কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলা গৌরীপুর বাজারের দেশ হসপিটালে এক নবজাতক শিশুকে অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা ও ভুল রিপোর্ট প্রদানের অভিযোগে মামলা করা হয়েছে।
ওই মামলায় দেশ হসপিটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, চিকিৎসক হাবিবুর রহমান ও ল্যাব টেকনোলজিস্টকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার সূত্রে জানা যায়, ১২ই মার্চ ২০২২ইং দেশ হসপিটালের ডাক্তার হাবিবুর রহমানের নিকট তিতাস উপজেলার দিদার হোসেনের স্ত্রী মারিয়া আক্তারের তার ৪৫ দিন বয়সের নবজাতক শিশু মিনহাজকে ঠান্ডা জনিত সমস্যার কারনে নিয়ে যায়।
সেখানে ডাক্তার হাবিবুর রহমান শিশু বাবুর হরমোনাল সমস্যা হয়েছে কমিশনের আসায় অপ্রয়োজনীয়ভাবে ৫টি পরীক্ষার দেন। ৫টি পরীক্ষায় ৩হাজার টাকা বিল পরিশোধ করে রিপোর্ট গ্রহণ করেন। পরীক্ষা রিপোর্ট অস্বাভাবিক দেখা যায়। নবজাতক শিশুর মা ডাক্তারের কথা ও কাজে সন্দেহ পোষণ করেন। উক্ত রিপোর্ট কুমিল্লা মেডিক্যালের শিশু বিশেষজ্ঞ, সহযোগী অধ্যাপক ডাক্তার মো: জাভেদ ইকবালকে দেখালে দেশ হসপিটালের প্রদত্ত রিপোর্ট এবং রোগীকে দেখে হতভম্ব হয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন এবং পূনরায় পরীক্ষা করার মরামর্শ দেন। পরে কুমিল্লার ইবনে সিনা ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারে পরীক্ষা করা হলে উক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট সম্পূর্ন স্বাভাবিক আসে।
দেশ হসপিটালের ডাক্তার ও ভূয়া রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে রোগীর চিকিৎসা নিলে নিশ্চিৎ বড় ধরনের কোন সমস্যা হতো। উক্ত বিষয়ে বিগত ২০শে জুন ২০২২ইং হসপিটাল ও ডাক্তারকে লিগ্যাল নোটিশ দিলে কোন জবাব দেননি। অপচিকিৎসা, অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা ও চিকিৎসায় অবহেলার কারনে অসংখ্য মানুষের মৃত্যু, পঙ্গুত্ব বরণ এবং অর্থনৈতিকভাবে সর্বস্বান্ত হচ্ছে বিধায় বিজ্ঞ আদালতে জনস্বার্থে মামলা দায়ের করা হয়।
উক্ত মামলার আইনজীবী এডভোকেট জয়নাল আবেদীন মাঝহারী বলেন, বিষয়টি অনেক স্পর্শকাতর। দেশ হসপিটাল অপচিকিৎসা, অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষার কারনে মামলা করা হয়। আদালত মামলামটি আমলে নিয়ে কুমিল্লার সিভিল সার্জনকে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন।
মামলার আসামি দেশ হসপিটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কুতুব উদ্দিন বলেন, এই বিষয়ে আপনার সাথে দেখা করবে। আমি আপনাকে পরে ফোন দিচ্ছি। এই বলে ফোন রেখে দিলেন।
পরে তার ছোট ভাই ও দেশ হসপিটালের পরিচালক সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য সাংবাদিকদের মেনেজ করার চেষ্টা করেন।
দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ তৌহিদ আল হাসান বলেন, এই বিষয়ে আমি কিছু জানি না, খোঁজ নিচ্ছি। বিষয়ে কেউ অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নিবো।
আদালতের আদেশের বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা: নাসিমা আক্তার বলেন, আমরা মামলার কপি এখন পর্যন্ত পাইনি। আদালতের আদেশ পেলে আদালতের তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।