ঢাকা ০৪:৫৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কালীগঞ্জে ইতিহাসের শিক্ষক পশু চিকিৎসক নিচ্ছেন ভেটেরিনারী কোর্সের ক্লাস

শাহিনুর রহমান পিন্টু, ঝিনাইদহ

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহরের কোটচাঁদপুর রোডের মমতাজ মেডিসিন সেন্টারের পশু চিকিৎসক জামাল আহমেদ মিলন নিয়মিত পশু চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন দীর্ঘ দিন যাবত। তিনি পেশায় একটি কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক। তবে তিনি শুধু শিক্ষকই না, গবাদীপশুর সর্ব রোগ বিশেষজ্ঞ আবার কখনো তিনি ডাক্তারদের প্রশিক্ষক। নামের আগে পরে নানা পদবী যুক্ত থাকলেও তার হাতে অপচিকিৎসার শিকার হয় অধিকাংশ গবাদী পশুর খামারীরা। লাখ টাকার পশু মারা গেলেও জামাল আহমেদ মিলনের ফি ক্ষতিগ্রস্ত পশুর মালিককে দেওয়া লাগে বলে জানা যায়। নতুবা তাকে নানা বিড়ম্ববনায় পড়তে হয়। অপ্রয়োজনে ব্যবস্থাপত্রে লেখেন অনেক ঔষধ। এ পশু চিকিৎসক বিভিন্ন ব্যক্তি ও ঔষধ কোম্পানির বিক্রয় প্র্রতিনিধি নিয়ে শহরজুড়ে গড়ে তুলেছেন একটি পশু চিকিৎসা সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেট শহরময় গবাদি পশু চিকিৎসা করে বেড়ায়। পশু চিকিৎসকরা ৫-৬ টি মোটরসাইকেলে কমপক্ষে ১০-১২ জনের একটি দল একযোগে বিভিন্ন গ্রামে বেরিয়ে পশু চিকিৎসা সেবা দিতে সেবা প্রত্যাশীর বাড়ি হাজির হন। এরপর শুরু হয় গবাদি পশু চিকিৎসা। অধিকাংশ চিকিৎসায় গবাদি পশু ভাল না হওয়ার অভিযোগ আছে। চিকিৎসায় গবাদিপশু ভাল না হলেও সম্পূর্ন বিল পরিশোধ করতে হয় সেবা প্রত্যাশির। এমন অনেক অভিযোগ আছে জামাল আহমেদ মিলনের বিরুদ্ধে। খেঁাজ নিয়ে জানা গেছে ,জামাল আহমেদ মিলনসহ তার সাথে থাকা সনদবীহিন ভুয়া পশু চিকিৎসকদের কারো বাংলাদেশ ভেটরেনারী কাউন্সিলের সনদ নেই। ডিভিএম ডাক্তার না হয়েও জামাল আহমেদ মিলন শহরের কোলা রোডে অবস্থিত লাইফ সাইন্স ভেটরেনারী ট্রেনিং ইনস্টিউটে চলমান কোর্সের প্রশিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ইতিহাসের শিক্ষকের ভেটরেনারীর কোর্সের ক্লাস নেওয়ারে ব্যাপারে জানতে চাইলে লাইফ সাইন্স ভেটরেনারী ট্রেনিং ইনস্টিউটের সত্বাধিকারী বিশ্বাস রাজিব কিশোর জানান, মিলন স্যার তো প্রথম থেকেই এ কোর্সের সাথে আছেন। তিনি নিয়মিত ক্লাস নেন। উপজেলার চাচড়া গ্রামের মনোয়ারা বেগম বলেন, আমার গরুর সামান্য জর হওয়ায় আমি মিলন ভাইকে জানাই। সে এসে চিকিৎসা করার পর আমার গরু আরো অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপর আমি উপজেলা পশু হাসপাতালে নিয়ে যাই। আরেক ভুক্তভোগী উপজেলার চাদবা এক্তারপুর গ্রামের ইমামুল ইসলাম বলেন, আমার ছাগল যন্ত্রনায় ছটফট করায় আমি মিলন স্যারকে বলি, তখন মিলন স্যার পলাশ নামের এক ব্যক্তিকে পাঠিয়ে আমার ছাগলের অস্ত্রপচার করায় । রক্ত বন্ধ না হওয়ায় সে ব্যক্তি দ্রুত চলে যায়। এরপর আমি ছাগল পশু হাসপাতালে নিয়ে যায়। এরা কেমন ডাক্তার, আমার অনেক ক্ষতি হয়েছিল। অভিযোগের ব্যাপারে সনদ বিহীন পশু চিকিৎসক জামাল আহমেদ মিলন বলেন, আমি চিকিৎসক নই, আমি পরামর্শক। আমি ভেটরিনারী কোন কোর্সের পাঠদান করাইনা। মোবাইলে এত কথা বলার দরকার নেই। আপনি সন্ধ্যায় আমার ভাইয়ের দোকানে আসেন ,সরাসরি কথা হবে। এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডা : মো: রেজাউল করিম জানান , কালীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় সনদ বিহীন পশু চিকিসকের অপতৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে । ক্ষতিগ্রস্ত খামারির অভিযোগ পেলে বাংলাদেশ ভেটরেনারী আইন ২০১৯ অনুযায়ী ভুয়া চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

কালীগঞ্জে ইতিহাসের শিক্ষক পশু চিকিৎসক নিচ্ছেন ভেটেরিনারী কোর্সের ক্লাস

আপডেট সময় ০৪:৫০:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ মার্চ ২০২৪

শাহিনুর রহমান পিন্টু, ঝিনাইদহ

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহরের কোটচাঁদপুর রোডের মমতাজ মেডিসিন সেন্টারের পশু চিকিৎসক জামাল আহমেদ মিলন নিয়মিত পশু চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন দীর্ঘ দিন যাবত। তিনি পেশায় একটি কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক। তবে তিনি শুধু শিক্ষকই না, গবাদীপশুর সর্ব রোগ বিশেষজ্ঞ আবার কখনো তিনি ডাক্তারদের প্রশিক্ষক। নামের আগে পরে নানা পদবী যুক্ত থাকলেও তার হাতে অপচিকিৎসার শিকার হয় অধিকাংশ গবাদী পশুর খামারীরা। লাখ টাকার পশু মারা গেলেও জামাল আহমেদ মিলনের ফি ক্ষতিগ্রস্ত পশুর মালিককে দেওয়া লাগে বলে জানা যায়। নতুবা তাকে নানা বিড়ম্ববনায় পড়তে হয়। অপ্রয়োজনে ব্যবস্থাপত্রে লেখেন অনেক ঔষধ। এ পশু চিকিৎসক বিভিন্ন ব্যক্তি ও ঔষধ কোম্পানির বিক্রয় প্র্রতিনিধি নিয়ে শহরজুড়ে গড়ে তুলেছেন একটি পশু চিকিৎসা সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেট শহরময় গবাদি পশু চিকিৎসা করে বেড়ায়। পশু চিকিৎসকরা ৫-৬ টি মোটরসাইকেলে কমপক্ষে ১০-১২ জনের একটি দল একযোগে বিভিন্ন গ্রামে বেরিয়ে পশু চিকিৎসা সেবা দিতে সেবা প্রত্যাশীর বাড়ি হাজির হন। এরপর শুরু হয় গবাদি পশু চিকিৎসা। অধিকাংশ চিকিৎসায় গবাদি পশু ভাল না হওয়ার অভিযোগ আছে। চিকিৎসায় গবাদিপশু ভাল না হলেও সম্পূর্ন বিল পরিশোধ করতে হয় সেবা প্রত্যাশির। এমন অনেক অভিযোগ আছে জামাল আহমেদ মিলনের বিরুদ্ধে। খেঁাজ নিয়ে জানা গেছে ,জামাল আহমেদ মিলনসহ তার সাথে থাকা সনদবীহিন ভুয়া পশু চিকিৎসকদের কারো বাংলাদেশ ভেটরেনারী কাউন্সিলের সনদ নেই। ডিভিএম ডাক্তার না হয়েও জামাল আহমেদ মিলন শহরের কোলা রোডে অবস্থিত লাইফ সাইন্স ভেটরেনারী ট্রেনিং ইনস্টিউটে চলমান কোর্সের প্রশিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ইতিহাসের শিক্ষকের ভেটরেনারীর কোর্সের ক্লাস নেওয়ারে ব্যাপারে জানতে চাইলে লাইফ সাইন্স ভেটরেনারী ট্রেনিং ইনস্টিউটের সত্বাধিকারী বিশ্বাস রাজিব কিশোর জানান, মিলন স্যার তো প্রথম থেকেই এ কোর্সের সাথে আছেন। তিনি নিয়মিত ক্লাস নেন। উপজেলার চাচড়া গ্রামের মনোয়ারা বেগম বলেন, আমার গরুর সামান্য জর হওয়ায় আমি মিলন ভাইকে জানাই। সে এসে চিকিৎসা করার পর আমার গরু আরো অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপর আমি উপজেলা পশু হাসপাতালে নিয়ে যাই। আরেক ভুক্তভোগী উপজেলার চাদবা এক্তারপুর গ্রামের ইমামুল ইসলাম বলেন, আমার ছাগল যন্ত্রনায় ছটফট করায় আমি মিলন স্যারকে বলি, তখন মিলন স্যার পলাশ নামের এক ব্যক্তিকে পাঠিয়ে আমার ছাগলের অস্ত্রপচার করায় । রক্ত বন্ধ না হওয়ায় সে ব্যক্তি দ্রুত চলে যায়। এরপর আমি ছাগল পশু হাসপাতালে নিয়ে যায়। এরা কেমন ডাক্তার, আমার অনেক ক্ষতি হয়েছিল। অভিযোগের ব্যাপারে সনদ বিহীন পশু চিকিৎসক জামাল আহমেদ মিলন বলেন, আমি চিকিৎসক নই, আমি পরামর্শক। আমি ভেটরিনারী কোন কোর্সের পাঠদান করাইনা। মোবাইলে এত কথা বলার দরকার নেই। আপনি সন্ধ্যায় আমার ভাইয়ের দোকানে আসেন ,সরাসরি কথা হবে। এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডা : মো: রেজাউল করিম জানান , কালীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় সনদ বিহীন পশু চিকিসকের অপতৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে । ক্ষতিগ্রস্ত খামারির অভিযোগ পেলে বাংলাদেশ ভেটরেনারী আইন ২০১৯ অনুযায়ী ভুয়া চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো।