ঢাকা ০৬:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহে টিসিবির পণ্য বিক্রিতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌর এলাকার ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) পণ্য বিক্রয় ও বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

১৩ ফেব্রুয়ারি বুধবার পৌর এলাকায় ঝিনাইদহ সদরের ছয়জন টিসিবি’র ডিলার শহরের ভূষণ হাই স্কুল রোডে পণ্য বিক্রি করেন। এসব ডিলারদের মধ্যে “মেসার্স আফজাল হোসেন” নামক ডিলারের পণ্য বিক্রিতে দিনভর ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করেন কার্ডধারী উপকারভোগীরা। টিসিবির পারিবারিক পরিচিতি কার্ড নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়েও অনেকে পণ্য কিনতে না পেরে ফেরত গেছেন বলে জানা যায়। আবার কার্ড নেই এমন অনেকে একাধিক প্যাকেজের (প্রতি প্যাকেজে রয়েছে মসুর ডাল ২কেজি, ২ লিটার সয়াবিন তেল, ৫ কেজি চাউল ও ১ কেজি ছোলা) পণ্য ক্রয় করে বস্তা ভরে বাড়ি নিয়ে যান।প্রতিটি পণ্য আলাদা প্যাকেটজাত করে বিক্রির নিয়ম থাকলেও এই ডিলার চাউল প্যাকেট করা ছাড়াই বিক্রি করেন।

ডিলারের সুষ্ঠু বিক্রয় ব্যবস্থাপনার অভাবে টিসিবির ন্যায্য মূল্যের পণ্য কিনতে আসা উপকারভোগীদের মধ্যেও দফায় দফায় হট্টগোল করতে দেখা যায়। সরেজমিনে ঐদিন বিকেল ৬ টায় যেয়ে দেখা যায়, অন্যান্য ডিলারদের মাল বিক্রি সম্পন্ন হলেও এই ডিলার এখনো তার নির্ধারিত ৮৮১ ফ্যামিলি কার্ডের মাল বিক্রি সম্পন্ন করতে পারেননি। অথচ ততক্ষণে অন্যান্য ৫ জন ডিলার তাদের নির্ধারিত পণ্য বিক্রি শেষ করেছেন। আর মেসার্স আফজাল হোসেন নামক ডিলারের পণ্য বিক্রির ঘরের সামনে তখনও প্রায় ২ শত লোক দাড়িয়ে অপেক্ষায়। বিক্রি কার্যক্রম করা হচ্ছিল খুব ধীর গতিতে। ভিড় ঠেলে ডিলারের ঘরে প্রবেশ করে দেখা যায়, ১৮ কাটুন সয়াবিন তেল(প্রতি কার্টুনের ১৮ লিটার তেল),১১ বস্তা মসুর ডাল (প্রতি বস্তায় ৫০ কেজি), ৪২ বস্তা চাউল (প্রতি বস্তায় ৩০ কেজি) এবং কয়েক বস্তা ছোলা রয়েছে।এই ডিলারের ট্যাগ কর্মকর্তাকেও সে সময় খুঁজে পাওয়া যায়নি।আবার ডিলার মোঃ আফজাল হোসেনও পণ্য বিক্রির সময়ও উপস্থিত ছিলেন না। টিসিবির পারিবারিক পরিচিতির ১৭৫৫ নম্বর কার্ডধারী রিকশাচালক নওয়াব আলী এই প্রতিবেদককে জানান, কার্ড থেকেও মাল পাচ্ছি না। অনেকের কার্ড নেই অথচ তাদের কাছে বস্তা বস্তা মাল বিক্রি করে দিচ্ছে ডিলার। ইফতারের সময় হয়ে যাচ্ছে তায় দাঁড়িয়ে না থেকে বাড়ি চলে যাচ্ছি। আজ আর মাল কেনা হলো না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আর এক উপকারভোগী বলেন, “মেসার্স আফজাল হোসেন” নামক ডিলার স্থানীয় লোকজনের চাপে রাত ১০ টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত মাল বিক্রি করতে বাধ্য নন। এ সময় যারা মাল ক্রয় করেছেন তাদের কাররই ফ্যামিলি কার্ড ছিল না। এরপরও চলে যাওয়ার সময় সিএনজিতে করে সাদা প্লাস্টিকের বস্তায় ৮ বস্তা টিসিবির চাউল নিয়ে যান ডিলারের লোকজন।

অনিয়ম ও দুর্নীতির ব্যাপারে টিসিবির ডিলার মেসার্স আফজাল হোসেন এর স্বত্বাধিকারী মোঃ আফজাল হোসেনের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, রাতে আমাকে ফোন দিয়ে বিরক্ত করছেন কেন? আমার লোকজন ঠিকমতো মাল দিয়েছে।কোনো মাল নিয়ে আসা হয়নি। আপনার তথ্যে ভুল আছে বলে সংযোগটি তিনি কেটে দেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত জাহানকে মুঠোফোনে টিসিবির পণ্য বিক্রির অনিয়ম দুর্নীতির ব্যাপারে জানালে তিনি তাৎক্ষণিক ওই ডিলারের প্রতিনিধির সাথে মুঠোফোনে কথা বলে নির্দেশনা প্রদান করেন।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ঝিনাইদহে টিসিবির পণ্য বিক্রিতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

আপডেট সময় ০৮:১৩:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ ২০২৪

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌর এলাকার ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) পণ্য বিক্রয় ও বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

১৩ ফেব্রুয়ারি বুধবার পৌর এলাকায় ঝিনাইদহ সদরের ছয়জন টিসিবি’র ডিলার শহরের ভূষণ হাই স্কুল রোডে পণ্য বিক্রি করেন। এসব ডিলারদের মধ্যে “মেসার্স আফজাল হোসেন” নামক ডিলারের পণ্য বিক্রিতে দিনভর ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করেন কার্ডধারী উপকারভোগীরা। টিসিবির পারিবারিক পরিচিতি কার্ড নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়েও অনেকে পণ্য কিনতে না পেরে ফেরত গেছেন বলে জানা যায়। আবার কার্ড নেই এমন অনেকে একাধিক প্যাকেজের (প্রতি প্যাকেজে রয়েছে মসুর ডাল ২কেজি, ২ লিটার সয়াবিন তেল, ৫ কেজি চাউল ও ১ কেজি ছোলা) পণ্য ক্রয় করে বস্তা ভরে বাড়ি নিয়ে যান।প্রতিটি পণ্য আলাদা প্যাকেটজাত করে বিক্রির নিয়ম থাকলেও এই ডিলার চাউল প্যাকেট করা ছাড়াই বিক্রি করেন।

ডিলারের সুষ্ঠু বিক্রয় ব্যবস্থাপনার অভাবে টিসিবির ন্যায্য মূল্যের পণ্য কিনতে আসা উপকারভোগীদের মধ্যেও দফায় দফায় হট্টগোল করতে দেখা যায়। সরেজমিনে ঐদিন বিকেল ৬ টায় যেয়ে দেখা যায়, অন্যান্য ডিলারদের মাল বিক্রি সম্পন্ন হলেও এই ডিলার এখনো তার নির্ধারিত ৮৮১ ফ্যামিলি কার্ডের মাল বিক্রি সম্পন্ন করতে পারেননি। অথচ ততক্ষণে অন্যান্য ৫ জন ডিলার তাদের নির্ধারিত পণ্য বিক্রি শেষ করেছেন। আর মেসার্স আফজাল হোসেন নামক ডিলারের পণ্য বিক্রির ঘরের সামনে তখনও প্রায় ২ শত লোক দাড়িয়ে অপেক্ষায়। বিক্রি কার্যক্রম করা হচ্ছিল খুব ধীর গতিতে। ভিড় ঠেলে ডিলারের ঘরে প্রবেশ করে দেখা যায়, ১৮ কাটুন সয়াবিন তেল(প্রতি কার্টুনের ১৮ লিটার তেল),১১ বস্তা মসুর ডাল (প্রতি বস্তায় ৫০ কেজি), ৪২ বস্তা চাউল (প্রতি বস্তায় ৩০ কেজি) এবং কয়েক বস্তা ছোলা রয়েছে।এই ডিলারের ট্যাগ কর্মকর্তাকেও সে সময় খুঁজে পাওয়া যায়নি।আবার ডিলার মোঃ আফজাল হোসেনও পণ্য বিক্রির সময়ও উপস্থিত ছিলেন না। টিসিবির পারিবারিক পরিচিতির ১৭৫৫ নম্বর কার্ডধারী রিকশাচালক নওয়াব আলী এই প্রতিবেদককে জানান, কার্ড থেকেও মাল পাচ্ছি না। অনেকের কার্ড নেই অথচ তাদের কাছে বস্তা বস্তা মাল বিক্রি করে দিচ্ছে ডিলার। ইফতারের সময় হয়ে যাচ্ছে তায় দাঁড়িয়ে না থেকে বাড়ি চলে যাচ্ছি। আজ আর মাল কেনা হলো না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আর এক উপকারভোগী বলেন, “মেসার্স আফজাল হোসেন” নামক ডিলার স্থানীয় লোকজনের চাপে রাত ১০ টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত মাল বিক্রি করতে বাধ্য নন। এ সময় যারা মাল ক্রয় করেছেন তাদের কাররই ফ্যামিলি কার্ড ছিল না। এরপরও চলে যাওয়ার সময় সিএনজিতে করে সাদা প্লাস্টিকের বস্তায় ৮ বস্তা টিসিবির চাউল নিয়ে যান ডিলারের লোকজন।

অনিয়ম ও দুর্নীতির ব্যাপারে টিসিবির ডিলার মেসার্স আফজাল হোসেন এর স্বত্বাধিকারী মোঃ আফজাল হোসেনের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, রাতে আমাকে ফোন দিয়ে বিরক্ত করছেন কেন? আমার লোকজন ঠিকমতো মাল দিয়েছে।কোনো মাল নিয়ে আসা হয়নি। আপনার তথ্যে ভুল আছে বলে সংযোগটি তিনি কেটে দেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত জাহানকে মুঠোফোনে টিসিবির পণ্য বিক্রির অনিয়ম দুর্নীতির ব্যাপারে জানালে তিনি তাৎক্ষণিক ওই ডিলারের প্রতিনিধির সাথে মুঠোফোনে কথা বলে নির্দেশনা প্রদান করেন।