
শাংহাইয়ে অষ্টম চীন আন্তর্জাতিক আমদানি মেলা (সিআইআইই) শুরু হয়েছে। জর্জিয়া টানা ৮ বছর ধরে সিআইআইই-তে অংশ নিচ্ছে এবং এ বছর দেশটি ‘সম্মানিত অতিথি দেশ’ হিসেবে যোগ দিয়েছে।
চায়না মিডিয়া গ্রুপ সিএমজি-কে দেওয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে জর্জিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইকার্লি কোবাখিদজে বলেন, “জর্জিয়ান ন্যাশনাল প্যাভিলিয়নের প্রদর্শনীটি সত্যিই দর্শনীয় ছিল। জর্জিয়া অনেক বিখ্যাত পণ্যের জন্য গর্বিত, যার মধ্যে ওয়াইন অন্যতম। আমরা অনেক দেশে ওয়াইন রপ্তানি করি এবং চীনে রপ্তানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা আনন্দিত। জর্জিয়ায় চীনা পর্যটকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়াতেও আমরা আনন্দিত, এবং আমরা বিশ্বাস করি দেশটি ভবিষ্যতে চীনা পর্যটকদের জন্য আরও জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠবে। আমরা ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি সহযোগিতার বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি এবং বিশ্বাস করি যে সরাসরি বিমান চলাচল বৃদ্ধি পেলে তা দুই দেশের মধ্যে মানুষে-মানুষে যোগাযোগ সহজতর করবে। তাই, এটি আমাদের অন্যতম শীর্ষ অগ্রাধিকার।”
তিনি বলেন, “এই বছরের চীন আন্তর্জাতিক আমদানি মেলায় সম্মানিত অতিথি দেশের প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিতে পেরে আমি অত্যন্ত সম্মানিত। এই ফোরামটি (হংছিয়াও আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ফোরাম) আমাদের ধারণা বিনিময় এবং দৃষ্টিভঙ্গি ভাগ করে নেওয়ার আরেকটি মূল্যবান সুযোগ তৈরি করে দেয়। চীন আন্তর্জাতিক আমদানি মেলা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম। তথ্য-উপাত্ত থেকে দেখা যায় যে, জর্জিয়া ও চীনের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৮ সালে কার্যকর হওয়া চীন-জর্জিয়া মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যকে ব্যাপকভাবে উৎসাহিত করেছে। এই ধরনের মেলা অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে দুই দেশের অংশীদারিত্ব বাড়াতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।”
তিনি আরও বলেন, “চীনের সাথে কৌশলগত অংশীদারিত্ব জোরদার করা জর্জিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি এবং অগ্রাধিকার, যা আমাদের দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত যে জর্জিয়া চীনের সাথে একটি কৌশলগত অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে এবং আমরা ইতিমধ্যেই এর বাস্তব ফলাফল দেখতে পাচ্ছি। এর মধ্যে রয়েছে উভয় পক্ষের ভিসা-মুক্ত নীতি বাস্তবায়ন এবং আমাদের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক অংশীদারিত্বের ফলে প্রাপ্ত অসংখ্য সুবিধা। এটি জর্জিয়ার জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “গত কয়েক দশকের ইতিহাস প্রমাণ করেছে যে, চীন বিশ্বের এমন একটি প্রধান শক্তি যা শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, এবং এটি অত্যন্ত প্রশংসনীয়। চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাফল্য সত্যিই বিস্ময়কর। প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের বিজ্ঞ নেতৃত্বেই চীনের আধুনিকায়ন এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে।”
“চীন আজ বিশ্বে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এবং প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও চীনা সরকারের প্রস্তাবিত উদ্যোগগুলো অসংখ্য দেশের সমর্থন পেয়েছে। এই উদ্যোগগুলো এমন সব গুরুত্বপূর্ণ মূল্যবোধ ও নীতির ওপর ভিত্তি করে তৈরি, যা আজকের বিশ্বে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।”
“আমরা এই সমস্ত উদ্যোগকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করি এবং বিশ্বব্যাপী শাসন-ব্যবস্থা সংক্রান্ত উদ্যোগে অন্তর্ভুক্ত নীতিগুলোকে সম্পূর্ণরূপে সমর্থন করি। আমরা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং এবং চীনা সরকারের প্রস্তাবিত সমাধানগুলোর জন্য অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। আমরা ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। যেমনটি আমি আগেই উল্লেখ করেছি, জর্জিয়ার একটি কৌশলগত ভৌগোলিক অবস্থান রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা কিছু শক্তিকে ইউরোপীয় একীকরণকে জর্জিয়ান জনগণের বিরুদ্ধে ব্ল্যাকমেইল করার হাতিয়ার হিসেবে কাজে লাগাতে দেব না। আমরা স্পষ্ট করে দিয়েছি যে, জর্জিয়ার লক্ষ্য হলো ইইউ-এর পূর্ণ সদস্য হওয়া, তবে আমরা নিয়ম এবং ন্যায্যতার নীতি মেনে এই পথেই এগিয়ে যেতে চাই। এটাই আমাদের সামগ্রিক দিকনির্দেশনা।”
সূত্র:জিনিয়া-তৌহিদ,চায়না মিডিয়া গ্রুপ।
আন্তর্জাতিক: 

























