজারে ভাড়া করা একটি বাসাতে তিনি থাকতেন। জানাজার সুবাধে ইউসুফ আলীর বাড়িতে যাওয়া হয়েছে। পুরোনো একটি ঘর ছাড়া কিছুই নেই। অথচ ইউসুফ আলীর কলমের অনেক দাঁড় ছিলো। অন্যায় ভাবে কিছুই করে নি তার জ্বলন্ত উদহারন তার ঘরবাড়ি দেখলে বুঝা যায়। শুধু মানুষের জন্যই কাজ করেছেন। নিজের জন্য কিছুই করেন নি। স্ত্রী সুবাধে কন্যা সন্তান গুলো সামনে এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। দোয়া চাই সকলের কাছে আল্লাহ যেন তার কন্যা সন্তান গুলো কে মানুষ করেন।
প্রিয় সহকর্মী বন্ধুরা,
ইউসুফ আলীর মৃত্যু আমাদের চোখ খুলে দিয়ে গেছে। বরুড়ায় কর্মরত প্রথম সাংবাদিক তিনি মৃত্যু বরণ করছেন। যদি ও তার আগে ইদ্রিস ভাই মারা যান। ইদ্রিস ভাই সাংবাদিকতার পাশাপাশি সরকারি চাকুরী করেছেন। মমতাজ ভাই হারিছ মাহমুদ ভাই ঢাকায় সাংবাদিকতা করেছেন। নিজ গ্রামে শায়িত হয়েছেন। শেষ বিদায়ের সময় ছিলাম। দেখেছি কাছ থেকে তাদের বিদায় টুকু।
আবার ও বলছি সাংবাদিক কারোই বন্ধু নয়। স্বাধীন চেতা পেশা হিসেবে শুধু সাংবাদিকতা করবেন না। পাশাপাশি নিজেকে স্বাবলম্বী করতে অন্য কিছু করুন। এ দ্রব্য মূল্যের বাজারে নিজেকে টিকিয়ে রাখতে হলে আমাদের কে স্বাবলম্বী হতে হবে।
ইউসুফ আলী ভাই তুমি কবরে ভালো থাকো। এই কামনা করি মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে।
ক্ষমা করে দিও আমাদের কে বন্ধু হিসেবে ভালো পরামর্শ দিতে পারেনি জীবত কালে।

লেখক:
মোঃ ইলিয়াছ আহমদ
সাধারণ সম্পাদক বরুড়া প্রেসক্লাব
বরুড়া, কুমিল্লা।