ঢাকা ০৯:১৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চিকিৎসা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কিডনী ট্রান্সপ্ল্যান্টসহ অত্যন্ত জটিল অস্ত্রোপচার সফলভাবে সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সক্ষমতা অজর্ন করেছে। তিনি দেশে ক্যাডাভেরিক অঙ্গদানের মহতী কার্যক্রমকে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার কথা উল্লেখ করে এক্ষেত্রে দেশবাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। যাতে করে কিডনী লিভারসহ বিভিন্ন অঙ্গের অভাব থেকে হাজার হাজার রোগীকে বাঁচানো যায় এবং তাদের একটি সুস্থ জীবন দান করা সম্ভব হয়। সোমবার ৩ এপ্রিল ২০২৩ইং তারিখে গণভবনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে সফল কিডনী প্রতিস্থাপনকারী অধ্যাপক ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান দুলালসহ চিকিৎসক টিম সাক্ষাত করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী এই আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী এসময় বাংলাদেশের চিকিৎসাসেবায় যুগান্তকারী অর্জন ও সাফল্যের অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্রেন ডেথ রোগীর অঙ্গদানের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো সফল ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্ল্যান্ট সম্পন্ন করায় অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ বর্তমান প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক টিমকে ধন্যবাদ জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসময় বলেন, চিকিৎসা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে। কিডনি প্রতিস্থাপনসহ বাংলাদেশে এখন অনেক জটিল অপারেশন সফলভাবে সম্পন্ন হচ্ছে। বাংলাদেশি চিকিৎসকদের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমরা মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিচ্ছি। চিকিৎসা খাতের উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন তিনি জানান, বর্তমান সরকার স্বাস্থ্য খাতকে অনেক গুরুত্ব দিচ্ছে।

সাক্ষাতকালে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ, প্রক্টর, ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক, রেনালট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জন অধ্যাপক ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান দুলাল, সহকারী প্রক্টর ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোঃ ফারুক হোসেন, এ্যানেথেশিয়া বিভাগের (আইসিইউ) সহকারী অধ্যাপক ডা. মোঃ আশরাফুজ্জামান সজিব, দেশের প্রথম ব্রেনডেথ রোগী হিসেবে কিডনী ও কর্ণিয়াদানকারী অঙ্গদাতা মহৎ জীবনের অধিকারী ২০ বছর বয়সী সারা ইসলামের মা শিক্ষিকা শবনম সুলতানা, কিডনী গ্রহীতা শামীমা আক্তার উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী এসময় কিডনী গ্রহীতা শামীমা আক্তার এবং ক্যাডাভেরিক অঙ্গদাতা সারা ইসলামের মা শিক্ষিকা শবনম সুলতানাকে মাতৃস্নেহে জড়িয়ে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শামীমা আক্তারের চিকিৎসার ব্যয়ভার নিজে বহন করবেন বলে উল্লেখ করেছেন। এছাড়া ব্রেন ডেথ রোগীর অঙ্গদান বা ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্ল্যান্ট কার্যক্রমকে উৎসাহিত করতে কমপক্ষে ২০টি ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্ল্যান্ট কার্যক্রম বিনামূল্যে সম্পন্ন করার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে দিকনির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।

উল্লেখ্য, ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্ল্যান্টের প্রথম অঙ্গদাতা হিসেবে চিকিৎসা বিজ্ঞানে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে ২০ বছর বয়সী সারা ইসলাম। গত ১৮ জানুয়ারি দিবাগত রাতে সারাহ ইসলাম ব্রেন ডেথ হওয়ার পরপরই তাঁর দুই কিডনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাডাভেরিক সেলের আহ্বায়ক ও রেনাল ট্রান্সপ্লান্টেশনের অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলালের নেতৃত্বে তার দুটি কিডনি বের করে আনেন। একটি কিডনি অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল শামীমা আক্তার নামের এক রোগীর দেহে সফলভার প্রতিস্থাপন করেন। সারা ইসলামের অপর কিডনিটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. একেএম খুরশিদুল আলমের নেতৃত্বে হাসিনা আক্তার নামের অপর এক রোগীর শরীরে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়। এছাড়াও সারাহ ইসলামের দুটি কর্নিয়া সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয় রোগী শিক্ষিকা ফেরদৌস আক্তার (৫৬) ও মোহাম্মদ সুজনের (২৩) দুজনের চোখে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরদৌসী আক্তারের চোখে অস্ত্রপচারের নেতৃত্ব দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিটি অফথালমোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শীষ রহমান। মোহাম্মদ সুজনের চোখের অস্ত্রোপচারের নেতৃত্ব দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রাজশ্রী দাশ। তারা এখন ভাল আছেন। এর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়েরর সাফল্যের তালিকায় আরেকটি মাইলফলক অর্জিত হয়েছে। সারা ইসলাম ১০ মাস বয়স থেকেই মস্তিষ্কে টিউমারসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। তাকে চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে ১৮ জানুয়ারি সন্ধ্যায় তাকে ‘ব্রেন ডেথ’ ঘোষণা করা হয়।

আপলোডকারীর তথ্য

চিকিৎসা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

আপডেট সময় ১১:১০:১৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ এপ্রিল ২০২৩

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কিডনী ট্রান্সপ্ল্যান্টসহ অত্যন্ত জটিল অস্ত্রোপচার সফলভাবে সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সক্ষমতা অজর্ন করেছে। তিনি দেশে ক্যাডাভেরিক অঙ্গদানের মহতী কার্যক্রমকে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার কথা উল্লেখ করে এক্ষেত্রে দেশবাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। যাতে করে কিডনী লিভারসহ বিভিন্ন অঙ্গের অভাব থেকে হাজার হাজার রোগীকে বাঁচানো যায় এবং তাদের একটি সুস্থ জীবন দান করা সম্ভব হয়। সোমবার ৩ এপ্রিল ২০২৩ইং তারিখে গণভবনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে সফল কিডনী প্রতিস্থাপনকারী অধ্যাপক ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান দুলালসহ চিকিৎসক টিম সাক্ষাত করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী এই আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী এসময় বাংলাদেশের চিকিৎসাসেবায় যুগান্তকারী অর্জন ও সাফল্যের অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্রেন ডেথ রোগীর অঙ্গদানের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো সফল ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্ল্যান্ট সম্পন্ন করায় অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ বর্তমান প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক টিমকে ধন্যবাদ জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসময় বলেন, চিকিৎসা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে। কিডনি প্রতিস্থাপনসহ বাংলাদেশে এখন অনেক জটিল অপারেশন সফলভাবে সম্পন্ন হচ্ছে। বাংলাদেশি চিকিৎসকদের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমরা মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিচ্ছি। চিকিৎসা খাতের উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন তিনি জানান, বর্তমান সরকার স্বাস্থ্য খাতকে অনেক গুরুত্ব দিচ্ছে।

সাক্ষাতকালে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ, প্রক্টর, ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক, রেনালট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জন অধ্যাপক ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান দুলাল, সহকারী প্রক্টর ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোঃ ফারুক হোসেন, এ্যানেথেশিয়া বিভাগের (আইসিইউ) সহকারী অধ্যাপক ডা. মোঃ আশরাফুজ্জামান সজিব, দেশের প্রথম ব্রেনডেথ রোগী হিসেবে কিডনী ও কর্ণিয়াদানকারী অঙ্গদাতা মহৎ জীবনের অধিকারী ২০ বছর বয়সী সারা ইসলামের মা শিক্ষিকা শবনম সুলতানা, কিডনী গ্রহীতা শামীমা আক্তার উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী এসময় কিডনী গ্রহীতা শামীমা আক্তার এবং ক্যাডাভেরিক অঙ্গদাতা সারা ইসলামের মা শিক্ষিকা শবনম সুলতানাকে মাতৃস্নেহে জড়িয়ে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শামীমা আক্তারের চিকিৎসার ব্যয়ভার নিজে বহন করবেন বলে উল্লেখ করেছেন। এছাড়া ব্রেন ডেথ রোগীর অঙ্গদান বা ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্ল্যান্ট কার্যক্রমকে উৎসাহিত করতে কমপক্ষে ২০টি ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্ল্যান্ট কার্যক্রম বিনামূল্যে সম্পন্ন করার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে দিকনির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।

উল্লেখ্য, ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্ল্যান্টের প্রথম অঙ্গদাতা হিসেবে চিকিৎসা বিজ্ঞানে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে ২০ বছর বয়সী সারা ইসলাম। গত ১৮ জানুয়ারি দিবাগত রাতে সারাহ ইসলাম ব্রেন ডেথ হওয়ার পরপরই তাঁর দুই কিডনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাডাভেরিক সেলের আহ্বায়ক ও রেনাল ট্রান্সপ্লান্টেশনের অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলালের নেতৃত্বে তার দুটি কিডনি বের করে আনেন। একটি কিডনি অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল শামীমা আক্তার নামের এক রোগীর দেহে সফলভার প্রতিস্থাপন করেন। সারা ইসলামের অপর কিডনিটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. একেএম খুরশিদুল আলমের নেতৃত্বে হাসিনা আক্তার নামের অপর এক রোগীর শরীরে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়। এছাড়াও সারাহ ইসলামের দুটি কর্নিয়া সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয় রোগী শিক্ষিকা ফেরদৌস আক্তার (৫৬) ও মোহাম্মদ সুজনের (২৩) দুজনের চোখে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরদৌসী আক্তারের চোখে অস্ত্রপচারের নেতৃত্ব দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিটি অফথালমোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শীষ রহমান। মোহাম্মদ সুজনের চোখের অস্ত্রোপচারের নেতৃত্ব দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রাজশ্রী দাশ। তারা এখন ভাল আছেন। এর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়েরর সাফল্যের তালিকায় আরেকটি মাইলফলক অর্জিত হয়েছে। সারা ইসলাম ১০ মাস বয়স থেকেই মস্তিষ্কে টিউমারসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। তাকে চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে ১৮ জানুয়ারি সন্ধ্যায় তাকে ‘ব্রেন ডেথ’ ঘোষণা করা হয়।