ঢাকা ০৭:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সরাইলে রাস্তা নিয়ে দুই দল গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ, বাড়ি ঘরে ভাংচুর ও লুটতরাজ

সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া’র সরাইলে চলাচলের রাস্তা নিয়ে দুই দল গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সময় বাড়ি ঘরে ভাংচুর ও লুটতরাজ করার অভিযোগ করেন একে অপরকে ।

গত ৪ নভেম্বর রাতে সালিসি বৈঠকের সময় মো: হারুন অর রশিদের পক্ষের লোকজন বাড়িঘরে অতর্কিত হামলা চালায় বলে জানায় মহিউদ্দিনের পরিবার।

পরদিন ৫ নভেম্বর সকাল বেলায় উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে ।এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়।

ঘটনাটি ঘটে উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের ফতেপুর মুন্সীবাড়ি এলাকায়।

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মহিউদ্দিনের বাড়ির কয়েকটি ঘর ও তার গোষ্ঠীর বেশ কয়েকটি ঘর ভাংচুর করা । ঘরের বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাংচুর করা ও এলোমেলো হয়ে পরে আছে । মহিউদ্দিনের বাড়িতে শুনশান নীরবতা। অন্যদিকে হারুন অর রশিদের একটি ঘর ভাংচুর করা ও আসবাবপত্র এলোমেলো পরে আছে ।
স্থানীয় সিরাজ মিয়া নামের একজন বলেন আমি ঘটনার সময় ওখানে আছিলাম মহিউদ্দিনের ঘরে ।তারা কথার মাঝে চিল্লা চিল্লি কইরা বাড়িতে হামলা করে। আমার মাথায় ও বাড়ি পরে । তারা বাড়িতে ভাংচুর চালায় ও লুটপাট শুরু করে । হামলায় রাসেল নামে একজন মারাত্মক আহত হয় তারে ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি করা হইছে ।

হারুন অর রশিদ বলেন, রাত আনুমানিক ১১ টার দিকে মহিউদ্দিনের ঘরে শোরগোল শুনা যায়, আমি ঘরে চলে যাই ।তখন মহিউদ্দিনের লোকজন আমরার বাড়িতে হামলা করে । এরপর আমরার পুত ভাতিজারা হামলা করছে। আমার ঘরের ১০ টা কম্বল, নগদ ৫ লক্ষ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। আমি মসজিদের ক্যাশিয়ার মসজিদের নগদ দুই লক্ষ টাকা , আরো ৩ লক্ষ টাকা আরেক জনকে দেয়ার জন্য আছিল । এগুলো নিয়ে গেছে ।

মহিউদ্দিনের স্ত্রী জানান, বাড়ি করার লাইগা তার স্বামী তাদের জমি ভরাট করার জন্য মাটি কাটলে সেই মাটি রাস্তায় পড়ে । এরপরে মুরব্বিদের সাথে কথা বলে সপ্তাহ দশদিন সময় নেয়। এর মধ্যেই আমারার বাড়িতে হামলা করে সব লুট করে নিয়ে যায় ।আমার তিন ছেলে বউয়ের ১৫ ভরি স্বর্ণ, মোবাইল, কম্বল, আই পি এস, আলমারি ভাইঙ্গা নগদ টাকা নিয়ে যায়।

মহিউদ্দিন বলেন , আমি একটা জমি মাটি ভরাট করমু ,পাশেই রাস্তা । রাস্তায় মাটি রাখা লাগবে ,তারজন্য সপ্তাহ দশদিন সময় চাই মুরুব্বিদের কাছে তারাও রাজি হয়। তাদেরকে বলি প্রয়োজনে আমার বাড়ির রাস্তা ব্যবহার করতে। এর আগে গ্রামের আলি আকবর মিয়া্র ছেলে সাত্তার মিয়া ও এমদাদ মিয়ার মধ্যে জমি নিয়ে ঝগড়া হয়। আমি সাত্তার মিয়ার পক্ষে উচিৎ কথা বলায় এমদাদ মনোক্ষুন্ন হয় । এর কারণে এমদাদ আমার বিপক্ষে চলে যায় । তখন সে বলে এক্ষণ মাটি সরাইতে হবে। এরপরেই আমার বাড়িতে অতর্কিত হামলা ও ভাঙচুর চালায় তারা। আমার ঘর ভাংচুর করে সব লুট করে নিয়ে যায়। আমার ঘরের কোন কিছু অবশিষ্ট রাখে নাই সব লুট করে নিয়ে যায় । আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

উল্লেখ্য গত বুধবার দুই দল গ্রামবাসীর মধ্যে
প্রায় দু’ঘন্টা ব্যাপী সংঘর্ষে বাড়ি-ঘর ভাংচুর ও উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
এ বিষয়ে পাকশিমুল ইউপি চেয়ারম্যান কাউসার আহমেদ বলেন ,উভয় পক্ষকে নিয়ে শনিবার বসে বিষয়টি সমাধানের ব্যবস্থা করা হয়েছে ।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

সরাইলে রাস্তা নিয়ে দুই দল গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ, বাড়ি ঘরে ভাংচুর ও লুটতরাজ

আপডেট সময় ০৫:০৪:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ নভেম্বর ২০২৫

সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া’র সরাইলে চলাচলের রাস্তা নিয়ে দুই দল গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সময় বাড়ি ঘরে ভাংচুর ও লুটতরাজ করার অভিযোগ করেন একে অপরকে ।

গত ৪ নভেম্বর রাতে সালিসি বৈঠকের সময় মো: হারুন অর রশিদের পক্ষের লোকজন বাড়িঘরে অতর্কিত হামলা চালায় বলে জানায় মহিউদ্দিনের পরিবার।

পরদিন ৫ নভেম্বর সকাল বেলায় উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে ।এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়।

ঘটনাটি ঘটে উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের ফতেপুর মুন্সীবাড়ি এলাকায়।

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মহিউদ্দিনের বাড়ির কয়েকটি ঘর ও তার গোষ্ঠীর বেশ কয়েকটি ঘর ভাংচুর করা । ঘরের বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাংচুর করা ও এলোমেলো হয়ে পরে আছে । মহিউদ্দিনের বাড়িতে শুনশান নীরবতা। অন্যদিকে হারুন অর রশিদের একটি ঘর ভাংচুর করা ও আসবাবপত্র এলোমেলো পরে আছে ।
স্থানীয় সিরাজ মিয়া নামের একজন বলেন আমি ঘটনার সময় ওখানে আছিলাম মহিউদ্দিনের ঘরে ।তারা কথার মাঝে চিল্লা চিল্লি কইরা বাড়িতে হামলা করে। আমার মাথায় ও বাড়ি পরে । তারা বাড়িতে ভাংচুর চালায় ও লুটপাট শুরু করে । হামলায় রাসেল নামে একজন মারাত্মক আহত হয় তারে ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি করা হইছে ।

হারুন অর রশিদ বলেন, রাত আনুমানিক ১১ টার দিকে মহিউদ্দিনের ঘরে শোরগোল শুনা যায়, আমি ঘরে চলে যাই ।তখন মহিউদ্দিনের লোকজন আমরার বাড়িতে হামলা করে । এরপর আমরার পুত ভাতিজারা হামলা করছে। আমার ঘরের ১০ টা কম্বল, নগদ ৫ লক্ষ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। আমি মসজিদের ক্যাশিয়ার মসজিদের নগদ দুই লক্ষ টাকা , আরো ৩ লক্ষ টাকা আরেক জনকে দেয়ার জন্য আছিল । এগুলো নিয়ে গেছে ।

মহিউদ্দিনের স্ত্রী জানান, বাড়ি করার লাইগা তার স্বামী তাদের জমি ভরাট করার জন্য মাটি কাটলে সেই মাটি রাস্তায় পড়ে । এরপরে মুরব্বিদের সাথে কথা বলে সপ্তাহ দশদিন সময় নেয়। এর মধ্যেই আমারার বাড়িতে হামলা করে সব লুট করে নিয়ে যায় ।আমার তিন ছেলে বউয়ের ১৫ ভরি স্বর্ণ, মোবাইল, কম্বল, আই পি এস, আলমারি ভাইঙ্গা নগদ টাকা নিয়ে যায়।

মহিউদ্দিন বলেন , আমি একটা জমি মাটি ভরাট করমু ,পাশেই রাস্তা । রাস্তায় মাটি রাখা লাগবে ,তারজন্য সপ্তাহ দশদিন সময় চাই মুরুব্বিদের কাছে তারাও রাজি হয়। তাদেরকে বলি প্রয়োজনে আমার বাড়ির রাস্তা ব্যবহার করতে। এর আগে গ্রামের আলি আকবর মিয়া্র ছেলে সাত্তার মিয়া ও এমদাদ মিয়ার মধ্যে জমি নিয়ে ঝগড়া হয়। আমি সাত্তার মিয়ার পক্ষে উচিৎ কথা বলায় এমদাদ মনোক্ষুন্ন হয় । এর কারণে এমদাদ আমার বিপক্ষে চলে যায় । তখন সে বলে এক্ষণ মাটি সরাইতে হবে। এরপরেই আমার বাড়িতে অতর্কিত হামলা ও ভাঙচুর চালায় তারা। আমার ঘর ভাংচুর করে সব লুট করে নিয়ে যায়। আমার ঘরের কোন কিছু অবশিষ্ট রাখে নাই সব লুট করে নিয়ে যায় । আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

উল্লেখ্য গত বুধবার দুই দল গ্রামবাসীর মধ্যে
প্রায় দু’ঘন্টা ব্যাপী সংঘর্ষে বাড়ি-ঘর ভাংচুর ও উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
এ বিষয়ে পাকশিমুল ইউপি চেয়ারম্যান কাউসার আহমেদ বলেন ,উভয় পক্ষকে নিয়ে শনিবার বসে বিষয়টি সমাধানের ব্যবস্থা করা হয়েছে ।