ঢাকা ০১:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo পোস্তগোলা ব্রিজের ঢালে ডাকাতির প্রস্তুতি কালে ৬ ডাকাত আটক Logo সুবর্ণচরে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় আহত ১৫, দোকানপাট-বাড়িঘর ভাঙচুর Logo সাবেক চেয়ারম্যান ও বহিষ্কৃত সিইও’র ষড়যন্ত্রে সোনালী লাইফ Logo ঢাকা সাব-এডিটরস এর নবনির্বাচিত কমিটির দায়িত্ব গ্রহণ Logo রূপসা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ১১ প্রার্থীর মনোনয়ন দাখিল Logo চীন-সার্বিয়া অভিন্ন কল্যাণের সমাজ প্রতিষ্ঠার ‘যৌথ বিবৃতি’ স্বাক্ষর Logo “দূর থেকে বন্ধু আসছে” থিম সম্বলিত স্মারক ডাকটিকিটও প্রকাশ Logo হাঙ্গেরির গণমাধ্যমে স্বাক্ষরযুক্ত নিবন্ধ প্রকাশ করেছেন সি চিন পিং Logo সার্বিয়ার জাতীয় জাদুঘরে রয়েছে সূক্ষ্ম ক্লাসিক চিত্রকর্ম:চীনা ফার্স্ট লেডি Logo দেবিদ্বারে বড় ভাইয়ের স্বপ্ন পূরণ করতে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করতে গেলেন প্রবাসী ব্যবসায়ী সাঈদ

বরুড়ায় কিশোরীকে অপহরণের পর পরিবারের অমতে বিয়ের অভিযোগ

মোঃ রাকিব উদ্দিন, বরুড়া (কুমিল্লা)

কুমিল্লার বরুড়ায় এক কিশোরীকে অপহরণের পর পরিবারের অমতে বিয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় আদালতে মামলা দায়ের করার পর ভুক্তভোগীর পরিবারটি এক সপ্তাহ ধরে বাড়ি ছাড়া রয়েছে।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে জেলার বরুড়ায় একটি কনফারেন্স হলে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পারিবার।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবারটি জানায়, জেলার বরুড়া উপজেলার ১৪নং লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের সংখ্যালঘু নিখিল চন্দ্র দাসের ১২ বছর বয়সী মেয়ে পূর্ণিমা রানী দাস ৭ম শ্রেণিতে পড়ে। তাদের প্রতিবেশী দীপালী রানী দাস একজন ইতালি প্রবাসী। কুমিল্লা শহরে দীপালী রানী দাসের বাসায় কাজ করেন রুনু নামের এক নারী। দীপালীর বাসায় কাজ করা রুনুর ছেলে অন্তরের কাছে বিয়ে দেওয়ার জন্য নিখিলকে প্রস্তাব দেন দীপালী। মেয়ে নাবালক হওয়ায় বিয়েতে রাজি হননি নিখিল চন্দ্র দাস। এতে ক্ষিপ্ত হন দীপালী।

গত ২২ এপ্রিল দীপালী তার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসেন অন্তর নামের সেই ছেলেটিকে। পরে কৌশলে নিখিলের মেয়ে পূর্ণিমাকে তার ঘরে নিয়ে যান। পরে দুজনকে এক কক্ষে আটকে রেখে অপবাদ দেওয়া হয় তারা অসামাজিক কাজ করেছে। এসময় স্থানীয় গ্রামবাসীকে জড়ো করা হয়। এসময় স্থানীয় লোকজন দীপালীর ভয়ে কেউ কথা বলেনি। এসময় পুলিশকে খবর দেওয়া হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ভিকটিম শিশুকে উদ্ধার না করেই ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

পরে পূর্ণিমার বাবা নিখিলকে খবর দেওয়া হলে তিনি ঘটনাস্থলে যান। এসময় মুছলেকা রেখে মেয়েকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে নিখিলকে ৫০০ টাকার স্ট্যাম্প আনতে বাজারে পাঠান দীপালী। নিখিল চন্দ্র বাজারে স্ট্যাম্প আনতে গেলে এই ফাঁকে পূর্ণিমাকে অপহরণ করে কুমিল্লা শহরে নিয়ে যায় দীপালী গংরা। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাশেমকে জানানো হলে তিনি আসছি-আসবো করে কালক্ষেপণ করতে থাকেন। পরে কূল কিনারা না পেয়ে বরুড়া থানায় যান ভুক্তভোগীর পরিবার। এসময় মামলা করতে গেলে ওসি রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী দীপালী নামটি উল্লেখ করে এজাহার দেওয়া যাবে না বলে জানান। মামলা করতে হলে অজ্ঞাত নাম দিতে হবে বলে জানালে ভুক্তভোগী নিখিল চন্দ্র থানা থেকে চলে আসেন।

পরে ২৪ এপ্রিল নিখিল চন্দ্র দাস বাদী হয়ে কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন।

কুমিল্লার পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, মামলাটির তদন্তের কাজ চলছে। আমরা যত দ্রুত সম্ভব ভিকটিম শিশুটিকে উদ্ধার করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনব।

মামলা না নেওয়ার বিষয়ে বরুড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ভুক্তভোগী পরিবারটি থানায় এসেছিল। আমরা বলেছি অজ্ঞাত আসামি দেওয়ার জন্য। তারা বলেছিল বুঝেশুনে আবার আসবে। কিন্তু পরে আর আসেনি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, ঘটনার পর থেকে ঘর ছাড়া রয়েছে ভুক্তভোগী নিখিল চন্দ্র দাসের পরিবার। লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত নারী আসনের ইউপি সদস্য শাহিনূর আক্তার দীপালীর কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখাতে থাকেন ভুক্তভোগী পরিবারটিকে। মামলা করলে আর কখনও এলাকায় উঠতে পারবে না বলে হুমকি দেন ইউপি সদস্য শাহিনূর। হুমকির পর থেকে এক সপ্তাহ ধরে বাড়িতে উঠেন না নিখিল চন্দ্র দাসের পরিবার।

এ বিষয়ে জানতে লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হাশেম ও সংরক্ষিত নারী সদস্য শাহিনূর আক্তারকে একাধিকবার করে ফোন করা হলেও তারা কেউই ফোন না তোলায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

আপলোডকারীর তথ্য

পোস্তগোলা ব্রিজের ঢালে ডাকাতির প্রস্তুতি কালে ৬ ডাকাত আটক

বরুড়ায় কিশোরীকে অপহরণের পর পরিবারের অমতে বিয়ের অভিযোগ

আপডেট সময় ০৯:২১:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

মোঃ রাকিব উদ্দিন, বরুড়া (কুমিল্লা)

কুমিল্লার বরুড়ায় এক কিশোরীকে অপহরণের পর পরিবারের অমতে বিয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় আদালতে মামলা দায়ের করার পর ভুক্তভোগীর পরিবারটি এক সপ্তাহ ধরে বাড়ি ছাড়া রয়েছে।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে জেলার বরুড়ায় একটি কনফারেন্স হলে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পারিবার।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবারটি জানায়, জেলার বরুড়া উপজেলার ১৪নং লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের সংখ্যালঘু নিখিল চন্দ্র দাসের ১২ বছর বয়সী মেয়ে পূর্ণিমা রানী দাস ৭ম শ্রেণিতে পড়ে। তাদের প্রতিবেশী দীপালী রানী দাস একজন ইতালি প্রবাসী। কুমিল্লা শহরে দীপালী রানী দাসের বাসায় কাজ করেন রুনু নামের এক নারী। দীপালীর বাসায় কাজ করা রুনুর ছেলে অন্তরের কাছে বিয়ে দেওয়ার জন্য নিখিলকে প্রস্তাব দেন দীপালী। মেয়ে নাবালক হওয়ায় বিয়েতে রাজি হননি নিখিল চন্দ্র দাস। এতে ক্ষিপ্ত হন দীপালী।

গত ২২ এপ্রিল দীপালী তার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসেন অন্তর নামের সেই ছেলেটিকে। পরে কৌশলে নিখিলের মেয়ে পূর্ণিমাকে তার ঘরে নিয়ে যান। পরে দুজনকে এক কক্ষে আটকে রেখে অপবাদ দেওয়া হয় তারা অসামাজিক কাজ করেছে। এসময় স্থানীয় গ্রামবাসীকে জড়ো করা হয়। এসময় স্থানীয় লোকজন দীপালীর ভয়ে কেউ কথা বলেনি। এসময় পুলিশকে খবর দেওয়া হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ভিকটিম শিশুকে উদ্ধার না করেই ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

পরে পূর্ণিমার বাবা নিখিলকে খবর দেওয়া হলে তিনি ঘটনাস্থলে যান। এসময় মুছলেকা রেখে মেয়েকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে নিখিলকে ৫০০ টাকার স্ট্যাম্প আনতে বাজারে পাঠান দীপালী। নিখিল চন্দ্র বাজারে স্ট্যাম্প আনতে গেলে এই ফাঁকে পূর্ণিমাকে অপহরণ করে কুমিল্লা শহরে নিয়ে যায় দীপালী গংরা। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাশেমকে জানানো হলে তিনি আসছি-আসবো করে কালক্ষেপণ করতে থাকেন। পরে কূল কিনারা না পেয়ে বরুড়া থানায় যান ভুক্তভোগীর পরিবার। এসময় মামলা করতে গেলে ওসি রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী দীপালী নামটি উল্লেখ করে এজাহার দেওয়া যাবে না বলে জানান। মামলা করতে হলে অজ্ঞাত নাম দিতে হবে বলে জানালে ভুক্তভোগী নিখিল চন্দ্র থানা থেকে চলে আসেন।

পরে ২৪ এপ্রিল নিখিল চন্দ্র দাস বাদী হয়ে কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন।

কুমিল্লার পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, মামলাটির তদন্তের কাজ চলছে। আমরা যত দ্রুত সম্ভব ভিকটিম শিশুটিকে উদ্ধার করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনব।

মামলা না নেওয়ার বিষয়ে বরুড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ভুক্তভোগী পরিবারটি থানায় এসেছিল। আমরা বলেছি অজ্ঞাত আসামি দেওয়ার জন্য। তারা বলেছিল বুঝেশুনে আবার আসবে। কিন্তু পরে আর আসেনি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, ঘটনার পর থেকে ঘর ছাড়া রয়েছে ভুক্তভোগী নিখিল চন্দ্র দাসের পরিবার। লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত নারী আসনের ইউপি সদস্য শাহিনূর আক্তার দীপালীর কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখাতে থাকেন ভুক্তভোগী পরিবারটিকে। মামলা করলে আর কখনও এলাকায় উঠতে পারবে না বলে হুমকি দেন ইউপি সদস্য শাহিনূর। হুমকির পর থেকে এক সপ্তাহ ধরে বাড়িতে উঠেন না নিখিল চন্দ্র দাসের পরিবার।

এ বিষয়ে জানতে লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হাশেম ও সংরক্ষিত নারী সদস্য শাহিনূর আক্তারকে একাধিকবার করে ফোন করা হলেও তারা কেউই ফোন না তোলায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।