ঢাকা ১২:৩৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

রমজানে স্বাস্থ্যকর খাবার

মোঃ আবদুল আউয়াল সরকার:

রমজান মাস। মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য পবিত্র এ মাস। রমজান সিয়াম সাধনার মাস। রোজা রেখে দিন শেষে অতিরিক্ত ক্লান্ত হয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেতে সাহরি ও ইফতারের খাবারটা হওয়া উচিত সমৃদ্ধ ও পুষ্টিকর শরীরকে দৈনন্দিন কাজে কর্মক্ষম রাখা, অতিরিক্ত ক্লান্ত হয়ে না পড়া এবং শরীরের পুষ্টির চাহিদা যাতে পূরণ হয়- সে দিকে নজর রেখে ইফতার, রাতের খাবার ও সাহরি এই তিনটি খাবারকে সাজাতে হবে। পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন যাতে দেখা না যায় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।

একজন পূর্ণবয়স্ক লোকের দৈনিক দুই থেকে আড়াই লিটার পর্যন্ত পানি পান করা প্রয়োজন হয়। প্রয়োজনীয় পানি গ্রহণের ফলেই দেহে পানির ভারসাম্য ঠিক থাকে। রোজার সময় অনেকেরই পানিশূন্যতা দেখা যায়। কিন্তু যদি ইফতারির সময় থেকে সাহরি পর্যন্ত পানির চাহিদা পুরো মেটানো যায় তাহলে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। এজন্যই বোধ করি রমজান মাসে ইফতারের প্রথম উপাদান হিসেবে শরবতের প্রচলন হয়েছে। বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে শরবত তৈরি করা যায়। যেমন স্কোয়াশ, বিভিন্ন ফলের রস, সিরাপ, ইসপগুল, তোকমা, দুধ, দই, তেঁতুল, বেল, লেবু, লাচ্ছি ইত্যাদি। শরবত ছাড়াও পানির সমতা ঠিক রাখতে ইফতারে রাখা যেতে পারে ভেজানো চিড়া + দুধ/দই, দইবড়া, হালিম, ফালুদা, তাজা ফল ইত্যাদি। সন্ধ্যা রাতে ও সাহরিতে থাকতে পারে পাতলা ডাল, দুধ। পাতলা ঝোলের তরকারি রাখতে পারলে ভালো হয়। ইফতারির অন্যতম প্রধান উপাদান হলো ছোলা বা বুট ভাজা। এটি যেমন শক্তিবর্ধক, তেমনি এতে প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেটের চাহিদা ভালোভাবে মেটানো যায়। অবশ্যই চাহিদা অনুযায়ী খাওয়া উচিত। তা না হলে ওজন বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। ছোলা ছাড়াও খাওয়া যায় চটপটি, ঘুগনি ইত্যাদি। এগুলোতে তেলের ব্যবহার তেমন হয় না বলে স্বাস্থ্যের দিক থেকে ভালো। এদিকে অন্যান্য উপাদানে তেলের ব্যবহার বেশি হয় বলে খাবারে ক্যালরির মাত্রা বেড়ে যায়।

একটি আদর্শ ইফতারির প্লেট শরবত বা ডাবের পানি, কাঁচা ছোলা, কম তেলে ভাজা ছোলা, পেঁয়াজু, বেগুনি অথবা আলুর চপ বা যে কোনো একটি তেলে ভাজা মুড়ি অথবা চিড়া এবং ফল। যেদিন হালিম অথবা খিচুড়ি খাওয়া হবে সেদিন বেসনের বা ডালের তৈরি ভাজা খাবার এবং মুড়ি বা চিড়া বাদ দিতে পারেন। আবার নুডলস অথবা ফ্রায়েড রাইস খেলেও মুড়ি অথবা চিড়া বাদ দিতে হবে। ইফতারির কাঁচা ছোলার সঙ্গে আদা কুচি, লবণ ও পুদিনা পাতা কুচি দিয়ে খাওয়া যায়। এটা হজমে যেমন সহায়ক, তেমনি ভিটামিন ও খনিজ লবণের ঘাটতি এতে দূর হবে। রমজানের সময় ইফতারিতে খেজুর একটি বিশেষ উপাদান হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। প্রতিদিন অন্যান্য খাবারের সঙ্গে একটি বা দুটির বেশি খেজুর খাওয়ার তেমন প্রয়োজন নেই। কারণ, এতে ক্যালরি ও শর্করার পরিমাণ বেশি থাকে। যদিও পর্যাপ্ত লৌহ খেজুর থেকে পাওয়া সম্ভব।

ইফতারে কী খাবেন: রোজা রাখার পর ইফতার প্রথম খাবার। তাই সেটা স্বাস্থ্যকর হওয়া প্রয়োজন। সাধারণত আমরা ইফতারে মুখরোচক, ভাজাপোড়া খাবার খেয়ে থাকি। এগুলোতে প্রচুর তেলের ব্যবহার হয়, যা শরীরে ট্রান্সফ্যাট তৈরি করে। যারা বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে আছেন, তাদের ঝুঁকি আরো বাড়িয়ে তোলে। এছাড়াও এসব খাবারে প্রচুর লবণ রয়েছে, যা শরীরকে পানিশূণ্য করে। অ্যাসিডিটি বাড়ায়, অস্বস্তি তৈরি করে। তাই, এধরণের খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো। এজন্য বাড়িতে তৈরি স্বাস্থ্যকর খাবারের ওপর জোর দিতে হবে। যেমন চিকেন ফ্রাইয়ের বদলে বাসায় তৈরি গ্রিল চিকেন খাওয়া যেতে পারে। খাবারে কিছুটা শর্করা যোগ করতে হবে। সেটা হতে পারে চিড়ে, মুড়ি বা লাল আটার তৈরি একটা পাতলা রুটি, এমনকি সামান্য ভাতও হতে পারে। সেই সাথে অবশ্যই সবজি থাকতে হবে। সারাদিনে তিন থেকে চার পরিবেশনে সবজি খাওয়া উচিত। এক্ষেত্রেও আমরা সবজিকে তিনবারের খাবারে ভাগ করে খেতে পারি। প্রতিদিন বেগুনি বা ডুবোতেলে ভাজা না খেয়ে, সবজি দিয়ে তৈরি শ্যালো ফ্রাই করা চপ, সবজি-খিচুড়ি বা রুটি-সবজি থাকতে পারে খাদ্য-তালিকায়। পানি ও খেজুর হতে পারে ইফতার অনুসঙ্গ। তরল খাবারের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। বাজারের রঙিন পানীয় এড়িয়ে চলতে হবে। এই গরমে ঘরে তৈরি লেবুর শরবত, বেলের শরবত, ডাবের পানি খুব দ্রুত শক্তি প্রদান করে এবং শরীরকে ঠান্ডা রাখে। অবশ্যই মৌসুমী ফল রাখতে হবে। ফল থেকে পাওয়া যায় ভিটামিন সি, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। রকমারি ফল ইফতারকে সমৃদ্ধ করবে। এই মৌসুমে যেসব দেশি ফল বাজারে পাওয়া যাচ্ছে সেগুলো খেতে হবে। ফলের জুসের সাথে অতিরিক্ত চিনি না খাওয়াই ভালো। মাছ, মাংস বা ডিম দিয়ে তৈরি কোনো খাবার থাকতে পারে। সারাদিন রোজার পরে আমিষের অভাব পূরণ করবে। হালিমের বদলে সবজি খিচুড়ি খাওয়া ভালো।

রাতের খাবার: রাতের খাবার অবশ্যই খেতে হবে। রাতের খাবারে দুধ মুড়ি, দুধ ভাত, অথবা দুধের সাথে ওটস বা সিরিয়াল খাওয়া যেতে পারে। এছাড়া ইফতারে বেশি ভারী খাবার না খেয়ে এ সময়টাতে পাতলা খিচুড়ি, রুটি-সবজি, ভাত, মাছ-মাংস, খাওয়া যেতে পারে। তারাবীহ নামাজের পর ডিনার করা ভালো।রোজার সময় সন্ধ্যারাতের খাবারের গুরুত্ব তেমন থাকে না। মনে হয়, খেতে হবে তাই খাওয়া। তারপরও কেউ যদি খেতে চান তাহলে যেন খাবার গুরুপাক ও বেশি হয়ে না যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। যেহেতু ইফতারিতে ডালের তৈরি খাবার বেশি হয়, সেহেতু এ সময় ডাল বাদ দেওয়া যেতে পারে। এ সময় হালকা মশলায় রান্না করা মাছ ও সবজি থাকলে ভালো হয়। ইফতার ও সাহরিতে অনেক সময় সবজি খাওয়াটা বাদ পড়ে যায়। অনেকেই রমজানে সবজি একেবারেই পছন্দ করেন না। তাদের জন্য সন্ধ্যারাতেই সবজি খাওয়ার উপযুক্ত সময়।

এ রাতে খাবারে ছোট মাছও রাখা যেতে পারে।
সাহরির খাবার: সাহরিতে খাবার না খান তাহলে অবশ্যই দুর্বল হয়ে পড়বেন। এতে ক্যালরির ঘাটতি দেখা দেবে। ফলে এক মাস রোজা রাখা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। সাহরির সময় না খেলে আমাদের দেহের বিপাকক্রিয়ায় বেশ পরিবর্তন আসতে পারে। এতে গ্লুকোজ ক্ষয় বেশি হয় বলে ক্লান্তি আসে।এজন্য সঠিক ধরনের খাবার খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ যা সারাদিনের ক্ষুধা মোকাবেলায় সাহায্য করবে।

লেখক: চিকিৎসা প্রযুক্তিবিদ, শিক্ষক ও গণমাধ্যমকর্মী।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা

রমজানে স্বাস্থ্যকর খাবার

আপডেট সময় ০১:২৫:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ মার্চ ২০২৪

মোঃ আবদুল আউয়াল সরকার:

রমজান মাস। মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য পবিত্র এ মাস। রমজান সিয়াম সাধনার মাস। রোজা রেখে দিন শেষে অতিরিক্ত ক্লান্ত হয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেতে সাহরি ও ইফতারের খাবারটা হওয়া উচিত সমৃদ্ধ ও পুষ্টিকর শরীরকে দৈনন্দিন কাজে কর্মক্ষম রাখা, অতিরিক্ত ক্লান্ত হয়ে না পড়া এবং শরীরের পুষ্টির চাহিদা যাতে পূরণ হয়- সে দিকে নজর রেখে ইফতার, রাতের খাবার ও সাহরি এই তিনটি খাবারকে সাজাতে হবে। পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন যাতে দেখা না যায় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।

একজন পূর্ণবয়স্ক লোকের দৈনিক দুই থেকে আড়াই লিটার পর্যন্ত পানি পান করা প্রয়োজন হয়। প্রয়োজনীয় পানি গ্রহণের ফলেই দেহে পানির ভারসাম্য ঠিক থাকে। রোজার সময় অনেকেরই পানিশূন্যতা দেখা যায়। কিন্তু যদি ইফতারির সময় থেকে সাহরি পর্যন্ত পানির চাহিদা পুরো মেটানো যায় তাহলে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। এজন্যই বোধ করি রমজান মাসে ইফতারের প্রথম উপাদান হিসেবে শরবতের প্রচলন হয়েছে। বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে শরবত তৈরি করা যায়। যেমন স্কোয়াশ, বিভিন্ন ফলের রস, সিরাপ, ইসপগুল, তোকমা, দুধ, দই, তেঁতুল, বেল, লেবু, লাচ্ছি ইত্যাদি। শরবত ছাড়াও পানির সমতা ঠিক রাখতে ইফতারে রাখা যেতে পারে ভেজানো চিড়া + দুধ/দই, দইবড়া, হালিম, ফালুদা, তাজা ফল ইত্যাদি। সন্ধ্যা রাতে ও সাহরিতে থাকতে পারে পাতলা ডাল, দুধ। পাতলা ঝোলের তরকারি রাখতে পারলে ভালো হয়। ইফতারির অন্যতম প্রধান উপাদান হলো ছোলা বা বুট ভাজা। এটি যেমন শক্তিবর্ধক, তেমনি এতে প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেটের চাহিদা ভালোভাবে মেটানো যায়। অবশ্যই চাহিদা অনুযায়ী খাওয়া উচিত। তা না হলে ওজন বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। ছোলা ছাড়াও খাওয়া যায় চটপটি, ঘুগনি ইত্যাদি। এগুলোতে তেলের ব্যবহার তেমন হয় না বলে স্বাস্থ্যের দিক থেকে ভালো। এদিকে অন্যান্য উপাদানে তেলের ব্যবহার বেশি হয় বলে খাবারে ক্যালরির মাত্রা বেড়ে যায়।

একটি আদর্শ ইফতারির প্লেট শরবত বা ডাবের পানি, কাঁচা ছোলা, কম তেলে ভাজা ছোলা, পেঁয়াজু, বেগুনি অথবা আলুর চপ বা যে কোনো একটি তেলে ভাজা মুড়ি অথবা চিড়া এবং ফল। যেদিন হালিম অথবা খিচুড়ি খাওয়া হবে সেদিন বেসনের বা ডালের তৈরি ভাজা খাবার এবং মুড়ি বা চিড়া বাদ দিতে পারেন। আবার নুডলস অথবা ফ্রায়েড রাইস খেলেও মুড়ি অথবা চিড়া বাদ দিতে হবে। ইফতারির কাঁচা ছোলার সঙ্গে আদা কুচি, লবণ ও পুদিনা পাতা কুচি দিয়ে খাওয়া যায়। এটা হজমে যেমন সহায়ক, তেমনি ভিটামিন ও খনিজ লবণের ঘাটতি এতে দূর হবে। রমজানের সময় ইফতারিতে খেজুর একটি বিশেষ উপাদান হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। প্রতিদিন অন্যান্য খাবারের সঙ্গে একটি বা দুটির বেশি খেজুর খাওয়ার তেমন প্রয়োজন নেই। কারণ, এতে ক্যালরি ও শর্করার পরিমাণ বেশি থাকে। যদিও পর্যাপ্ত লৌহ খেজুর থেকে পাওয়া সম্ভব।

ইফতারে কী খাবেন: রোজা রাখার পর ইফতার প্রথম খাবার। তাই সেটা স্বাস্থ্যকর হওয়া প্রয়োজন। সাধারণত আমরা ইফতারে মুখরোচক, ভাজাপোড়া খাবার খেয়ে থাকি। এগুলোতে প্রচুর তেলের ব্যবহার হয়, যা শরীরে ট্রান্সফ্যাট তৈরি করে। যারা বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে আছেন, তাদের ঝুঁকি আরো বাড়িয়ে তোলে। এছাড়াও এসব খাবারে প্রচুর লবণ রয়েছে, যা শরীরকে পানিশূণ্য করে। অ্যাসিডিটি বাড়ায়, অস্বস্তি তৈরি করে। তাই, এধরণের খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো। এজন্য বাড়িতে তৈরি স্বাস্থ্যকর খাবারের ওপর জোর দিতে হবে। যেমন চিকেন ফ্রাইয়ের বদলে বাসায় তৈরি গ্রিল চিকেন খাওয়া যেতে পারে। খাবারে কিছুটা শর্করা যোগ করতে হবে। সেটা হতে পারে চিড়ে, মুড়ি বা লাল আটার তৈরি একটা পাতলা রুটি, এমনকি সামান্য ভাতও হতে পারে। সেই সাথে অবশ্যই সবজি থাকতে হবে। সারাদিনে তিন থেকে চার পরিবেশনে সবজি খাওয়া উচিত। এক্ষেত্রেও আমরা সবজিকে তিনবারের খাবারে ভাগ করে খেতে পারি। প্রতিদিন বেগুনি বা ডুবোতেলে ভাজা না খেয়ে, সবজি দিয়ে তৈরি শ্যালো ফ্রাই করা চপ, সবজি-খিচুড়ি বা রুটি-সবজি থাকতে পারে খাদ্য-তালিকায়। পানি ও খেজুর হতে পারে ইফতার অনুসঙ্গ। তরল খাবারের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। বাজারের রঙিন পানীয় এড়িয়ে চলতে হবে। এই গরমে ঘরে তৈরি লেবুর শরবত, বেলের শরবত, ডাবের পানি খুব দ্রুত শক্তি প্রদান করে এবং শরীরকে ঠান্ডা রাখে। অবশ্যই মৌসুমী ফল রাখতে হবে। ফল থেকে পাওয়া যায় ভিটামিন সি, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। রকমারি ফল ইফতারকে সমৃদ্ধ করবে। এই মৌসুমে যেসব দেশি ফল বাজারে পাওয়া যাচ্ছে সেগুলো খেতে হবে। ফলের জুসের সাথে অতিরিক্ত চিনি না খাওয়াই ভালো। মাছ, মাংস বা ডিম দিয়ে তৈরি কোনো খাবার থাকতে পারে। সারাদিন রোজার পরে আমিষের অভাব পূরণ করবে। হালিমের বদলে সবজি খিচুড়ি খাওয়া ভালো।

রাতের খাবার: রাতের খাবার অবশ্যই খেতে হবে। রাতের খাবারে দুধ মুড়ি, দুধ ভাত, অথবা দুধের সাথে ওটস বা সিরিয়াল খাওয়া যেতে পারে। এছাড়া ইফতারে বেশি ভারী খাবার না খেয়ে এ সময়টাতে পাতলা খিচুড়ি, রুটি-সবজি, ভাত, মাছ-মাংস, খাওয়া যেতে পারে। তারাবীহ নামাজের পর ডিনার করা ভালো।রোজার সময় সন্ধ্যারাতের খাবারের গুরুত্ব তেমন থাকে না। মনে হয়, খেতে হবে তাই খাওয়া। তারপরও কেউ যদি খেতে চান তাহলে যেন খাবার গুরুপাক ও বেশি হয়ে না যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। যেহেতু ইফতারিতে ডালের তৈরি খাবার বেশি হয়, সেহেতু এ সময় ডাল বাদ দেওয়া যেতে পারে। এ সময় হালকা মশলায় রান্না করা মাছ ও সবজি থাকলে ভালো হয়। ইফতার ও সাহরিতে অনেক সময় সবজি খাওয়াটা বাদ পড়ে যায়। অনেকেই রমজানে সবজি একেবারেই পছন্দ করেন না। তাদের জন্য সন্ধ্যারাতেই সবজি খাওয়ার উপযুক্ত সময়।

এ রাতে খাবারে ছোট মাছও রাখা যেতে পারে।
সাহরির খাবার: সাহরিতে খাবার না খান তাহলে অবশ্যই দুর্বল হয়ে পড়বেন। এতে ক্যালরির ঘাটতি দেখা দেবে। ফলে এক মাস রোজা রাখা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। সাহরির সময় না খেলে আমাদের দেহের বিপাকক্রিয়ায় বেশ পরিবর্তন আসতে পারে। এতে গ্লুকোজ ক্ষয় বেশি হয় বলে ক্লান্তি আসে।এজন্য সঠিক ধরনের খাবার খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ যা সারাদিনের ক্ষুধা মোকাবেলায় সাহায্য করবে।

লেখক: চিকিৎসা প্রযুক্তিবিদ, শিক্ষক ও গণমাধ্যমকর্মী।