ঢাকা ০৪:৪৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুক্তিযুদ্ধে বিজয় ও গণমাধ্যমের ভূমিকা

লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসের সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে আমরা অর্জন করেছি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। যা বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ ও মহত্তম অর্জন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর ঝাঁপিয়ে পড়া, ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতার ঘোষণা ও বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে বাঙালির সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হয়। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয় বঙ্গবন্ধুর আকাঙ্খিত স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা তথা সুখী-সমৃদ্ধ, আধুনিক উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করার অঙ্গিকার নিয়ে এ বছর ৫৩তম বিজয় দিবস পালন করা হয়। মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা তথা বাঙালি জাতির চূড়ান্ত বিজয় অর্জনে গণমাধ্যমের অসামান্য অবদান রয়েছে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতির বিজয় অর্জনের পেছনে গণমাধ্যমের ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য। মুক্তিযুদ্ধকালে মুজিবনগর সরকার বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল, প্রবাসী বাঙালি এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বিভিন্ন ভাষায় প্রকাশিত নিয়মিত-অনিয়মিত বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ও সংবাদ মাধ্যমে পাকিস্তান বাহিনীর গণহত্যার বর্বরতা, সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ-দুর্দশা তুলে ধরা হয়, ফলে বিদেশি বন্ধু দেশগুলো সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। বিভিন্ন দেশ ও গোষ্ঠি সহমর্মিতা নিয়ে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ায়। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ধরণের পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ, সম্পাদকীয়, কবিতা, গান, প্রবন্ধ, কার্টুন, প্রভৃতির মাধ্যমে পাকিস্তানিদের নৃশংসতার নিন্দা-ক্ষোভ এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রতি সমর্থন জানানো হয়। যার ফলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জনগণের প্রতি জাতীয়-আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জনমত গড়ে উঠে। এতে বীর মুক্তিযোদ্ধারা অনুপ্রাণিত হন। জনগণের প্রত্যাশা বাড়ে, ভয়ভীতি উপেক্ষা করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঙালি যুবক-যুবতীরা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমের বলিষ্ঠ ভূমিকা সে সময় বিশ্ব বিবেককে নাড়া দেয়। নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও দেশি-বিদেশি গণমাধ্যম আমাদের মহান মুুক্তিযুদ্ধের তথা বাঙালি জনগণের পক্ষে ছিল। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ’৬৯ এর গণঅভ্যূত্থান, ’৭০ এর নির্বাচন এবং ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে দেশীয় সংবাদপত্র ও গণমাধ্যমগুলো স্বাধিকার আন্দোলনে সহায়ক ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে তদানীন্তন পাকিস্তান প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সাথে বঙ্গবন্ধুর বৈঠক চলাকালে ২২ মার্চ দেশের পত্রিকাগুলো “বাংলা স্বাধিকার” শিরোনামে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে। এতে বঙ্গবন্ধুর শুভেচ্ছা বাণী প্রকাশ করে এবং এতে বলা হয় “বাংলাদেশের ৭ কোটি মানুষের সার্বিক মুক্তির জন্য আমাদের এ সংগ্রাম, অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলবে।” এতে পাকিস্তান সরকার সংবাদপত্রের ওপর রুষ্ট হয় এবং সংবাদ প্রকাশের ব্যাপারে অনৈতিক চাপ সৃষ্টি করে। ২৫ মার্চ কালোরাতে পাকিস্তানী বাহিনী ‘দি পিপলস’ অফিসে আক্রমণ করে এবং এতে ৬ জন সাংবাদিক নিহত হন। ২৫ মার্চের “সার্চলাইট” নামের গণহত্যার খবর যাতে দেশ-বিদেশে প্রচার হতে না পারে, সেজন্য পাকিস্তানী বাহিনী হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অবস্থানরত বিদেশি সাংবাদিকদের আটক করে। অধিকন্ত ২৬ মার্চে দৈনিক ইত্তেফাক এবং ২৮ মার্চে দৈনিক সংবাদ পত্রিকা অফিস পুড়িয়ে দেয়। এসব সত্ত্বেও দেশি-বিদেশি সাংবাদিকেরা ও সংবাদমাধ্যমগুলো বিশ্বজনমত গঠন, পাকিস্তানি বর্বরতা সংবাদ পরিবেশন, নিন্দা জানানো ও মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল বাড়াতে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করেছে। মুক্তিযুদ্ধকালে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে ৬৪টি পত্রিকা প্রকাশের তথ্য পাওয়া যায়। এগুলোর মধ্যে কয়েকটি দৈনিক এবং বেশীর ভাগ সাপ্তাহিক, পাক্ষিক, মাসিক, সাময়িক, বুলেটিন, ম্যাগাজিন, নিউজ লেটার প্রভৃতি রয়েছে। এসব পত্রিকার মধ্যে মুজিবনগর সরকারের পক্ষ থেকে প্রকাশিত ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুখপত্র “জয় বাংলা” পত্রিকাটির সম্পাদকীয়তে মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশে পাকিস্তানি বাহিনীর বর্বর গণহত্যা, নারী ধর্ষণ, ধংসযজ্ঞের তীব্র নিন্দা ও ঘৃণা প্রকাশ করা হয়। বঙ্গবাণী পত্রিকা পাকিস্তানী বাহিনীর নির্মম হত্যাকান্ড ও ধ্বংসযজ্ঞ তুলে ধরে এর বিচার দাবি করে। স্বদেশ পত্রিকায় মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য এবং পাকিস্তানের বৈষম্যনীতি ইত্যাদি বিষয় উল্লেখ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যৌক্তিকতা তুলে ধরে এবং মানুষকে মুক্তিযুদ্ধে অনুপ্রাণিত করে। সে সময় আমাদের দেশীয় বিভিন্ন পত্রিকায় বিভিন্ন সংখ্যায় বঙ্গবন্ধু প্রহসনের বিচারের সমালোচনা, নারীদের প্রতি পাকিস্তানী বাহিনী নির্যাতন-নিপীড়ন, ধর্ষণ ইত্যাদি বিষয় উল্লেখ করা হয়। এ পত্রিকায় বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপক্ষে অবস্থানের জন্য বিশ্বের ২৪টি দেশের প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্ধিরা গান্ধীর আবেদন প্রকাশ করা হয়। রণাঙ্গন পত্রিকার সম্পাদকীয়তে ইয়াহিয়া খানের বিশ্বাসঘাতকতা, বঙ্গবন্ধু বিচারের সমালোচনা, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর বক্তব্যসহ মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণাদায়ক বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়। স্বাধীন বাংলার বিভিন্ন সংখ্যায় বাংলার নারী সমাজকে বাঁচানোর জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। উল্লেখিত পত্রিকাগুলো ছাড়াও মুক্তিযুদ্ধ, সোনার বাংলা, বিপ্লবী বাংলাদেশ, নতুন বাংলা, জাগ্রত বাংলা, অগ্রদূত, অভিযান, মুক্তি, দুর্জয় বাংলা, বাংলার মুখ, জন্মভূমি, সাপ্তাহিক বাংলা, দাবানল, স্বাধীন বাংলা সহ অনেক পত্রিকা সংবাদমাধ্যম নিজ নিজ অবস্থান থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। মুক্তিযুদ্ধচলাকালে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত এম আর আখতার মুকুলের “চরমপত্র” উৎসাহব্যঞ্জক গান-কবিতা, রম্যরচনা, দেশের জনগণ ও মুক্তিযোদ্ধাদের সাহস শক্তি যুগিয়েছে। আমাদের স্বাধীনতা অর্জনে শুধু দেশীয় গণমাধ্যম নয়, বরং বিদেশি-গণমাধ্যমও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে পাকিস্তান ক্ষমতা হস্তান্তর না করায় বিদেশি সাংবাদিকেরা বিষয়টি গুরুত্বের সাথে পর্যবেক্ষণ করেন এবং তা বর্হিবিশ্বে প্রচার করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের শুরু থেকে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন, স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ, ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষণ, ইয়াহিয়া খানের ডায়ালগ নাটক ইত্যাদি ঘটনা ২৫ মার্চের “সার্চলাইট” নামের গণহত্যার খবর যাতে দেশ-বিদেশে প্রচার হতে না পারে, সেইজন্যে পাকিস্তান সরকার সাংবাদিকদের নানাধরণের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে এবং দেশি-বিদেশি অনেক সাংবাদিককে আটক করে। ২৬ মার্চ কলকাতা আকাশবাণী, বিবিসিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে গুরুত্বসহকারে গণহত্যার বিবরণ প্রচার করতে থাকে। ১৯৭১ সালের ২৮ মার্চ লন্ডনের “দ্যা অবজারভার” বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে একাধিকবার প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এর একটি প্রতিবেদনে লেখা হয় রাশিয়া বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিতে পারে। মস্কো উপলব্ধি করতে পেরেছে পরাশক্তিগুলো যদি বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়, তবে পাকিস্তানের গণহত্যা বন্ধ হতে পারে। অন্য একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, অভ্যুত্থানের নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবস্থান সম্পর্কে পরস্পরবিরোধী খবর পাওয়া গেছে। পাকিস্তান সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, শেখ মুজিবকে তারা ঢাকায় তার নিজ বাসভবনে আটক রেখেছে। অন্যদিকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, তিনি চট্টগ্রামে রয়েছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্ধিরা গান্ধী বলেছেন, আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি, উপযুক্ত সময়ে ব্যবস্থা নেব। লন্ডনে ডেইলি টেলিগ্রাফ ৩০ মার্চ ১৯৭১ সালে সাংবাদিক সায়মন ড্রিংয়ের একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে, তিনি ২৫ মার্চের গণহত্যার সময় বাংলাদেশে ছিলেন। প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেন পাকিস্তান সেনাবাহিনী ঠান্ডা মাথায় ২৪ ঘন্টায় অবিরাম গুলিবর্ষণ করে প্রায় ৭০ হাজার মানুষকে হত্যা করে। টাইম সাময়িকী ১৯৭১ সালে ১২ এপ্রিল এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যাতে তারা উল্লেখ করে পশ্চিম পাকিস্তানী সেনাবাহিনী সম্ভবত কিছু সময়ের জন্য ঢাকাসহ পূর্বাংশের শহরগুলোর নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে পারবে। কিন্তু অনির্দিষ্টকাল ৫৫ হাজার বর্গমাইলের বিশাল অঞ্চল তারা ধরে রাখতে পারবে না।
১৯৭১ সালের ১২ এপ্রিল ‘নিউজউইক’ ‘একটি আদর্শের মৃত্যু’ শিরোনামে নিউজ ছাপে। এতে বাঙালির আত্মবিশ্বাস গণজাগরণ ও পাকিস্তানীদের প্রতি তাদের ঘৃণার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তুলে ধরা হয়। ডেট্রয়েট ফ্রি প্রেস ১৯৭১ সালের ১৪ এপ্রিল এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যাতে উল্লেখ করে ‘পাকিস্তানের সঙ্গে গৃহযুদ্ধে লিপ্ত বাংলাদেশের বিচ্ছিন্নতবাদী সরকার পূর্ব পাকিস্তানের নিজের সার্বভৌমত্ব ঘোষণা করেছে এবং বিশ্বের সব গণতান্ত্রিক দেশের প্রতি স্বীকৃতি ও সহায়তার আবেদন জানিয়েছে।’ সে সময় ঘানার একটি সাপ্তাহিক- এর এক সম্পাদকীয়তে উল্লেখ করে, ‘ইয়াহিয়া খান’ সংখ্যালঘুর শাসন কায়েম করেছেন। তাই বিশ্বের শান্তিপ্রিয় দেশগুলোর উচিত, সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ করে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর ত্বরান্বিত করা।’ বিবিসির সাংবাদিক মার্ক টালির নিরপেক্ষ সংবাদমাধ্যমে বিশ্ববাসী প্রতিদিন মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত তথ্য তথা পাকিস্তানি বর্বরতা-নৃশংসতার খবর জানতে পেরেছে। এতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সমর্থন বেড়েছে। মার্ক টালির মতো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সিডনি শনবার্গ, অ্যান্থনি মাসকারেনহাস, সাইমন ড্রিং, অ্যালেন গিন্সবাগ, নিকোলাস টোমালিন, মার্টিন গুনাকাট, জন পিলজার, ডেভিড, পিটার হাজেন হার্স্ট প্রমুখ সাংবাদিক সংবাদ সংগ্রহ ও পরিবেশন করেছেন। এছাড়া যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মান, জাপানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অনেক সাংবাদিক মুক্তিযুদ্ধকালে বাংলাদেশে প্রবেশ করে প্রকৃত ঘটনা বিশ্ববাসীর কাছে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। তাদের সাহসিকতা ও সংবাদ প্রকাশের কারণে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন ত্বরান্তি¦ত হয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনে দেশি-বিদেশি গণমাধ্যম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে গণমাধ্যমের সাহসী ভূমিকা নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা আমাদের দায়িত্ব।

লেখক পরিচিতি: লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল (শিক্ষক, গবেষক, কলাম লেখক, সমাজসেবক ও সংগঠক) সভাপতি, বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদ, কেন্দ্রীয় কমিটি।

আপলোডকারীর তথ্য

মুক্তিযুদ্ধে বিজয় ও গণমাধ্যমের ভূমিকা

আপডেট সময় ০৩:২৯:১৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩

লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসের সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে আমরা অর্জন করেছি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। যা বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ ও মহত্তম অর্জন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর ঝাঁপিয়ে পড়া, ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতার ঘোষণা ও বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে বাঙালির সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হয়। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয় বঙ্গবন্ধুর আকাঙ্খিত স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা তথা সুখী-সমৃদ্ধ, আধুনিক উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করার অঙ্গিকার নিয়ে এ বছর ৫৩তম বিজয় দিবস পালন করা হয়। মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা তথা বাঙালি জাতির চূড়ান্ত বিজয় অর্জনে গণমাধ্যমের অসামান্য অবদান রয়েছে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতির বিজয় অর্জনের পেছনে গণমাধ্যমের ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য। মুক্তিযুদ্ধকালে মুজিবনগর সরকার বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল, প্রবাসী বাঙালি এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বিভিন্ন ভাষায় প্রকাশিত নিয়মিত-অনিয়মিত বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ও সংবাদ মাধ্যমে পাকিস্তান বাহিনীর গণহত্যার বর্বরতা, সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ-দুর্দশা তুলে ধরা হয়, ফলে বিদেশি বন্ধু দেশগুলো সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। বিভিন্ন দেশ ও গোষ্ঠি সহমর্মিতা নিয়ে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ায়। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ধরণের পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ, সম্পাদকীয়, কবিতা, গান, প্রবন্ধ, কার্টুন, প্রভৃতির মাধ্যমে পাকিস্তানিদের নৃশংসতার নিন্দা-ক্ষোভ এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রতি সমর্থন জানানো হয়। যার ফলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জনগণের প্রতি জাতীয়-আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জনমত গড়ে উঠে। এতে বীর মুক্তিযোদ্ধারা অনুপ্রাণিত হন। জনগণের প্রত্যাশা বাড়ে, ভয়ভীতি উপেক্ষা করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঙালি যুবক-যুবতীরা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমের বলিষ্ঠ ভূমিকা সে সময় বিশ্ব বিবেককে নাড়া দেয়। নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও দেশি-বিদেশি গণমাধ্যম আমাদের মহান মুুক্তিযুদ্ধের তথা বাঙালি জনগণের পক্ষে ছিল। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ’৬৯ এর গণঅভ্যূত্থান, ’৭০ এর নির্বাচন এবং ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে দেশীয় সংবাদপত্র ও গণমাধ্যমগুলো স্বাধিকার আন্দোলনে সহায়ক ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে তদানীন্তন পাকিস্তান প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সাথে বঙ্গবন্ধুর বৈঠক চলাকালে ২২ মার্চ দেশের পত্রিকাগুলো “বাংলা স্বাধিকার” শিরোনামে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে। এতে বঙ্গবন্ধুর শুভেচ্ছা বাণী প্রকাশ করে এবং এতে বলা হয় “বাংলাদেশের ৭ কোটি মানুষের সার্বিক মুক্তির জন্য আমাদের এ সংগ্রাম, অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলবে।” এতে পাকিস্তান সরকার সংবাদপত্রের ওপর রুষ্ট হয় এবং সংবাদ প্রকাশের ব্যাপারে অনৈতিক চাপ সৃষ্টি করে। ২৫ মার্চ কালোরাতে পাকিস্তানী বাহিনী ‘দি পিপলস’ অফিসে আক্রমণ করে এবং এতে ৬ জন সাংবাদিক নিহত হন। ২৫ মার্চের “সার্চলাইট” নামের গণহত্যার খবর যাতে দেশ-বিদেশে প্রচার হতে না পারে, সেজন্য পাকিস্তানী বাহিনী হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অবস্থানরত বিদেশি সাংবাদিকদের আটক করে। অধিকন্ত ২৬ মার্চে দৈনিক ইত্তেফাক এবং ২৮ মার্চে দৈনিক সংবাদ পত্রিকা অফিস পুড়িয়ে দেয়। এসব সত্ত্বেও দেশি-বিদেশি সাংবাদিকেরা ও সংবাদমাধ্যমগুলো বিশ্বজনমত গঠন, পাকিস্তানি বর্বরতা সংবাদ পরিবেশন, নিন্দা জানানো ও মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল বাড়াতে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করেছে। মুক্তিযুদ্ধকালে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে ৬৪টি পত্রিকা প্রকাশের তথ্য পাওয়া যায়। এগুলোর মধ্যে কয়েকটি দৈনিক এবং বেশীর ভাগ সাপ্তাহিক, পাক্ষিক, মাসিক, সাময়িক, বুলেটিন, ম্যাগাজিন, নিউজ লেটার প্রভৃতি রয়েছে। এসব পত্রিকার মধ্যে মুজিবনগর সরকারের পক্ষ থেকে প্রকাশিত ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুখপত্র “জয় বাংলা” পত্রিকাটির সম্পাদকীয়তে মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশে পাকিস্তানি বাহিনীর বর্বর গণহত্যা, নারী ধর্ষণ, ধংসযজ্ঞের তীব্র নিন্দা ও ঘৃণা প্রকাশ করা হয়। বঙ্গবাণী পত্রিকা পাকিস্তানী বাহিনীর নির্মম হত্যাকান্ড ও ধ্বংসযজ্ঞ তুলে ধরে এর বিচার দাবি করে। স্বদেশ পত্রিকায় মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য এবং পাকিস্তানের বৈষম্যনীতি ইত্যাদি বিষয় উল্লেখ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যৌক্তিকতা তুলে ধরে এবং মানুষকে মুক্তিযুদ্ধে অনুপ্রাণিত করে। সে সময় আমাদের দেশীয় বিভিন্ন পত্রিকায় বিভিন্ন সংখ্যায় বঙ্গবন্ধু প্রহসনের বিচারের সমালোচনা, নারীদের প্রতি পাকিস্তানী বাহিনী নির্যাতন-নিপীড়ন, ধর্ষণ ইত্যাদি বিষয় উল্লেখ করা হয়। এ পত্রিকায় বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপক্ষে অবস্থানের জন্য বিশ্বের ২৪টি দেশের প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্ধিরা গান্ধীর আবেদন প্রকাশ করা হয়। রণাঙ্গন পত্রিকার সম্পাদকীয়তে ইয়াহিয়া খানের বিশ্বাসঘাতকতা, বঙ্গবন্ধু বিচারের সমালোচনা, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর বক্তব্যসহ মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণাদায়ক বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়। স্বাধীন বাংলার বিভিন্ন সংখ্যায় বাংলার নারী সমাজকে বাঁচানোর জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। উল্লেখিত পত্রিকাগুলো ছাড়াও মুক্তিযুদ্ধ, সোনার বাংলা, বিপ্লবী বাংলাদেশ, নতুন বাংলা, জাগ্রত বাংলা, অগ্রদূত, অভিযান, মুক্তি, দুর্জয় বাংলা, বাংলার মুখ, জন্মভূমি, সাপ্তাহিক বাংলা, দাবানল, স্বাধীন বাংলা সহ অনেক পত্রিকা সংবাদমাধ্যম নিজ নিজ অবস্থান থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। মুক্তিযুদ্ধচলাকালে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত এম আর আখতার মুকুলের “চরমপত্র” উৎসাহব্যঞ্জক গান-কবিতা, রম্যরচনা, দেশের জনগণ ও মুক্তিযোদ্ধাদের সাহস শক্তি যুগিয়েছে। আমাদের স্বাধীনতা অর্জনে শুধু দেশীয় গণমাধ্যম নয়, বরং বিদেশি-গণমাধ্যমও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে পাকিস্তান ক্ষমতা হস্তান্তর না করায় বিদেশি সাংবাদিকেরা বিষয়টি গুরুত্বের সাথে পর্যবেক্ষণ করেন এবং তা বর্হিবিশ্বে প্রচার করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের শুরু থেকে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন, স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ, ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষণ, ইয়াহিয়া খানের ডায়ালগ নাটক ইত্যাদি ঘটনা ২৫ মার্চের “সার্চলাইট” নামের গণহত্যার খবর যাতে দেশ-বিদেশে প্রচার হতে না পারে, সেইজন্যে পাকিস্তান সরকার সাংবাদিকদের নানাধরণের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে এবং দেশি-বিদেশি অনেক সাংবাদিককে আটক করে। ২৬ মার্চ কলকাতা আকাশবাণী, বিবিসিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে গুরুত্বসহকারে গণহত্যার বিবরণ প্রচার করতে থাকে। ১৯৭১ সালের ২৮ মার্চ লন্ডনের “দ্যা অবজারভার” বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে একাধিকবার প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এর একটি প্রতিবেদনে লেখা হয় রাশিয়া বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিতে পারে। মস্কো উপলব্ধি করতে পেরেছে পরাশক্তিগুলো যদি বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়, তবে পাকিস্তানের গণহত্যা বন্ধ হতে পারে। অন্য একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, অভ্যুত্থানের নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবস্থান সম্পর্কে পরস্পরবিরোধী খবর পাওয়া গেছে। পাকিস্তান সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, শেখ মুজিবকে তারা ঢাকায় তার নিজ বাসভবনে আটক রেখেছে। অন্যদিকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, তিনি চট্টগ্রামে রয়েছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্ধিরা গান্ধী বলেছেন, আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি, উপযুক্ত সময়ে ব্যবস্থা নেব। লন্ডনে ডেইলি টেলিগ্রাফ ৩০ মার্চ ১৯৭১ সালে সাংবাদিক সায়মন ড্রিংয়ের একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে, তিনি ২৫ মার্চের গণহত্যার সময় বাংলাদেশে ছিলেন। প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেন পাকিস্তান সেনাবাহিনী ঠান্ডা মাথায় ২৪ ঘন্টায় অবিরাম গুলিবর্ষণ করে প্রায় ৭০ হাজার মানুষকে হত্যা করে। টাইম সাময়িকী ১৯৭১ সালে ১২ এপ্রিল এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যাতে তারা উল্লেখ করে পশ্চিম পাকিস্তানী সেনাবাহিনী সম্ভবত কিছু সময়ের জন্য ঢাকাসহ পূর্বাংশের শহরগুলোর নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে পারবে। কিন্তু অনির্দিষ্টকাল ৫৫ হাজার বর্গমাইলের বিশাল অঞ্চল তারা ধরে রাখতে পারবে না।
১৯৭১ সালের ১২ এপ্রিল ‘নিউজউইক’ ‘একটি আদর্শের মৃত্যু’ শিরোনামে নিউজ ছাপে। এতে বাঙালির আত্মবিশ্বাস গণজাগরণ ও পাকিস্তানীদের প্রতি তাদের ঘৃণার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তুলে ধরা হয়। ডেট্রয়েট ফ্রি প্রেস ১৯৭১ সালের ১৪ এপ্রিল এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যাতে উল্লেখ করে ‘পাকিস্তানের সঙ্গে গৃহযুদ্ধে লিপ্ত বাংলাদেশের বিচ্ছিন্নতবাদী সরকার পূর্ব পাকিস্তানের নিজের সার্বভৌমত্ব ঘোষণা করেছে এবং বিশ্বের সব গণতান্ত্রিক দেশের প্রতি স্বীকৃতি ও সহায়তার আবেদন জানিয়েছে।’ সে সময় ঘানার একটি সাপ্তাহিক- এর এক সম্পাদকীয়তে উল্লেখ করে, ‘ইয়াহিয়া খান’ সংখ্যালঘুর শাসন কায়েম করেছেন। তাই বিশ্বের শান্তিপ্রিয় দেশগুলোর উচিত, সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ করে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর ত্বরান্বিত করা।’ বিবিসির সাংবাদিক মার্ক টালির নিরপেক্ষ সংবাদমাধ্যমে বিশ্ববাসী প্রতিদিন মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত তথ্য তথা পাকিস্তানি বর্বরতা-নৃশংসতার খবর জানতে পেরেছে। এতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সমর্থন বেড়েছে। মার্ক টালির মতো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সিডনি শনবার্গ, অ্যান্থনি মাসকারেনহাস, সাইমন ড্রিং, অ্যালেন গিন্সবাগ, নিকোলাস টোমালিন, মার্টিন গুনাকাট, জন পিলজার, ডেভিড, পিটার হাজেন হার্স্ট প্রমুখ সাংবাদিক সংবাদ সংগ্রহ ও পরিবেশন করেছেন। এছাড়া যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মান, জাপানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অনেক সাংবাদিক মুক্তিযুদ্ধকালে বাংলাদেশে প্রবেশ করে প্রকৃত ঘটনা বিশ্ববাসীর কাছে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। তাদের সাহসিকতা ও সংবাদ প্রকাশের কারণে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন ত্বরান্তি¦ত হয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনে দেশি-বিদেশি গণমাধ্যম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে গণমাধ্যমের সাহসী ভূমিকা নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা আমাদের দায়িত্ব।

লেখক পরিচিতি: লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল (শিক্ষক, গবেষক, কলাম লেখক, সমাজসেবক ও সংগঠক) সভাপতি, বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদ, কেন্দ্রীয় কমিটি।