ঢাকা ০৪:৪০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমিন আমিন ধ্বনিতে সমাপ্ত হলো বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব

মোঃ মুক্তাদির হোসেন, গাজীপুর (কালীগঞ্জ) ।

মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম গণজমায়েত গাজীপুরের অদুরে টঙ্গী বিশ্ব ইজতেজার মাঠ প্রাঙ্গনে আজ সকালে আখেরি মোনাজাত এর মাধ্যমে সমাপ্ত হলো বিশ্ব ইজতেমার ১ ম পর্ব।
ফজরের নামাজ আদায় এর সাথে নসিয়ত মুলোক বয়ান শুরু হয়।

টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের আখেরী মোনাজাত সম্পন্ন হয়েছে রোববার সকাল ৯টা ১ মিনিটে আখেরী মোনাজাত শুরু হয়। শেষ হয় ৯টা ২৩ মিনিটে। মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা জুবায়ের। মোনাজাতে আমিন আমিন ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে টঙ্গীর তুরাগ তীর ও ইজতেমা ময়দানের আশপাশ এলাকা।

মোনাজাতে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর হেদায়েত, ঐক্য, শান্তি, সমৃদ্ধি, ইহকাল ও পরকালের নাজাত এবং দ্বীনের দাওয়াত সর্বত্র পৌঁছে দেওয়ার জন্য দোয়া করা হয়। এছাড়া সব ধরনের গুনাহ থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহ কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করা হয়। আখেরি মোনাজাতে নিজের আত্মশুদ্ধি ও নিজ নিজ গুনাহ মাফের পাশাপাশি দুনিয়ার সব বালা-মুসিবত থেকে হেফাজত করার জন্য দুই হাত তুলে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে সন্তুষ্টি অর্জনের আশায় উপস্থিত লাখ লাখ মুসল্লি প্রার্থনা করেন। এই মোনাজাতে লাখ মুসল্লি বারবার বলছিলেন, আমিন আমিন। মোনাজাতের সময় এই ধ্বনিতে পুরো টঙ্গী এলাকা আমিন আমিন ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে। তারা সবাই ইহলোকের মঙ্গল ও পরলোক বাসীদের ক্ষমা প্রার্থনা করে চাইলেন সুখ ও সমৃদ্ধি। আখেরী মোনাজাতের আগে বাদ ফজর নামাজের পর হেদায়েতি বয়ান করা হয়। বয়ান করেন পাকিস্তানের মাওলানা জিয়াউল। এরপর কিছু সময় নসিহত মূলক বয়ান করেন ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা। এরপর আখেরী মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

মোনাজাতে সমগ্র বিশ্বের মানবকূলের নিরাপত্তা, ঐক্য, মুক্তি এবং ইহ ও পরলৌকিক কল্যাণ কামনা করে মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে আকুতি-মিনতি জানানো হয়। এ সময় পুরো ইজতেমা মাঠসহ আশপাশ এলাকার পরিবেশে ‘আমিন, আল্লাহুম্মা আমিন’ ধ্বনিতে আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে মহামহিমা ও দয়াময় আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে অপার করুণা ও অশেষ রহমত কামনা করেন। মনিব-ভৃত্য, ধনী-গরিব নির্বিশেষে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ আল্লাহর দরবারে দুহাত তুলে নিজ নিজ কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।

দক্ষিণে খিলক্ষেত, উত্তরে গাজীপুর চৌরাস্তা, পূর্বে টঙ্গী বিসিক শিল্পনগরী ও পশ্চিমে আশুলিয়া পর্যন্ত প্রায় ১৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকা বিস্তৃত বিশাল জনসমুদ্র থেকে ধ্বনি ওঠে— আমিন আমিন‘ আল্লাহ, আল্লাহ’। মোবাইল ফোনে এবং স্যাটেলাইট টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারের সুবাদে দেশ-বিদেশের লাখ লাখ মানুষ একসঙ্গে হাত তুলেছেন আল্লাহর কাছে। সবাই প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা চেয়ে কান্নায় বুক ভাসিয়েছেন। দেশের ৬৪ জেলার মুসল্লি ছাড়াও বিশ্বের অর্ধশতাধিক দেশের প্রায় ৩ হাজার বিদেশি মেহমান আখেরি মোনাজাতে অংশ নিয়েছেন।

মুসল্লিদের জন্য বিশেষ ট্রেন: ইজতেমায় আসা মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার্তে ঢাকা-টঙ্গী-ঢাকা এবং টঙ্গী থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াতের জন্য ১১ জোড়া বিশেষ ট্রেন চালু রেখেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

এদিকে ইজতেমা ময়দানের মুসল্লিদের যাতায়াত সহজ করতে প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাতকে কেন্দ্র করে শনিবার রাত ১০টা থেকে গাজীপুরের তিনটি সড়কে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়। আজ রোববার দুপুর ২টার পর সড়কগুলো আবার খুলে দেওয়া হবে।

সড়ক তিনটি হলো, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের আবদুল্লাহপুর থেকে গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস, টঙ্গী-ঘোড়াশাল আঞ্চলিক সড়কের মিরের বাজার থেকে টঙ্গীর স্টেশন রোড পর্যন্ত এবং রাজধানী ঢাকার কামারপাড়া মোড় থেকে টঙ্গীর মন্নু গেইট সড়কে।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এসব সড়কে ইজতেমার মুসল্লি বহনকারী যানবাহন ছাড়া অন্য কোনো গাড়ি চলতে পারবে না। তবে জরুরি প্রয়োজনীয় গাড়ি যেমন-অ্যাম্বুলেন্স , গণমাধ্যমকর্মী বা বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক থাকবে।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার ২ ফেব্রুয়ারি থেকে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু হয়। আজ রোববার আখেরী মোনজাতের মধ্য দিয়ে প্রথম পর্ব সমাপ্ত হয়। মাঝে চার দিন বিরতি দিয়ে আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে দ্বিতীয় পর্বের বিশ্ব ইজতেমা শুরু হবে।

আপলোডকারীর তথ্য

আমিন আমিন ধ্বনিতে সমাপ্ত হলো বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব

আপডেট সময় ০৭:০৫:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

মোঃ মুক্তাদির হোসেন, গাজীপুর (কালীগঞ্জ) ।

মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম গণজমায়েত গাজীপুরের অদুরে টঙ্গী বিশ্ব ইজতেজার মাঠ প্রাঙ্গনে আজ সকালে আখেরি মোনাজাত এর মাধ্যমে সমাপ্ত হলো বিশ্ব ইজতেমার ১ ম পর্ব।
ফজরের নামাজ আদায় এর সাথে নসিয়ত মুলোক বয়ান শুরু হয়।

টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের আখেরী মোনাজাত সম্পন্ন হয়েছে রোববার সকাল ৯টা ১ মিনিটে আখেরী মোনাজাত শুরু হয়। শেষ হয় ৯টা ২৩ মিনিটে। মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা জুবায়ের। মোনাজাতে আমিন আমিন ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে টঙ্গীর তুরাগ তীর ও ইজতেমা ময়দানের আশপাশ এলাকা।

মোনাজাতে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর হেদায়েত, ঐক্য, শান্তি, সমৃদ্ধি, ইহকাল ও পরকালের নাজাত এবং দ্বীনের দাওয়াত সর্বত্র পৌঁছে দেওয়ার জন্য দোয়া করা হয়। এছাড়া সব ধরনের গুনাহ থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহ কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করা হয়। আখেরি মোনাজাতে নিজের আত্মশুদ্ধি ও নিজ নিজ গুনাহ মাফের পাশাপাশি দুনিয়ার সব বালা-মুসিবত থেকে হেফাজত করার জন্য দুই হাত তুলে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে সন্তুষ্টি অর্জনের আশায় উপস্থিত লাখ লাখ মুসল্লি প্রার্থনা করেন। এই মোনাজাতে লাখ মুসল্লি বারবার বলছিলেন, আমিন আমিন। মোনাজাতের সময় এই ধ্বনিতে পুরো টঙ্গী এলাকা আমিন আমিন ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে। তারা সবাই ইহলোকের মঙ্গল ও পরলোক বাসীদের ক্ষমা প্রার্থনা করে চাইলেন সুখ ও সমৃদ্ধি। আখেরী মোনাজাতের আগে বাদ ফজর নামাজের পর হেদায়েতি বয়ান করা হয়। বয়ান করেন পাকিস্তানের মাওলানা জিয়াউল। এরপর কিছু সময় নসিহত মূলক বয়ান করেন ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা। এরপর আখেরী মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

মোনাজাতে সমগ্র বিশ্বের মানবকূলের নিরাপত্তা, ঐক্য, মুক্তি এবং ইহ ও পরলৌকিক কল্যাণ কামনা করে মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে আকুতি-মিনতি জানানো হয়। এ সময় পুরো ইজতেমা মাঠসহ আশপাশ এলাকার পরিবেশে ‘আমিন, আল্লাহুম্মা আমিন’ ধ্বনিতে আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে মহামহিমা ও দয়াময় আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে অপার করুণা ও অশেষ রহমত কামনা করেন। মনিব-ভৃত্য, ধনী-গরিব নির্বিশেষে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ আল্লাহর দরবারে দুহাত তুলে নিজ নিজ কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।

দক্ষিণে খিলক্ষেত, উত্তরে গাজীপুর চৌরাস্তা, পূর্বে টঙ্গী বিসিক শিল্পনগরী ও পশ্চিমে আশুলিয়া পর্যন্ত প্রায় ১৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকা বিস্তৃত বিশাল জনসমুদ্র থেকে ধ্বনি ওঠে— আমিন আমিন‘ আল্লাহ, আল্লাহ’। মোবাইল ফোনে এবং স্যাটেলাইট টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারের সুবাদে দেশ-বিদেশের লাখ লাখ মানুষ একসঙ্গে হাত তুলেছেন আল্লাহর কাছে। সবাই প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা চেয়ে কান্নায় বুক ভাসিয়েছেন। দেশের ৬৪ জেলার মুসল্লি ছাড়াও বিশ্বের অর্ধশতাধিক দেশের প্রায় ৩ হাজার বিদেশি মেহমান আখেরি মোনাজাতে অংশ নিয়েছেন।

মুসল্লিদের জন্য বিশেষ ট্রেন: ইজতেমায় আসা মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার্তে ঢাকা-টঙ্গী-ঢাকা এবং টঙ্গী থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াতের জন্য ১১ জোড়া বিশেষ ট্রেন চালু রেখেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

এদিকে ইজতেমা ময়দানের মুসল্লিদের যাতায়াত সহজ করতে প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাতকে কেন্দ্র করে শনিবার রাত ১০টা থেকে গাজীপুরের তিনটি সড়কে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়। আজ রোববার দুপুর ২টার পর সড়কগুলো আবার খুলে দেওয়া হবে।

সড়ক তিনটি হলো, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের আবদুল্লাহপুর থেকে গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস, টঙ্গী-ঘোড়াশাল আঞ্চলিক সড়কের মিরের বাজার থেকে টঙ্গীর স্টেশন রোড পর্যন্ত এবং রাজধানী ঢাকার কামারপাড়া মোড় থেকে টঙ্গীর মন্নু গেইট সড়কে।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এসব সড়কে ইজতেমার মুসল্লি বহনকারী যানবাহন ছাড়া অন্য কোনো গাড়ি চলতে পারবে না। তবে জরুরি প্রয়োজনীয় গাড়ি যেমন-অ্যাম্বুলেন্স , গণমাধ্যমকর্মী বা বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক থাকবে।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার ২ ফেব্রুয়ারি থেকে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু হয়। আজ রোববার আখেরী মোনজাতের মধ্য দিয়ে প্রথম পর্ব সমাপ্ত হয়। মাঝে চার দিন বিরতি দিয়ে আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে দ্বিতীয় পর্বের বিশ্ব ইজতেমা শুরু হবে।